Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বর্ধমানে প্ল্যাটফর্মেই ক্লাস পথশিশুদের

দেশের যে কোনও স্টেশনেই দেখা মেলে এ রকম কিছু ফুটফুটে আসহায় মুখ। দুমুঠো খাবারের জন্য হাত পাতে যাত্রীদের কাছে। কেউ অনাথ,  কারও পরিবার আছে।

চলছে পড়াশোনা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

চলছে পড়াশোনা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

সুপ্রকাশ চৌধুরী
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৮ ০২:০৩
Share: Save:

স্টেশনের প্ল্যাটফর্মই তাদের ঘরবাড়ি। সেই প্ল্যাটফর্মেই এ বার শিক্ষার আলো পাবে বর্ধমান স্টেশনের পথশিশুরা। সৌজন্যে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন।

দেশের যে কোনও স্টেশনেই দেখা মেলে এ রকম কিছু ফুটফুটে আসহায় মুখ। দুমুঠো খাবারের জন্য হাত পাতে যাত্রীদের কাছে। কেউ অনাথ, কারও পরিবার আছে। তারা শিশুশিক্ষার অধিকার-সহ যে কোনও সুযোগসুবিধা থেকে বিচ্ছিন্ন। এই সব পথশিশুর জন্যই অভিনব উদ্যোগ জেলা শিক্ষা দফতরের। আধিকারিক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্যোগে সোমবার প্রথম বর্ধমান স্টেশনে গিয়ে ৩০ জন পথশিশুকে প্ল্যাটফর্মে পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়।

জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) নারায়ণচন্দ্র পাল, আধিকারিক শুভাশিস বক্সী এবং সরকারি স্কুলের জনা বারো শিক্ষক-শিক্ষিকা পথশিশুদের জন্য খাবার, বস্ত্র, খাতা ও পেন নিয়ে হাজির হন। গল্পের মাধ্যমে ভালবাসা দিয়ে তাদের পড়তে বসান। ‘অ-আ-ক-খ’, ‘এ-বি-সি-ডি’ থেকে শুরু করে আঁকার মাধ্যমে চলে প্রথম দিনের ক্লাস। শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই শিশুদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিতে আনতে জেলা প্রশাসনের তফর থেকে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। প্রথম দিন আমরা ওদের কাউন্সেলিং করেছি। এর পর আপাতত সপ্তাহে এক দিন করে করে আমরা ওদের ক্লাস নেব।’’ তিনি জানান, শিক্ষকেরা নিজের স্কুলের কাজ শেষ করে ওই শিশুদের পড়াতে যাবেন। ধীরে ধীরে ওদের শিক্ষার মূল স্রোতের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। মিড-ডে মিলের ব্যবস্থাও হবে।

শুভাশিসবাবুর কথায়, ‘‘যদি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান কিংবা হাসপাতাল থাকতে পারে, তাহলে ভ্রাম্যমাণ স্কুল কেন করা যাবে না। পথশিশুদের অনেকেই পরিবার ও শিক্ষা না পেয়ে খারাপ সঙ্গে পড়ে যায়। তাই শিক্ষার মাধ্যমে তাদের আলোর পথে ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রথম দিনই ওদের মধ্যে পড়াশোনার আগ্রহ দেখে আমরা খুশি।’’ যে শিক্ষকেরা পড়িয়েছেন, তাঁদের এক জন তাপস কুমার পাল বলেন, ‘‘কোনও অতিরিক্ত পারিশ্রমিক ছাড়াই আমরা এই কাজ করব। সবাই শিক্ষার আলো পাক, এটাই আমরা চাই।’’ বর্ধমানের স্টেশন ম্যানেজার স্বপন অধিকারী জানান, স্টেশনের ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মে এই নতুন ক্লাসঘর বসছে। শিক্ষকদের সব রকমের সহযোগিতা করা হবে বলেও তাঁর আশ্বাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Children Street children Platform
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE