Advertisement
E-Paper

‘বড্ড নোংরা’, গায়ে ওঠে না লাইফ জ্যাকেট

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালনা খেয়াঘাটের অন্য পাড়ে রয়েছে নদিয়ার নৃসিংহপুর ঘাট। ফি দিন ভোর থেকে স্কুল, কলেজ, বাজার, হাসপাতাল-সহ নানা জায়গায় যেতে নদী পারাপার করেন বহু মানুষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৪
এ ভাবেই চলে যাতায়াত। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল

এ ভাবেই চলে যাতায়াত। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল

মাইকে এক নাগাড়ে চলছে ঘোষণা, ‘লাইফ জ্যাকেট পরে নৌকায় চড়ুন।’ কিন্তু ঘোষণাই সার, প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, বেশির ভাগ যাত্রীই লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই ভাগীরথী পারাপার করছেন। এমনই হাল কালনা খেয়াঘাটের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালনা খেয়াঘাটের অন্য পাড়ে রয়েছে নদিয়ার নৃসিংহপুর ঘাট। ফি দিন ভোর থেকে স্কুল, কলেজ, বাজার, হাসপাতাল-সহ নানা জায়গায় যেতে নদী পারাপার করেন বহু মানুষ। বছর দুয়েক আগে এই খেয়াঘাটে নৌকাডুবির ঘটনায় প্রাণ গিয়েছিল ২০ জনের। তার পরে ঘাটের নিরাপত্তা নিয়ে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। কয়েক দফায় যাত্রী ও নৌকার মাঝিদের জন্য দেওয়া হয় লাইফ জ্যাকেট। এমনকী, পুরনো জ্যাকেটগুলি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মাস তিনেক আগে কালনা পুরসভা শ’দুয়েক লাইফ জ্যাকেট তুলে দেয় ঘাটের ইজারাদারদের।

কিন্তু জ্যাকেট পড়েই আছে বলে অভিযোগ। একাধিক মাঝির অভিজ্ঞতা, শত অনুরোধের ফলে অনেকে জ্যাকেট হাতে নৌকায় ওঠেন ঠিকই। কিন্তু তা আর গায়ে না চড়িয়ে অন্য পাড়ে ফেরত দিয়ে চলে দিচ্ছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কিছু দিন আগেও সকালে ঘন কুয়াশায় প্রায় দেখাই যাচ্ছিল না নদীর জল। ফি বছর ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে পিকনিক, পৌষ কালী-সহ নানা অনুষ্ঠানে দু’পাড়ের মানুষের যাতায়াতও বাড়ে। এমন বিশেষ পরিস্থিতিগুলিতে জ্যাকেট গায়ে দেওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সে কথা বলতে গেলেই অনেক যাত্রী রীতিমতো ঝগড়াও জুড়ে দেন বলে অভিযোগ ঘাটের কর্মীদের।

আর তাই তা নিয়ে জোরাজুরিও তেমন হয় না। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একমাত্র প্রশাসনের কোনও কর্তার আসার কথা থাকলে, সেই সময়েই লাইফ জ্যাকেট ছাড়া নৌকায় উঠতে দেওয়া হয় না যাত্রীদের।

কিন্তু যাত্রীরা কেন গায়ে তোলেন না জ্যাকেট? শান্তি ঘোষ নামে এক যাত্রী বলেন, ‘‘আসলে অনেকেই তো গায়ে চাপান ওই জ্যাকেট। তাই পরতে গা ঘিনঘিন করে।’’ প্রদীপ কোলে নামে অন্য এক যাত্রীর আবার অভিযোগ, ‘‘বড্ড নোংরা জ্যাকেটগুলো।’’ যদিও ঘাটের ইজারাদারদের দাবি, জ্যাকেটগুলি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। মহকুমাশাসক (কালনা) নীতিন সিংহানিয়া অবশ্য বলেন, ‘‘প্রত্যেক যাত্রীর নৌকায় ওঠার আগে লাইফ জ্যাকেট পরা দরকার। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেব।’’

শুধু কালনায় নয়, একই ছবি দেখা যায় কাটোয়ার ফেরিঘাট ও শাঁখাই ঘাটেও। দু’জায়গাতেই যাত্রীদের গায়ে লাইফ জ্যাকেট দেখতে পাওয়া যায় না। কখনও নৌকার এক কোণে, কখনও বা ঘাটেরই এক কোণে ডাঁই পড়ে থাকে জ্যাকেটগুলি। ফেরিঘাটে প্রায় ৫০টি লাইফ জ্যাকেট রয়েছে বলে জানান ঘাটের ইজারাদার অশোক সরকার, বাপি ঘোষেরা। এই ঘাট দিয়ে বল্লভপাড়ার দিকে ফি দিন হাজার তিনেক যাত্রী পারাপার করেন। অন্য দিকে, কেতুগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালিত শাঁখাই ঘাটেও লাইফ জ্যাকেটের দেখা মেলেনি। গায়ে জ্যাকেট না দেওয়ার কারণ হিসেবে কালনার মতোই একই ‘যুক্তি’ দেখান এখানের যাত্রীরাও। যদিও মহকুমাশাসক (কাটোয়া) সৌমেন পাল বলেন, ‘‘যাত্রীদের জ্যাকেট পরানোর দায়িত্ব ইজারাদারদের। সেই সঙ্গে সচেতনতামূলক পোস্টার ও ফ্লেক্সের সাহায্যে সচেতনতা প্রচার চালাতে বলা হয়েছে।’’

Passengers Life Jackets Boat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy