বছর দু’য়েক আগে শিক্ষা দফতরের টাকায় বিভিন্ন স্কুলে বসানো হয়েছিল অগ্নি নির্বাপক সিলিন্ডার। কিন্তু দুর্গাপুর মহকুমার বেশির ভাগ স্কুলেই সেগুলির মেয়াদ পেরিয়ে গিয়েছে। অথচ, মিড-ডে মিলের রান্নার জন্য দাহ্য বস্তু রয়েছে বেশির ভাগ স্কুলেই। এই পরিস্থিতিতে স্কুল কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, হঠাৎ আগুন ধরলে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হবে।
প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর মহকুমায় হাইস্কুলের সংখ্যা একশোরও বেশি। বেশির ভাগ স্কুলেই কাঠের জ্বালানি বা গ্যাসে মিড-ডে মিলের রান্না হয়। রান্নার জন্য স্কুলে দাহ্য বস্তু মজুত থাকায় অগ্নি নির্বাপক সিলিন্ডার থাকা দরকার। বিভিন্ন স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানান, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মিড-ডে মিল চালু হওয়ার পরে বছর দুয়েক আগে হাইস্কুলগুলিতে অগ্নি নির্বাপক সিলিন্ডার বসানোও হয়। সেগুলি বসানোর আগে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করে। সেখানে দমকলের আধিকারিকেরা শিক্ষকদের বুঝিয়ে দেন, হঠাৎ আগুন ধরলে কী ভাবে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে।
দুর্গাপুরে দমকলের আধিকারিক তুষারকান্তি সেন জানান, অগ্নি নির্বাপণের অঙ্গ হিসেবে স্কুলগুলিকে বিস্তারিত পরামর্শ দেওয়া হয়।
ওই সিলিন্ডারগুলি কেনার জন্য শিক্ষা দফতর টাকা বরাদ্দ করে বলে জানা গিয়েছে। তারপরে সেই টাকা পৌঁছয় জেলা প্রশাসনের কাছে। পরে বিভিন্ন স্কুলের মধ্যে তা বন্টন করে দেয় সর্বশিক্ষা দফতর। বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ, সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও সিলিন্ডার কেনার টাকা আর আসেনি। দুর্গাপুর শহরের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের আশঙ্কা, ‘‘হঠাৎ আগুন ধরলে কী যে হবে! দুর্গাপুরের স্কুলগুলির নিরাপত্তায় এখন যেন প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন শিক্ষক, অভিভাবক ও পড়ুয়ারা।’’ দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক, কাঁকসা-সহ বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের আক্ষেপ, স্কুলের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা শিক্ষার অধিকার আইনের অন্যতম শর্ত। কিন্তু অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা বেহাল হওয়ায় সেই শর্তই কার্যত লঙ্ঘিত হচ্ছে।
জেলা স্কুল পরিদর্শক খগেন্দ্রনাথ রায় অবশ্য জানান, দমকল প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দেওয়ার পরেই স্কুলগুলিকে মিড-ডে মিলে গ্যাস ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। অগ্নি নির্বাপক সিলিন্ডারগুলির সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে খগেন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘বিষয়টি কী হয়েছে, তা খোঁজ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করব।’’