জখম: দুর্ঘটনায় গুরুতর চোট পান উত্তম রানা। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু ঘটনাস্থল এলাকায় পড়ে না দাবি করে আহতকে হাসপাতালে না পাঠিয়ে তারা চলে যায় বলে অভিযোগ। পুলিশ তৎপর হলে উত্তম রানার অবস্থা এতটা খারাপ হতো না বলেই মনে করছে তাঁর পরিবার। দুর্গাপুরের বাসিন্দা উত্তম খবরের সাইকেলে করে ঘুরে ঘুরে কাগজ বিক্রি করতেন। এখন ভেন্টিলেশনে রয়েছেন উত্তম। তাঁর মা কবিতাদেবী মঙ্গলবার বলেন, ‘‘কার এলাকা না দেখে আগে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত ছিল!’’
সোমবার দুর্গাপুরে এনআইটি-র কাছে মহাত্মা গাঁধী রোডে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (এসবিএসটিসি) বাসের ধাক্কায় জখম হন বছর পঁচিশের উত্তম। সাইকেলে চেপে বিভিন্ন জায়গায় কাগজ বিলি করতে যাচ্ছিলেন তিনি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, তাঁরা প্রথমে খবর দেন সংশ্লিষ্ট সিটি সেন্টার ফাঁড়িতে। পুলিশের একটি গাড়ি আসে। কিন্তু ওই এলাকা তাঁদের নয় জানিয়ে সটান চলে যান পুলিশকর্মীরা।
এর পর জনতা ফের খবর দেয় ফরিদপুর ফাঁড়িতে। তবে পুলিশ আসার আগেই অবস্থা খারাপ হচ্ছে আঁচ করে উত্তমকে ডিএসপি হাসপাতালে নিয়ে যান এলাকাবাসী।
পরে পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে গাঁধী মোড়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। ঘণ্টাখানেক পরে অবরোধ ওঠে।
উত্তমবাবুকে ডিএসপি থেকে বেসরকারি হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর মিলেছে, শরীরের নিম্নাংশে চোট পেয়েছেন উত্তম। ভাল মতোই রক্তক্ষরণ হয়েছে তাঁর। সোমবারই বড় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও তিনি এখনও বিপন্মুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
দুর্গাপুরের ইস্পাতপল্লিতে অ্যাসবেস্টসের চালের ছোট বাড়িতে বাবা-মাকে নিয়ে থাকেন উত্তম। তাঁর আয়েই সংসার চলে। উত্তমের বাবা আনন্দ রানা জানান, ছেলের চিকিৎসার খরচের দায়িত্ব নিয়েছেন এসবিএসটিসি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সুস্থ হয়ে উত্তম আর সাইকেলে কাগজ বিলি করতে পারবেন কি না, সে ক্ষেত্রে সংসার চলবে কী ভাবে— এ সব নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। তাঁদের প্রতিবেশীদের একটা বড় অংশের বক্তব্য, ‘‘পুলিশের অপেক্ষায় সময় নষ্ট না হলে হয়তো উত্তম আর একটু ভাল অবস্থায় থাকত।’’
পুলিশের অবশ্য দাবি, খবর পেয়ে দুর্গাপুর থানার (সিটি সেন্টার ও ফরিদপুর ফাঁড়ি এই থানার অন্তর্গত) ওসি দুর্ঘটনাস্থলে যান। এলাকা নিয়ে সমস্যায় আহতকে উদ্ধার করা হয়নি, থানা এই অভিযোগ মানেনি। তবে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এক কর্তার আশ্বাস, ‘‘এমনটা যদি হয়ে থাকে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy