Advertisement
E-Paper

জন্মভিটেতেই উপেক্ষিত গঙ্গাকিশোর

তাঁর হাত ধরেই বাংলা ভাষায় সাংবাদিকতার একটা যুগের সূত্রপাত। তাঁরই সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ‘বাঙ্গাল গেজেট’। তিনি গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য। সেই সংবাদপত্রের দ্বিশতবর্ষপূর্তি হবে আজ, সোমবার। অথচ নিজের জন্মভিটেতেই উপেক্ষিত গঙ্গাকিশোর।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৭ ১২:৩৫
গঙ্গাকিশোরের স্মৃতিতে ফলক। নিজস্ব চিত্র

গঙ্গাকিশোরের স্মৃতিতে ফলক। নিজস্ব চিত্র

তাঁর হাত ধরেই বাংলা ভাষায় সাংবাদিকতার একটা যুগের সূত্রপাত। তাঁরই সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ‘বাঙ্গাল গেজেট’। তিনি গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য। সেই সংবাদপত্রের দ্বিশতবর্ষপূর্তি হবে আজ, সোমবার। অথচ নিজের জন্মভিটেতেই উপেক্ষিত গঙ্গাকিশোর। রংচটা স্মৃতি ফলক আর সম্পাদকের জীর্ণ বাড়ি, সেই উপেক্ষারই প্রমাণ দেয় বলে অভিযোগ বুদ্ধিজীবী মহলের।

পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর বহড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন গঙ্গাকিশোর। প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন হুগলির শ্রীরামপুর মিশন প্রেসের ‘কম্পোজিটার’। পরে বহু কাঠখড় পুড়িয়ে কলকাতায় নিজেই তৈরি করে ফেলেন আস্ত ছাপাখানা। তাঁর প্রথম কীর্তি, ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের ‘অন্নদামঙ্গল’-এর সচিত্র প্রকাশ। এই কীর্তির ফলে তৎকালীন বাংলায় সাড়া ফেলে দেন তিনি। কিন্তু তাঁর মাথায় ঘুরতে থাকে সংবাদপত্র প্রকাশ করার কথা।

শেষমেশ প্রকাশ করেন সংবাদপত্র, ‘বাঙ্গাল গেজেট’। গঙ্গাকিশোরই প্রথম বাঙালি, যাঁর সম্পাদনায় সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। ‘ওরিয়েন্টাল স্টার’ পত্রিকার সূত্রে জানা যায় ১৮১৮ সালের ১৬ মে প্রকাশিত হয় ‘বাঙ্গাল গেজেট’। যদিও ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, তারিখটা ১৪ মে থেকে ৯ জুলাইয়ের মধ্যবর্তী কোনও সময়ে। তবে জন্মভিটেয় থাকা স্মৃতিফলক অনুযায়ী, প্রকাশের তারিখটা ১৫ মে। বিভিন্ন পুরনো নথি ঘেঁটে জানা যায়, গঙ্গাকিশোরের সম্পাদিত পত্রিকাটির দাম ছিল এক টাকা। ডাক যোগে দু’টাকা।

অথচ এমন মানুষটির জন্মভিটেটিই বর্তমানে বেহাল বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ফি বছর ‘গঙ্গাকিশোর স্মৃতি রক্ষা কমিটি’র তরফে সেখানে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে তাঁকে সম্মান জানানো হয়। এই কমিটির সদস্য দ্বারকানাথ দাসের ক্ষোভ, ‘‘পণ্ডিত গঙ্গাকিশোরের ভিটেটি সংরক্ষণ করা দরকার। কিন্তু এ যাবৎ প্রশাসন কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করেনি। উনি নিজের জায়গাতেই যেন উপেক্ষিত।’’

যদিও কালনার কয়েক জন সাংবাদিক বিষয়টি জানিয়েছে মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়ার কাছে। রবিবার নীতিনবাবু বলেন, ‘‘বহড়া গ্রামে জমি চিহ্নিত করার জন্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে বলা হয়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করলেই পর্যটন দফতরের কাছে সামগ্রিক পরিকল্পনা পাঠানো হবে।’’ বিষয়টি নজরে এসেছে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদেরও। পরিষদের সভাপতি বারিদবরণ ঘোষ বলেন, ‘‘সাহিত্য ও সমাজের প্রয়োজনে গঙ্গাকিশোরের স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা জরুরি। সংরক্ষণের বিষয়ে পরামর্শ দরকার হলে সাহায্য করতে পারি।’’

Ganga Kishore Bhattacharya Bengal Gazetti
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy