ঠিক সময়ে ভোট করানোর জন্য বিজ্ঞপ্তি জারির সময়সীমা প্রায় শেষ। ফলে, দুর্গাপুর পুরসভায় প্রশাসক বসানো হতে চলেছে, ধরেই নিচ্ছেন বিরোধীরা। রাজ্যের সাতটি পুরসভায় ভোটপর্ব মেটার পরেই এ নিয়ে ফের সরব হয়েছে তারা। প্রশাসক বসানোর কথা ঘোষণা হলেই লাগাতার আন্দোলনে নামবে তারা, হুঁশিয়ারি বামেদের।
দুর্গাপুর পুরসভার মেয়াদ শেষ হবে জুনে। কিন্তু ভোট কবে হবে, সে ব্যাপারে এখনও কোনও স্পষ্ট প্রশাসনিক ইঙ্গিত মেলেনি। নির্দিষ্ট সময়ে ভোটের দাবিতে সিপিএম মাঠে নেমেছে অনেক দিন আগেই। সভা করেছে ‘সেভ ডেমোক্রেসি ফোরাম’ও। কিন্তু ঠিক সময়ে ভোট না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত পুরসভার মাথায় প্রশাসক বসানোর দিকেই এগোচ্ছে প্রশাসন। তবে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই পদে কে বসবেন, তা এখনও ঠিক হয়নি। যে আধিকারিকদের কথা ভাবা হচ্ছে, তাঁরা ইতিমধ্যে নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। তা সামলে প্রশাসকের অতিরিক্ত দায়িত্ব নিতে পারবেন কি না, সে নিয়েই আলোচনা চলছে, দাবি প্রশাসনের নানা সূত্রের।
এরই মধ্যে শহরে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে পুরভোট নিয়ে ফের চর্চা শুরু করেছে। ২০১৫ থেকে বেহাল পুর পরিষেবার অভিযোগ এবং শিল্পের দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছে বামেরা। গত বিধানসভা ভোটে দুর্গাপুরে দু’টি আসনেই তৃণমূল হারার পর থেকেই বাম নেতারা দাবি করছিলেন, ফের হারের ভয়ে শাসকদল সময়ে পুরভোট করানোর রাস্তায় হাঁটবে না। মাস কয়েক আগে অবশ্য পুরভোট নিয়ে প্রশাসনিক তোড়জো়ড় নজরে পড়ে। ওয়ার্ড সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু তার পরে আর তেমন কোনও পদক্ষেপ হয়নি।
তৃণমূলের নানা সূত্রে অবশ্য জানা যায়, সম্প্রতি রাজ্যে সাতটি পুরসভার ভোটে দলের সাফল্যের পরে দুর্গাপুর-সহ আরও কয়েকটি শহরে পুরভোট শীঘ্রই সেরে ফেলার কথা ভাবছে সরকার। মাস তিনেকের মধ্যেই ভোট হবে, সম্প্রতি কলকাতায় দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে তাঁরা এমন ইঙ্গিত পেয়েছেন বলে তৃণমূলের জনা কয়েক নেতার দাবি। যদিও এ নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ কোনও মন্তব্যে করতে চাননি।
সিপিএমের দুর্গাপুর ২ জোনাল সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার জানান, পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষে প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করবেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসক বসানোর বিজ্ঞপ্তি জারি হলেই আমরা আন্দোলনে নামব।’’ তাঁর আরও দাবি, প্রশাসন সূত্রে তাঁরা জেনেছেন, প্রশাসককে সাহায্য করার জন্য দু’জনের কমিটিতে শাসক দলের বর্তমান ও প্রাক্তন দুই বিধায়ককে রাখার পরিকল্পনা হয়েছে। তা কোনও ভাবেই মানা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন পঙ্কজবাবু। কংগ্রেসের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘আমরা চাই, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত নতুন বোর্ড ক্ষমতায় আসুক।’’ বিজেপি নেতা কল্যাণ দুবের আবার দাবি, ‘‘ভোটে শাসকদলের ভরাডুবি নিশ্চিত। তাই যতটা সম্ভব দেরি করা হচ্ছে।’’
শহরের তৃণমূল নেতা তথা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু বলেন, ‘‘পুরভোট কখন হবে তা নির্বাচন কমিশনের বিষয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy