স্বজনহারা। নিজস্ব চিত্র।
ঘরের মধ্যে মিলল এক বধূ ও তাঁর দেড় বছরের শিশুকন্যার দেহ। শুক্রবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের বলগোনা রেলস্টেশন লাগোয়া পূরণদিঘির পাড় এলাকায় এই জোড়া মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। মৃতেরা হলেন চন্দনা বাউড়ি ঘাটোয়াল (২০) ও তাঁর দেড় বছরের মেয়ে নন্দিনী।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ব্লাউজ দিয়ে শিশুকন্যাকে শ্বাসরোধ করে খুন করার পরে, ওই মহিলা আত্মঘাতী হয়েছেন। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পুলিশ দেহগুলি ময়না-তদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠিয়েছে। পুলিশ বধূর স্বামী সঞ্জিতকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটির দেওয়াল আর অ্যাসবেস্টসের বাড়িতে ওই দম্পতি থাকতেন। একই চত্বরে সঞ্জিতের দুই দাদা ও বাবা-মা থাকেন। প্রত্যেকেই দিনমজুর। রোজকার মতোই এ দিন ভোরে তাঁরা ধান কাটতে চলে যান। পরিবারের দাবি, দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ঘরের দরজা না খোলায়, তাঁদের সন্দেহ হয়। দরজা ভেঙে তাঁরা দেখেন, গলায় গামছার ফাঁস দেওয়া চন্দনার দেহ ঝুলছে। পাশের বিছানায় নন্দিনীর দেহ পড়ে। তার মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়েছিল বলে স্থানীয়দের দাবি। ভাতার থানার পুলিশ খবর পেয়ে মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
তিন বছর আগে সঞ্জিতের সঙ্গে চন্দনার বিয়ে হয়েছিল। সঞ্জিতের দাবি, “চন্দনা জমিতে কাজ করতে যাবে বলে বেশ কয়েক দিন ধরে জেদ ধরেছিল। কিন্তু অতটুকু মেয়েকে বাড়িতে রেখে কাজে যাওয়া নিয়ে আমার আপত্তি ছিল। এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে আমাদের মধ্যে অশান্তি চলছিল। কিন্তু এমন কাণ্ড ঘটবে ভাবিনি!’’
পরিজন ও পড়শিদের দাবি, বাড়ির সামনে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নন্দিনী পাড়ার অন্য শিশুদের সঙ্গেই খেলছিল। তার পরে তাকে ঘুম পাড়াবেন বলে চন্দনা তুলে নিয়ে ঘরে ঢুকে যান। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বাড়ির লোকেরা কাজ থেকে ফিরে চন্দনার ঘরের দরজা বন্ধ দেখেন। সন্দেহ হয় তাঁদের। ডেকেও সাড়া না পেয়ে দরজা ভাঙতেই ওই দৃশ্য দেখা যায়।
চন্দনার বড় জা কুসুম বলেন, “মেয়েকে নিয়ে ঘরে ঢোকার আগে, আমি ভাত বসিয়েছি কি না, চন্দনা জানতে চেয়েছিল। তখন ওর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখিনি।’’ মৃতার বাবা আউশগ্রামের বটগ্রামের বাসিন্দা খাঁদু খাটোয়ালের দাবি, “কোনও সমস্যা ছিল কি না, মেয়েটা আমাদের কোনও দিন কিছু বলেনি। কেন সে এমন করল, সেটাই বুঝতে পারছি না।’’ বলগোনা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আমজাদ শেখেরও দাবি, ওই দম্পতির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির জন্যই দুঃখজনক পরিণতি ঘটে থাকতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy