Advertisement
২১ মে ২০২৪

রাস্তা যেন বাজার, হাঁটা দায়

পুরসভার অতিথিশালায় সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন গুসকরার পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায়। নাগরিকদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন সৌমেন দত্ত। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর। নোংরা ফেলার জায়গা নেই। মাঝেমধ্যেই তা উপচে ঢোকে রাস্তায়। তা ছাড়া পুকুরের নোংরা জলও বৃষ্টিতে রাস্তায় উঠে আসে। ছবি: উদিত সিংহ।

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৬ ০৩:০১
Share: Save:

• সাম্প্রতিক কালে বারবার শাসক দলের অন্দরমহলের গোলমালের প্রভাব পড়েছে পুর পরিষেবায়। যা নিয়ে অনেক পুরবাসীই বেশ ক্ষুব্ধ।

তপন মাজি, মাজি পাড়া

পুরপ্রধান: আমাদের মধ্যে আর কোনও সমস্যা নেই। যা ঘটেছে, তা এখন অতীত। তবে, ওই গোলমালের প্রভাব পুর পরিষেবায় পড়েছে, এমন অভিযোগ মানতে পারছি না। পরিষেবায় কোনও ঘাটতি ছিল না।

•পুরসভার ভিতরে লাইন পাড়ের স্পোর্টিং গ্রাউন্ডে গ্রন্থাগার রয়েছে। কিন্তু পরিবেশগত কারণে ওই গ্রন্থাগারের পাঠক সংখ্যা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। আমার আবেদন, গ্রন্থাগারটি শহরের ভিতরে নিয়ে আসলে ভাল হয়।

সীতাংশুশেখর ঘটক, সংহতিপল্লি

পুরপ্রধান: খুবই ভাল প্রস্তাব। আমি নিজে ওই গ্রন্থাগারের সদস্য। ফলে জানি যে, পরিবেশগত কারণে গ্রন্থাগারের জায়গা পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। পুরবোর্ডের সভায় এ নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

•শহরে শ্মশান রয়েছে। কিন্তু মৃতদেহ নিবন্ধীকরণের কোনও ব্যবস্থা নেই। নিরাপত্তার দিকটা ভেবে দেখে পুরসভার উচিত এ ব্যাপারে দ্রুত নজর দেওয়া।

কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়, সংহতিপল্লি

পুরপ্রধান: পুরসভার নজর রয়েছে বলেই ৪১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা খরচ করে শ্মশানের উন্নতির জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। শ্মশানের উন্নতির সঙ্গে মৃতদেহ নিবন্ধীকরণের ব্যাপারেও জোর দেওয়া হবে।

•শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে দুটো পুকুর রয়েছে। দুটি পুকুরই পুরসভার। কিন্তু বহু দিন ধরে সেগুলি সংস্কার হয়নি। জঞ্জাল ফেলার জায়গা হয়েছে পুকুর। মশারও উপদ্রব বাড়ছে। তা ছাড়া বিভিন্ন রাস্তায় এখনও মান্ধাতা আমলের আলো লাগানো রয়েছে।

কুশল মুখোপাধ্যায়, মুখার্জি পাড়া

পুরপ্রধান: পুরসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই দুটি পুকুর সংস্কার করে শীঘ্রই শিশু ও কিশোরদের জন্য সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়া হবে। খুব শীঘ্রই শহরের প্রতিটি বিদ্যুতের খুঁটিতে এলইডি আলো বসবে।

নোংরা ফেলার জায়গা নেই। মাঝেমধ্যেই তা উপচে ঢোকে রাস্তায়। তা ছাড়া পুকুরের নোংরা জলও বৃষ্টিতে রাস্তায় উঠে আসে। ছবি: উদিত সিংহ।

•আমাদের এই শান্তিপুর এলাকার উপর দিয়ে সারা শহরের নিকাশি জল যায়। ফলে, চাষযোগ্য ১০০-১২০ বিঘা জমি নষ্ট হচ্ছে। সঙ্গে পরিবেশও দূষিত হচ্ছে। পুরসভার তরফে একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু মাঝপথে তা বন্ধ হয়ে গেল কেন?

রজত সরকার, শান্তিপুর

পুরপ্রধান: শহরে নিকাশির সমস্যা দীর্ঘ দিনের। শহরের ভৌগলিক অবস্থানকে বিবেচনার মধ্যে না এনে অবৈজ্ঞানিক ভাবে এলাকা গড়ে উঠেছে। সাড়ে ১৪ লক্ষ টাকা খরচ করে নিকাশি নালা তৈরির উদ্যোগ করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু মানুষের বাধায় সেই কাজ থমকে যায়। ফের ওই এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা উন্নতির জন্য উদ্যোগ করা হচ্ছে।

•গুসকরার পাইকারি মাছ বাজার অত্যন্ত অপরিচ্ছন্ন। দুর্গন্ধে টেকা দায়।

মলয় চৌধুরী, চাঁদ রায় তলা

পুরপ্রধান: প্রতিদিন দুপুরের পরে বাজার পরিষ্কার করা হয়। আর মাছের বাজারে গন্ধ থাকবে না!

•গুসকরার আট নম্বর ওয়ার্ডের মুখার্জি-ক্ষেত্রপালতলা এলাকা দিয়ে জল নিকাশি হয়। নর্দমা নিচু হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই নোংরা জল রাস্তায় উপচে আসে। রাস্তায় জল জমে থাকায় দুর্ঘটনা ঘটে।

সুনীলকুমার মণ্ডল, বিবেকানন্দ পল্লি

পুরপ্রধান: আগে ওই এলাকায় ধান চাষ হতো। স্বাভাবিক ভাবেই এলাকাটা তুলনামূলক ভাবে বেশ নিচু। তার উপর অবৈজ্ঞানিক ভাবে এলাকাগুলি তৈরি হওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে।

• আমাদের এলাকা থেকে স্টেশন রোড পর্যন্ত রাস্তার উপরেই বাজার-দোকান উঠে এসেছে। এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। পুরসভা এ ব্যাপারে উদাসীন কেন?

বুদ্ধদেব গঙ্গোপাধ্যায়, হাটতলা

পুরপ্রধান: যানজট রোখার জন্য প্রবীণ কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটা কমিটি গড়া হয়েছিল। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি। ফের উদ্যোগ করতে হবে।

(নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “রাজনৈতিক কারণ এবং কমিটির সদস্যদের আন্তরিকতার অভাবেই আমি ওই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছিলাম।”)

• পুরসভা পরিচালিত হাটতলা-চাঁদরাতলা রোডে জলাধারের পাঁচিল ভাঙা। অসামাজিক কাজকর্ম চলে। মাঝেমধ্যেই জলাধার দিয়ে জল পড়ে যায়। দেখার কেউ নেই।

অশেষ মুখোপাধ্যায়, হাটতলা

পুরপ্রধান: আমি নিজে গিয়ে দেখেছি, জলের অপচয় হচ্ছে। ওই জলাধারের জল চলে যাচ্ছে কৃষি জমিতে। তবে মজার বিষয় হল, পুরসভা পরিচালিত হলেও ওখানকার কর্মীরা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের। ওই কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছিল সংশ্লিষ্ট দফতর। আর পুলিশ ওই এলাকাতে মাঝেমধ্যে তল্লাশি চালায়।

•তফসিলি জাতি ও উপজাতি শংসাপত্র নিয়ে প্রচুর হয়রান হতে হয়। এ ব্যাপারে পুরপ্রধান উদ্যোগী হলে ভাল হয়।

বিমলকৃষ্ণ মজুমদার, রেজিস্ট্রি রোড

পুরপ্রধান: নিয়মের মধ্যে থেকে যতদূর সাহায্য করা প্রয়োজন, তা করি। ব্লক অফিসে এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে, ফোন করে হয়রানি বন্ধ করার জন্য উদ্যোগও করা হয়েছে।

•শহরের ভিতর রেলগেটটা যন্ত্রণার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্যাপারে পুরসভা কী কিছু করতে পারে না?

মদনমোহন চৌধুরী, সারদা পল্লি

পুরপ্রধান: শুনেছি, উড়ালপুলের ব্যাপারে রেল একটা প্রস্তাব নিয়েছে। গুসকরাবাসীকে নিয়ে পুরসভা জনমত সংগ্রহ করে দাবি জানাবে।

•পুরসভার বেশ কিছু ঢালাই রাস্তা একেবারে খারাপ হয়ে গিয়েছে। কবে সারবে?

নির্মলকান্তি বিশ্বাস, শান্তিপুর

পুরপ্রধান: শীঘ্রই শহরের রাস্তা সংস্কার করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

pllution distress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE