Advertisement
E-Paper

অন্তঃসত্ত্বাকে খুনের নালিশ, শোকে মৃত্যু মায়েরও

পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা যুবতীকে খুনের অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। একমাত্র মেয়ের মৃত্যুর খবর আসার কয়েক ঘণ্টা পরে তাঁর ক্যানসারে আক্রান্ত মা-ও মারা গেলেন হৃদরোগে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৮ ১৪:৪৯
মৃত চম্পার শোকার্ত পরিজন। সোমবার হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

মৃত চম্পার শোকার্ত পরিজন। সোমবার হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা যুবতীকে খুনের অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। একমাত্র মেয়ের মৃত্যুর খবর আসার কয়েক ঘণ্টা পরে তাঁর ক্যানসারে আক্রান্ত মা-ও মারা গেলেন হৃদরোগে।

পুলিশ জানায়, মৃতার নাম চম্পা সাহা (২৫)। মা ও মেয়ের মৃত্যুর ঘটনার উল্লেখ করে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন চম্পার বাপের বাড়ির লোকজন। সেখানে চম্পার স্বামী, শাশুড়ি, ননদ ও জমাইবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে বর্ধমান থানার পুলিশ ননদ ও তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করে। আজ, মঙ্গলবার তাঁদের আদালতে তোলা হবে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ ও চম্পার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাতারের ঝর্না কলোনির তরুণী চম্পার সঙ্গে এক বছর আগে বিয়ে হয় বর্ধমানের সদরঘাটের শ্মশানপাড়ার বাসিন্দা, পেশায় লটারি ব্যবসায়ী সন্তোষ সাহার। চম্পার বাপের বাড়ির অভিযোগ, টাকা আনা নিয়ে অশান্তির জেরে রবিবার শ্বশুরবাড়িতে চম্পাকে মেরে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।রবিবার রাত ৮টা নাগাদ চম্পাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃতার দাদা গোবিন্দ গোলদারের অভিযোগ, ‘‘বোনকে পরিকল্পনা করে মেরে ফেলা হয়েছে। ওর মৃত্যুসংবাদ আগে আমাদের জানানো পর্যন্ত হয়নি! আমরা প্রতিবেশীদের কাছে খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসি।’’

পরিবার সূত্রের খবর, একমাত্র মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছিলেন চম্পার মা কবিতা গোলদার (৬৫)। রবিবার রাতেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। গোবিন্দর দাবি, মেয়ের মৃত্যু খবর পেয়েই তাঁর মা অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন।

এ দিন সদরঘাটের ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, চম্পার শ্বশুরবাড়িতে কেউ নেই। জটলা করে আছে প্রতিবেশীরা। রবিবারের ঘটনা নিয়ে আলোচনা চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন বললেন, ‘‘রবিবার সন্ধ্যায় ওই বাড়ি থেকে খুব গোলমালের আওয়াজ পাওয়া যায়। হঠাৎই দেখা যায়, রিকশায় চাপিয়ে চম্পাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চম্পাকে নিথর দেখে সন্দেহ হওয়ায় আমরা সঙ্গে সঙ্গে ওর বাপের বাড়িতে ফোন করি।’’

চম্পার পরিবার আরও অভিযোগ, বিয়ের সময় যৌতুক হিসাবে তিন ভরি সোনার গয়না দেওয়া হয়েছিল শ্বশুরবাড়িকে। কিন্তু, বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত টাকার দাবি শুরু হয়। এর মধ্যে শ্বশুরবাড়ির দাবিমতো বেশ কয়েক হাজার টাকা দেন চম্পার দাদা। অভিযোগ, তার পরেও স্বামীর ব্যবসা বাড়ানোর জন্য আরও টাকা আনতে চম্পাকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। সম্প্রতি গাড়ি কেনার জন্য ফের টাকা দাবি করে শ্বশুরবাড়ি।

গোবিন্দর দাবি, টাকা না পেয়ে নির্যাতন বাড়তে থাকে তাঁর বোনের উপরে। মাস ছয়েক আগে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বিষ খেয়েছিলেন চম্পা। ‘‘সে যাত্রা ও বেঁচে গিয়েছিল। এ বার আর পারলাম না বোনকে বাঁচাতে’’—আক্ষেপ চম্পার দাদার।

Death Pregnant In Law Murder Complaint
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy