Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Schools

school: স্কুলবাসগুলির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় মালিকেরা

অধিকাংশ স্কুলের পড়ুয়াদের ভরসা বাইরের স্কুলবাস ও পুলকার। কিন্তু স্কুল বাসগুলি দীর্ঘদিন না চলায়, সমস্যার মুখে পড়েছেন বাস মালিকেরা।

পড়ে রয়েছে স্কুলবাস এবং পুলকার।

পড়ে রয়েছে স্কুলবাস এবং পুলকার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২১ ০৮:০১
Share: Save:

প্রায় দেড় বছর ধরে স্কুলে স্বাভাবিক পঠন-পাঠন বন্ধ। পুলকার হিসাবে চলা অন্য গাড়ি তা-ও অন্য কাজে ভাড়া খাটিয়ে দু’পয়সা আয় করা সম্ভব। কিন্তু স্কুলবাসগুলি কার্যত বসে গিয়েছে দেড় বছরে। এ দিকে, ১৬ নভেম্বর স্কুল খুলবে। বাসগুলিকে কী ভাবে পথে নামানো যাবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন মালিকেরা। সমস্যায় রয়েছেন পুলকার মালিকেরাও।

স্কুলবাস মালিকদের দাবি, ২০২০-র মার্চ থেকে স্কুল বাস রাস্তায় নামেনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর মহকুমার হাতে গোনা কয়েকটি স্কুলের নিজস্ব বাস ও পুলকার রয়েছে। অধিকাংশ স্কুলের পড়ুয়াদের ভরসা বাইরের স্কুলবাস ও পুলকার। কিন্তু স্কুল বাসগুলি দীর্ঘদিন না চলায়, সমস্যার মুখে পড়েছেন বাস মালিকেরা।

পানাগড়ের স্কুলবাস মালিক স্বপন গড়াই বলেন, “ব্যাঙ্ক-ঋণ নিয়ে বাস কিনেছি। নিয়ম মেনে পারমিট, কর, বিমা, ফিটনেসের ফি জমা দিয়েছি। ২০২০-এর মার্চ থেকে বাস বন্ধ। ইএমআই-এর চাপ তো আছেই। এখন রাস্তায় বাস নামাতে গেলে রোড ট্যাক্স, ফিটনেস, বিমা সব
মেটাতে দেড়-দু’লক্ষ টাকা করে খরচ হবে।” কয়েকজন জানান, বাস চালু না থাকায় টায়ার শুকিয়ে এবং হাওয়া বেরিয়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ইঞ্জিনের ব্যাটারি বসে গিয়েছে। বাস বন্ধ থাকলেও ব্যাঙ্কের মাসিক কিস্তি, বিমা, রাস্তার কর, ফিটনেস বাবদ খরচ রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ।

পুলকার হিসাবে গাড়ি ভাড়া খাটিয়ে থাকেন অনেকে। তাঁরা জানান, স্কুল চললে নির্দিষ্ট পরিমাণ রোজগার বাঁধা। তা হয়নি। স্কুল বন্ধ থাকায় অন্য কাজে ভাড়া খাটানোর সুযোগ থাকলেও আয় তেমন নেই।

এই পরিস্থিতিতে কয়েক জন বাস মালিকের দাবি, ব্যাঙ্ক-ঋণের মাসিক কিস্তি ও অন্য খরচ টানতে না পেরে তাঁরা পানাগড়ে পুরনো গাড়ি যন্ত্রাংশের বাজারে বাস বিক্রি করে দিয়েছেন!

এই অবস্থায় স্কুলবাস মালিকদের দাবি, ২০২০-র মার্চ থেকে স্কুলবাস রাস্তায় না নামায়, এই সময়ের জন্য রাস্তার কর, বিমা, ফিটনেস ফি মকুব করা হোক।
স্কুলবাসের পারমিট দেওয়া হয় পাঁচ বছর করে। তার মধ্যে দেড় বছর বন্ধ বাস চলাচল। তাই পারমিটের মেয়াদ দেড় বছর বাড়ানো হোক। বাস মালিক স্বপন জানান, ইতিমধ্যেই তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে আর্জি জানিয়েছেন।

পাশাপাশি, জ্বালানি তেলের দাম নিয়েও সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা স্কুলবাস মালিকদের একাংশের। পানাগড় রেলপাড়ের বাসিন্দা স্কুলবাস মালিক মণি গোস্বামী বলেন, “যখন স্কুল বন্ধ হয়েছিল, তখন ডিজ়েলের দাম ছিল প্রতি লিটার ৬৪ টাকা। এখন প্রায় ১০০ টাকা। অভিভাবকদের কথা ভেবে ন্যূনতম লাভ রেখে বাস চালানো হয়। ১৬ নভেম্বর স্কুল খুললে বাস ভাড়ার পরিমাণ না বাড়ালে কী হবে জানি না!” একই সমস্যার কথা জানিয়েছেন পুলকার মালিকেরাও। দুর্গাপুরের পুলকার মালিক সংগঠনের তরফে প্রশান্ত দে বলেন, “বহু পুলকার বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বাকি যেগুলি আছে, সেগুলি পড়ে থেকে-থেকে প্রায় বিকল হয়ে গিয়েছে। সেগুলিকে চলাচলের উপযুক্ত করতে হবে। যাবতীয় বকেয়া ফি মেটাতে হবে। এত কিছু সামলে কী ভাবে পুলকারগুলি চালু করা সম্ভব হবে, তা ভেবে পাচ্ছি না।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, “রাজ্য সরকারের যেমন-যেমন নির্দেশিকা আসবে, তা পালন করা হবে। এ বিষয়ে স্থানীয় ভাবে কিছু করা সম্ভব নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Schools Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE