এক কলেজ ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় জড়িতের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, এই অভিযোগে পুলিশ ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রবিবার কুলটির সাঁকতোড়িয়ায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে এই বিক্ষোভ চলার পরে পুলিশের তরফে দোষীদের গ্রেফতারের ব্যাপারে আশ্বাস দেওয়া হলে বাসিন্দারা শান্ত হন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে বিক্ষোভ সেটি গত ৯ অগস্টের ঘটনা। সে দিন সন্ধ্যায় বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন চিনাকুড়ির শীতলপুরের এক তরুণী। তাঁর পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, বাড়ির কাছে সিআইএসএফ ক্যাম্পের সামনে তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে তিনি কথা বলছিলেন। তখন ইমরান আনসারি নামে এলাকার এক যুবক তাঁকে কটূক্তি করে ও কুপ্রস্তাব দেয়। মেয়েটি প্রতিবাদ করলে তাঁকে মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়। জামাকাপড়ও ছিঁড়ে যায় তাঁর। আশপাশের লোকজন ছুটে এলে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। প্রথমে ইসিএলের সাঁকতোড়িয়া হাসপাতালে, পরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ওই তরুণীর চিকিৎসা করানো হয়।
ওই তরুণীর দাদা আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটে সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার বোন চার বছর ধরে বিহারের গয়ায় থাকে। সেখানেই একটি কলেজে বিকম প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করে। পারিবারিক কাজে ৭ অগস্ট বাড়ি এসেছিল। ১০ অগস্ট তার ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগের সন্ধ্যাতেই এমন ঘটনা ঘটে যায়।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা ঘটনাটি নিয়ে সাঁকতোড়িয়া ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করা হয় ১৫ অগস্ট। তরুণীর পরিবারের দাবি, প্রথমে পুলিশের তরফে লিখিত অভিযোগ না করার অনুরোধ জানিয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু সপ্তাহ পেরোতে চললেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না করায় পরিবারের তরফে অভিযোগ জানানো হয়। এর পরেই এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা অভিজিৎ আচার্যের দাবি, ‘‘কথা দিয়েও পুলিশ সাত দিনে কোনও পদক্ষেপ করেনি। তাই আমরা পথে নেমেছি।’’
যদিও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার কথা মানতে চাননি এসিপি (পশ্চিম) অসিত পাণ্ডে। তিনি বলেন, ‘‘১৫ অগস্ট অভিযোগ হয়েছে। আমরা তদন্ত শুরুও করেছি। শীঘ্র ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তবে এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। এলাকার প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ বংশোগোপাল চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘রাজ্য জুড়েই এমন ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ তদন্ত করছে না, আবার অভিযোগও নিচ্ছে না।’’ কংগ্রেসে নেত্রী ইন্দ্রাণী মিশ্রের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যে নারীর সম্মান নেই। পুলিশও যে তা রক্ষা করছে না, এমন ঘটনা থেকেই বোঝা যায়।’’ বিজেপি-র আসানসোল জেলা সম্পাদক প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শিল্পাঞ্চলে পুলিশের এই ভূমিকা আমরা বরদাস্ত করব না। এ নিয়ে আন্দোলন হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy