Advertisement
১৯ মে ২০২৪

বেআইনি নির্মাণের প্রতিবাদ করায় মারধরের নালিশ

পুকুর ভরাট করে দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ পেয়ে ঘরটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেয় পুরসভা। সেই আক্রোশে অভিযোগকারীকে লোকলস্কর জুটিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠল দোকান মালিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী সুরেশচন্দ্র মণ্ডল আপাতত একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী সুরেশবাবু বর্ধমান শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বেড় মোড় এলাকার বাসিন্দা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৫ ০২:২০
Share: Save:

পুকুর ভরাট করে দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ পেয়ে ঘরটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেয় পুরসভা। সেই আক্রোশে অভিযোগকারীকে লোকলস্কর জুটিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠল দোকান মালিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী সুরেশচন্দ্র মণ্ডল আপাতত একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী সুরেশবাবু বর্ধমান শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বেড় মোড় এলাকার বাসিন্দা। ওই এলাকাতেই রাস্তার ধারে একটি পুকুরকে বুজিয়ে দোকানঘর তৈরির অভিযোগ উঠেছে মিষ্টি ব্যবসায়ী, সুকুমার ঘোষের বিরুদ্ধে। সুনীলবাবুর দাবি, বাম আমল থেকেই এই প্রক্রিয়া চলছে। তখন পুরসভা-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চিঠিও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সুরাহা হয়নি। কয়েক সপ্তাহ আগে সুনীলবাবু ফের অভিযোগ করেন, তাঁর বাড়ির জানলার সামনে পুকুর বুজিয়ে ওই মিষ্টি ব্যবসায়ী ৭-৮টি সিলিন্ডার জ্বালিয়ে মিষ্টি তৈরি করছেন। ফলে পরিবেশ দূষণ তো হচ্ছেই, তাঁর বাড়িরও ক্ষতি হচ্ছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে গত সোমবার বিকেলে দু’পক্ষকেই বোর্ড অফ কাউন্সিলের সভায় শুনানির জন্য ডেকে পাঠিয়েছিলেন পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত। কিন্তু অভিযোগকারী সুরেশবাবু হাজির থাকলেও ওই মিষ্টি ব্যবসায়ী উপস্থিত হননি। ফলে সুরেশবাবুর বক্তব্য শুনেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, দোকানটি ভেঙে দেওয়া হবে। নির্দেশটি দোকান মালিককে জানিয়েও দেয় পুরসভা। সোমবার রাতেই সুরেশবাবুর উপর ওই মিষ্টি ব্যবসায়ী সুকুমার ঘোষ ও তাঁর ছেলে আরও কয়েকজনকে নিয়ে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। সুরেশবাবু বলেন, ‘‘ওদের হাতে মদের বোতল, রড, আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। জোর করে ঘরে ঢুকে বুকে রিভালভার ধরে বলতে থাকে কেন, অভিযোগ করেছি। তারপরে মারতে শুরু করে।” পরে শাঁখারী পুকুরের বাসিন্দা, সুরেশবাবুর শ্যালক অমিতাভ নায়েক তাঁকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান।

তবে ওই ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আল্পনা হালদারের স্বামী মধু হালদার ওই ব্যবসায়ী সুকুমারবাবুর পাশে দাঁড়িয়েছেন। দোকানঘরটি না ভাঙার জন্য পুরপ্রধানকে তিনি অনুরোধ করেছেন বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও পুরপ্রধান তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। ওই দোকানে গিয়ে সুকুমারবাবু বা তাঁর ছেলে কাউকেই পাওয়া যায়নি। খোঁজ নেওয়ার জন্য কাউন্সিলরকে ফোন করা হলে তাঁর স্বামী মধুবাবু ফোনটি ধরে বলেন, “সুনীলবাবুকে মারধর করা হয়েছে বলে জানা নেই। সুকুমারবাবু ঠান্ডা প্রকৃতির লোক, যে কেউ তো অভিযোগ করতেই পারে।” পুরসভার শুনানিতে সুকুমারবাবুদের না যাওয়ারও ব্যাখা দিয়েছেন মধুবাবু। তিনি জানিয়েছেন, পুরসভার নোটিস ঠিকমতো বুঝতে না পারার জন্য সুকুমারবাবুদের পুরসভা যেতে দেরি হয়ে গিয়েছিল। পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলর (আবাসন) অরূপ দাস অবশ্য বলেন, “বোর্ডের সভায় ঠিক হয়েছে ওই বেআইনি মিষ্টির দোকানটি ভেঙে দেওয়া হবে। তারপরে যে ঘটনা ঘটেছে তা খুবই অন্যায় ও দুঃখজনক। পুলিশ বিষয়টি দেখছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bardhaman town illegal construction pond filling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE