সালানপুর ব্লক অফিসে, মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি বণ্টনের তালিকায় ‘চূড়ান্ত বৈষম্য’ করা হয়েছে। এমন অভিযোগে মঙ্গলবার সালানপুর ব্লক অফিসে বাসিন্দাদের একাংশ বিক্ষোভ দেখালেন। আর সেই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিলেন তৃণমূলের শাখা সংগঠন, এসটি সেলের নেতৃত্ব। পরে বিডিও-র (সালানপুর) সঙ্গে দেখা করে, পুরনো তালিকা বাতিল করে নতুন তালিকা তৈরির দাবি জানান তাঁরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলকে তোপ দেগেছেন বিরোধীরা।
তৃণমূলের সালানপুর ব্লক এসটি সেলের নেতৃত্বের অভিযোগ, ব্লকের আছড়া পঞ্চায়েতের তিন ও চার নম্বর সংসদের তরফে ব্লক প্রশাসনের কাছে আবাস যোজনার বাড়ি প্রাপকদের যে তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে, তাতে চূড়ান্ত বৈষম্য করা হয়েছে। সংগঠনটির ব্লক নেতা জয়েস হাঁসদার অভিযোগ, “প্রায় ১১০ জন বাড়ি প্রাপকের তালিকায় এক জনও আদিবাসীর নাম নেই। এই তালিকা বাতিল করতে হবে। তালিকায় বেশ কয়েক জন আর্থিক ভাবে সচ্ছল বাসিন্দার নাম রয়েছে। অথচ, হতদরিদ্র আদিবাসী মানুষের নাম নেই।”
এ দিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের টাবাডি হলুদকানালি, মালবহাল, জোড়বাড়ি, কুন্দলপাড়া-সহ প্রায় ১০টি আদিবাসীপাড়ায় কয়েকশো আদিবাসী মানুষ বসবাস করেন। প্রায় প্রত্যেকেই হতদরিদ্র। দিনমজুরি করেন। প্রায় প্রত্যেকেই থাকেন ঝুপড়িতে।
বিডিও (সালানপুর) অদিতি বসু বলেন, “ওঁদের কথা শুনেছি। দীর্ঘ আলোচনাও হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষজনের নাম নেই তালিকায়। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফাল্গুনী ঘাঁষি কর্মকারের দাবি, এসটি সেলের নেতৃত্ব তাঁদের অভিযোগ জানিয়েছেন। পারস্পরিক আলোচনায় সমস্যার সমাধান করা হবে। তবে ফাল্গুনীর দাবি, “২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে ১০৮ জন বাড়ি প্রাপকদের টাকা মেটানো হয়ে গিয়েছে। কোনও সমস্যা হয়নি।”
তবে বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি সুব্রত মিশ্রের কথায়, “এত দিন বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন। এ বার শাসক দলের লোকেরাই পথে নামছেন। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, আবাস যোজনার তালিকা তৈরিতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে।” সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়েরও তোপ, “আবাস যোজনায় এমন আরও অনিয়ম সামনে আসবে। সালানপুরের এই বিষয়ে আমরাও লাগাতার আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” যদিও বিরোধীদের অভিযোগে আমল দিচ্ছেন না তৃণমূলের সালানপুর ব্লক সাধারণ সম্পাদক ভোলা সিংহ। তাঁর কথায়, “এ দিন কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভ বা অভিযোগ হয়নি। আদিবাসী মানুষেরা কিছু আবেদন নিয়ে ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। আমরা তালিকা সংশোধনের বিষয়ে জোর দিচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy