Advertisement
E-Paper

শহরবাসীর আস্থা অর্জনে প্রথমেই পুকুর সংস্কার

ঘণ্টা দুয়েক টানা বৃষ্টি হলেই শহর ডোবে হাঁটুজলে। জল নেমে ঘরবন্দি দশা কাটিয়ে কাজে বেরোতে বেরোতে লেগে যায় আরও কয়েক ঘণ্টা। জমা জলের যন্ত্রণা নিয়ে এ অভিযোগ কালনার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের। অবশেষে সমস্যা মেটাতে শহরের মজে যাওয়া পুকুরগুলি সংস্কারে উদ্যোগী হল পুরসভা। পুরসভার দাবি, সংস্কার হয়ে গেলে শুধু জমা জলই নয়, রোগবাহক মশা-মাছির হাত থেকেও নিস্তার পাবেন বাসিন্দারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৫ ০১:৫৫
চলছে কাজ। —নিজস্ব চিত্র।

চলছে কাজ। —নিজস্ব চিত্র।

ঘণ্টা দুয়েক টানা বৃষ্টি হলেই শহর ডোবে হাঁটুজলে। জল নেমে ঘরবন্দি দশা কাটিয়ে কাজে বেরোতে বেরোতে লেগে যায় আরও কয়েক ঘণ্টা। জমা জলের যন্ত্রণা নিয়ে এ অভিযোগ কালনার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের। অবশেষে সমস্যা মেটাতে শহরের মজে যাওয়া পুকুরগুলি সংস্কারে উদ্যোগী হল পুরসভা। পুরসভার দাবি, সংস্কার হয়ে গেলে শুধু জমা জলই নয়, রোগবাহক মশা-মাছির হাত থেকেও নিস্তার পাবেন বাসিন্দারা।

পুরাকীর্তিতে ঠাসা এ শহরে দু’দশক আগেও নিকাশি ব্যবস্থার মূল কাঠামো ছিল তিনশোরও বেশি ছোট-বড় পুকুর। পুকুরগুলির সঙ্গেই নর্দমাগুলি জুড়ে ছিল। কিন্তু বসতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাসযোগ্য জমি কমতে থাকে। পুকুর বুজিয়ে দেদার জমি বিক্রি এবং তাতে বাড়ি বানানোরও অভিযোগ উঠতে থাকে। গত এক দশকে বহু পুকুরের চিহ্ন আর নেই, যেগুলি আছে তাও সংস্কারের অভাবে বুজতে বসেছে। ফলে নিকাশি সমস্যা এখন কালনার অন্যতম বড় সমস্যা। শহরবাসীর অভিযোগ, কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টি হলেই তেঁতুলতলা, কামারশালা গলি, মেডিসিন কমপ্লেক্স, বৈদ্যপুর মোড়, নতুন বাসস্ট্যান্ড চত্বর সহ একাধিক জায়গায় জল জমে যায়।

শাসকদল তৃণমূলের কিছু কর্মীরা জানান, এ বার পুরভোটে ১৮ টি আসনের মধ্যে ১২টি নিজেদের দখলে রেখে দিলেও নেতাদের একাংশ পুকুর ভরাটে সরাসরি যুক্ত হয়ে পড়ায় শহরের বহু মানুষ তাঁদের উপর আস্থা রাখতে পারছেন না। তাই বোর্ড গঠনের আগেই দলীয় বৈঠকে আলাদা করে কাউন্সিলরদের এ বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়। জানিয়ে দেওয়া হয়, আস্থা অর্জন করতে পুকুর ভরাট বন্ধ করতে হবে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শপথ নেওয়ার পরেই পুকুর সংস্কারে বিশেষ উদ্যোগী হন পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ। পুরসভার বিভিন্ন তহবিল থেকে বার্ষিক ২০ লক্ষ টাকা খরচেরও পরিকল্পনাও নেওয়া হয়। পুরসভার দাবি, এতে বছরে অন্তত ছোট-বড় কুড়িটি পুকুর সংস্কারের কাজ করা যাবে। যে সমস্ত এলাকাগুলিতে জল জমে সেখানকার পুকুর সংস্কারে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। সম্প্রতি শহরের ঘটক পাড়ার একটি পুকুর সংস্কারের কাজ শুরুও করে দিয়েছে পুরসভা। পুরসভার দাবি, প্রথমে পুকুরের উপরিভাগ থেকে গাছগাছালি সরিয়ে ফেলা হচ্ছে, পরে পুকুরে নীচের অংশের মাটি কেটে গভীরতা বাড়ানোর কাজ হচ্ছে।

তবে এ কাজে কিছু মুশকিলের সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলেও পুরসভার দাবি। পুরসভা জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে শহরের বেশির ভাগ পুকুরেই মাছ চাষ হয় না। আবার বেশ কিছু পুকুর নিয়ে শরিকি দ্বন্দ্বও রয়েছে। ফলে মালিকানা খুঁজে পেতে মুশকিল হচ্ছে। আবার পুকুরগুলি থেকে জলদূষণ, মশাবাহিত রোগও দেখা দিচ্ছে বলে এলাকাবাসীদের দাবি। কালনার বাসিন্দা কমলা সরকার বলেন, ‘‘পুরসভা পুকুরগুলি সংস্কার করলে মশা মাছির উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। পাশাপাশি জল জমা রাস্তাগুলির সঙ্গে সংস্কার হওয়া পুকুরে যোগ থাকলে দ্রুত নিকাশি সমস্যার সমাধান হবে।’’ পুকুর সংস্কারের পাশাপাশি পুরসভা নালাগুলি সংস্কারেও জোর দিয়েছে। পুরসভার দাবি, ইতিমধ্যেই কালনা পুরনো বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু এলাকার নালা সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। নালাগুলি ধারাবাহিক ভাবে সাফাই করা হবে বলেও পুরসভার দাবি।

পুরপ্রধান দেবপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘কালনা শহরে পুকুরের সংখ্যা এখনও প্রচুর। পুরসভার লক্ষ্য ধারাবাহিক ভাবে পুকুর সংস্কারের কাজ করে যাওয়া।’’ তাঁর দাবি, ‘‘পুকুর সংস্কারের কাজ শেষ হওয়ার পরে মালিকদের ডেকে মাছ চাষ করার অনুরোধ করা হবে।’’ কোনও পুকুর মালিক রাজি না হলে সেই এলাকায় মানুষদের নিয়ে একটি কমিটি গড়া হবে। যে কমিটি মাছ চাষ করবে।’’ এর সঙ্গেই কোথাও পুকুর বোজানোর অভিযোগ পেলেই পুরসভা কড়া ব্যবস্থা নেবে বলেও তাঁর দাবি।

kalna Pond reformation work rain municipality
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy