Advertisement
E-Paper

আতঙ্কে দু’পক্ষই, পুলিশি টহলের মাঝে বাস কৈথনে

গিধগ্রাম পঞ্চায়েতের কৈথনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামে ঢোকার আগেই কৈথন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছে পুলিশের ক্যাম্প।

ফাঁকা পড়ে বাড়ি। কাটোয়ার কৈথন গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

ফাঁকা পড়ে বাড়ি। কাটোয়ার কৈথন গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

সুচন্দ্রা দে

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৪৯
Share
Save

গ্রামের বাইরে টহল দিচ্ছে পুলিশ। বেশ কিছু বাড়িতে ঝুলছে তালা। দরজার বাইরে পলাতক বাড়ির মালিকের নামে হুলিয়া। অগস্টে কাটোয়ার কৈথনে তৃণমূল কর্মী সাহাঙ্গির শেখকে খুনের পর থেকে এখনও আতঙ্ক কাটেনি গ্রামে। ঘটনার পর থেকে গ্রামছাড়া হয়ে থাকা বাসিন্দারা প্রশাসনিক নিরাপত্তায় ঘরে ফেরানোর দাবিতে বারবার ঘেরাও-বিক্ষোভ করছেন কাটোয়া থানায়। গ্রামছাড়া মানুষজন ফেরার পরে আবার অশান্তি বাধতে পারে, আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা।

গিধগ্রাম পঞ্চায়েতের কৈথনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামে ঢোকার আগেই কৈথন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছে পুলিশের ক্যাম্প। ২৩ অগস্ট সন্ধ্যায় সাহাঙ্গির খুন হওয়া পর থেকে রয়েছে ক্যাম্পটি। নীলেরপাড়ে যেখানে খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল, সেখানে করুই-কৈচর রোডে রোজ দু’বেলা টহল দেয় পুলিশ। ক্যাম্পে রয়েছেন দু’জন এসআই-সহ ৮ জন পুলিশকর্মী।

খুনের পর থেকে নীলেরপাড়ের খাঁপাড়ায় নিজেদের বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না বলে অভিযোগ শ’পাঁচেক গ্রামবাসীর। সেখানে গিয়ে দেখা মেলে সুফিয়া বিবি, আম্ভি বিবিদের। সাহাঙ্গির খুনে নাম জড়িয়েছে তাঁদের পরিজন নাজির শেখ, মুজিদ শেখদের। তাঁরা পলাতক। পুলিশের হুলিয়া জারি রয়েছে। তবে এই দুই প্রৌঢ়া বাড়িতেই রয়েছেন। তাঁদের পড়শি, সাহাঙ্গিরের পিসি সুমি বিবির অভিযোগ, ‘‘ছেলেটাকে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে খুন করে দেওয়া হল। কিন্তু তা বলে অভিযুক্তদের বয়স্ক আত্মীয়দের আমরা তাড়িয়ে দিইনি। ওঁরা নিরাপদেই আছেন।’’ আর এক অভিযুক্তের আত্মীয় নফুরা বিবি, সরিদা বিবিরাও গ্রামে রয়েছেন।

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, সাহাঙ্গির ছিলেন গ্রামে দলের নেতা অ্যালেন শেখ গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ। অ্যালেনের স্ত্রী রোহিমা বিবি এখন গিধগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। তাঁর ছেলে সাহেব শেখ বলেন, ‘‘যাঁরা নির্দোষ তাঁরা তো দিব্যি রয়েছেন গ্রামে। আমরা কাউকে ঢুকতে বাধা দিইনি। অভিযুক্তদের পরিবারের অনেকেও মাঝে গ্রামে এসে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছেন।’’ মমিন শেখ, কবর শেখ, ছাদেম শেখ, নজু শেখ, চামু শেখদের বাড়িতে হুলিয়া জারি করে নোটিস সাঁটানো। বাড়ির দরজা-জানলা ভাঙা, মেঝেতে পড়ে ভাঙা সাইকেল।

ওই পাড়াতেই দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে থাকেন সাহাঙ্গিরের স্ত্রী রিনা বিবি। তিনি বলেন, ‘‘দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। অভিযুক্তরা গ্রামে না থাকলেও বারবার বিভিন্ন ভাবে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। ছেলেমেয়েদের নিয়ে আতঙ্কে আছি।’’ প্রধান রোহিমা বিবি বলেন, ‘‘অভিযুক্তেরা আগে গ্রামে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছিল। গ্রামে ফিরলে গোলমাল পাকাবে বলে আমাদের আশঙ্কা।’’

খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আজমত শেখের বাড়ি ‘সিল’ করেছে পুলিশ। দোতলা বাড়িটির বাইরে ঝুলছে তালা। ঘরছাড়া লোকজন মাঝে-মধ্যেই কাটোয়া থানায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁদেরও দাবি, সন্ত্রাসের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাঁদের। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাস উৎসবের পরে গ্রামছাড়াদের ঘরে ফেরানোর পরিকল্পনা রয়েছে প্রশাসনের। তখন যাতে গ্রামে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়, সে দিকে নজর রাখা হবে বলে আশ্বাস পুলিশের।

Patrol Police Murder Panic

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}