E-Paper

নজরে পথের নিরাপত্তা, নির্মাণে লাগবে শংসাপত্র

সড়ক কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, সাধারণত যে সব এলাকায় ছ’লেনের রাস্তা তৈরি হচ্ছে, সেই সব এলাকাতেই কঠোর ভাবে এই নিয়ম চালু করা হবে।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:৫৩
এই নির্মাণ ঘিরে আপত্তি। পশ্চিম বর্ধমানের কুলটিতে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে। বৃহস্পতিবার।

এই নির্মাণ ঘিরে আপত্তি। পশ্চিম বর্ধমানের কুলটিতে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে। বৃহস্পতিবার। ছবি: পাপন চৌধুরী।

নতুন বছরের শুরু থেকেই ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’পাশে যে কোনও রকমের নির্মাণ তোলার আগে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নো-অবজেকশন শংসাপত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক হতে চলেছে। অন্যথায় নির্মাণকারীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপও করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক কর্তৃপক্ষ। মূলত পথ নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই পরিকল্পনা বলে জানা গিয়েছে।

সড়ক কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, সাধারণত যে সব এলাকায় ছ’লেনের রাস্তা তৈরি হচ্ছে, সেই সব এলাকাতেই কঠোর ভাবে এই নিয়ম চালু করা হবে। ইতিমধ্যে সড়ক লাগোয়া যেখানে নির্মাণ রয়েছে, বা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে, সেই অঞ্চলগুলি চিহ্নিত করে নির্মাণকারীদের লিখিত ভাবে এই নিয়মের বিষয়ে জানানো হবে।

কিন্তু কেন এই পদক্ষেপ? ঘটনা হল, দেশে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকঢ়ী। তিনি জানিয়েছেন, ২০২১-এর তুলনায় ২০২২-এ সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ১১.৯০ শতাংশ। দেশ জুড়ে যত দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে ৩৩ শতাংশই ঘটেছে জাতীয় সড়ক ও এক্সপ্রেসওয়েতে।

এই পরিস্থিতিতে পথ নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তার অবকাশ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। জাতীয় সড়কের পানাগড়-বারওয়াড্ডার প্রজেক্ট ডিরেক্টর মলয় দত্তও বলেন, “সড়ক লাগোয়া অঞ্চলের বাসিন্দাদের পথ নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করতেই কঠোর ভাবে এই নিয়ম পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।” ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কও ছয় লেনের বানানো হচ্ছে। সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি, এত দিন সড়কটি চার লেনের ছিল। কিন্তু এখন সেটি ছ’লেনের হওয়ায় দুর্ঘটনার প্রবণতা বেড়েছে।

মলয় দত্ত জানান, মূল সড়ক থেকে লাগোয়া অঞ্চলে যাওয়া-আসা করতে হলে প্রথমে সার্ভিস রোড ধরতে হয়। সরাসরি সড়কে ওঠা-নামার নিয়ম নেই। সার্ভিস রোড ব্যবহার করলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা প্রায় থাকে না।

জাতীয় সড়ক লাগোয়া ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক নির্মাণকারীদের এই সার্ভিস রোড বানাতে হয়। কোন এলাকায় এই সার্ভিস রোড কতটা লম্বা ও চওড়া হবে, তা নির্মাণ বিশেষে সড়ক কর্তৃপক্ষ ঠিক করে দেন। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানান, সাধারণত একশো মিটার লম্বা ও বাণিজ্যিক নির্মাণের ক্ষেত্রে ১৭ থেকে ২২ ফুট চওড়া সার্ভিস রোড বানাতে হয়। অবাণিজ্যিক নির্মাণের ক্ষেত্রে রাস্তাটি লম্বায় কম-বেশি একশো মিটার হলেও চওড়া হবে প্রায় ছয় থেকে আট ফুট। মলয় জানিয়েছেন, সড়কের যে বিন্দু থেকে সার্ভিস রোড শুরু হবে ও যে বিন্দুতে শেষ হবে, সেই অংশে লোহার গার্ড বসাতে হবে। সড়ক কর্তৃপক্ষ জানান, প্রাথমিক ভাবে সড়ক লাগোয়া অঞ্চলে নির্মাণ তোলার আগে নির্মাণকারীদের মধ্যে এই নিয়ম না মানার প্রবণতা থাকতে পারে। তাই রাজ্য সরকারের স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে নির্মাণকারীরা যখন সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নানা বিষয়ে নো-অবজেকশন নেবেন, তখন যেন তাঁদের জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের থেকেও তা নিতে বলা হয়, সেই অনুরোধ করা হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Asansol

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy