আবর্জনার মধ্যেই চলছে বনভোজন। দুর্গাপুর ব্যারাজের সামনের পার্কে। নিজস্ব চিত্র।
জাঁকিয়ে শীত। দুর্গাপুর ব্যারাজের পাশে একটি পার্কে গত কয়েক বছর ধরে পিকনিকের মরসুমে ভিড় বাড়ছে। এই বার সেখানে বড় দিন থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই একাধিক দল পিকনিক করতে আসছে। কিন্তু পিকনিকের পরে আর আবর্জনা সাফ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার সকালে পার্কে গিয়ে দেখা গিয়েছে, একাধিক দল পিকনিক করছে। পাশে পড়ে আছে প্লাস্টিকের প্যাকেট, এঁটো শালপাতা, প্লাস্টিকের গ্লাস, নিষিদ্ধ থার্মোকলের বাটি। কিছু আবার বাতাসে উড়ছে। পরিবেশপ্রেমীদের অভিযোগ, পিকনিক মরসুম শেষ হওয়ার পরেও পার্কে বেশ কিছু দিন ধরে পড়ে থাকে থার্মোকল, প্লাস্টিকের থালা-বাটি। তা থেকে আশপাশের এলাকা যেমন দূষিত হয়, তেমনই দূষিত হয় নদীর জল। পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা থেকে পার্কে পিকনিক করতে এসেছিল একটি দল। সেই দলের সদস্য রাজীব মল্লিক বলেন, “বহু দিনের শখ, দুর্গাপুর ব্যারাজে পিকনিক করব। কিন্তু পার্কের অবস্থা দেখে মন খারাপ। আবর্জনা পড়ে রয়েছে। তার মধ্যেই কোনও রকমে কাজ সারতে হচ্ছে।”
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, আগের মতো সাউন্ড বক্সের দাপট এখন নেই। থার্মোকলের থালা-বাটি ব্যবহারেও রাশ পড়েছে। তবুও কেউ কেউ এখনও তা নিয়ে আসেন। ব্যবহারের পরে পার্কের পাশেই ফেলে দেন। ফলে, পরিবেশ দূষিত হয়। ওই পার্কে শীতে অনেকে ঘুরতে আসেন। পিকনিকের আবর্জনা পড়ে থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। দুর্গাপুরের বেনাচিতি থেকে মাঝে-মাঝে পার্কে ঘুরতে যান নিতাই রায়, বিপ্লব বসুরা। তাঁরা বলেন, “বছরের অন্য সময় পার্কটি বেশ পরিচ্ছন্ন থাকে। কিন্তু শীতের সময়ে পিকনিকের মরসুমে এঁটো থালা, গ্লাস পড়ে থাকায় হাঁটাচলা করতে সমস্যা হয়।”
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জানিয়েছে, তারা পিকনিক করতে আসা মানুষজনের কাছ থেকে প্লাস্টিকের জলের বোতল সংগ্রহের ব্যবস্থা করে। প্লাস্টিক ও থার্মোকলের থালা-বাটির পরিবর্তে শালপাতা, কলাপাতা, পদ্মপাতার থালা, বাটি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। আবর্জনা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট ডাস্টবিন ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্থার এক প্রতিনিধি বলেন, “দুর্ভাগ্যের বিষয়, কেউ-কেউ আমাদের আর্জি ধর্তব্যের মধ্যেই আনেন না। সমস্যা তৈরি করেন তাঁরাই!”
বিষয়টি নিয়ে বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের তরফে পার্ক পরিষ্কার রাখার নিয়মিত বার্তা দেওয়া হয়। নজরদারিও চলে। তবু সাধারণ মানুষ সচেতন না হলে এই সমস্যা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy