Advertisement
E-Paper

হবে পড়ুয়াদের ক্যুইজ

শিক্ষক বোর্ডে অঙ্ক কষছেন। একাদশ শ্রেণিতে পিছনের বেঞ্চে বসে ঝিমোচ্ছে ছাত্রীরা। ক্লাসে ঢুকে এই দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন পরিদর্শক। ছাত্রীদের প্রশ্ন করে জানতে পারেন, ওই ক্লাসঘরে বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়া ছিল পাঁচ জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৬ ০২:৪৩

শিক্ষক বোর্ডে অঙ্ক কষছেন। একাদশ শ্রেণিতে পিছনের বেঞ্চে বসে ঝিমোচ্ছে ছাত্রীরা। ক্লাসে ঢুকে এই দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন পরিদর্শক। ছাত্রীদের প্রশ্ন করে জানতে পারেন, ওই ক্লাসঘরে বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়া ছিল পাঁচ জন। বাকিরা কলা বিভাগের। বর্ধমানের কুড়মুনের এক স্কুলের এই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) খগেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “ওই শিক্ষক ক্লাস সম্বন্ধে কতটা ওয়াকিবহাল, এই ঘটনা তার প্রমাণ।”

স্কুলের পরিকাঠামো ও পড়াশোনার হাল খতিয়ে দেখতে গঠিত মনিটরিং কমিটির বৈঠক হল এ দিন। সেখানেই উঠে আসে ওই ক্লাসের প্রসঙ্গ। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শনের রিপোর্ট নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। আমরা একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেগুলি নির্দেশ আকারে স্কুলে-স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।” জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন স্কুলের পরিকাঠামোগত সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পানীয় জল থেকে বিদ্যুতের সমস্যা দ্রুত মেটানোর ব্যবস্থা হবে বলে জানানো হয়েছে। দায়িত্বজ্ঞানের অভাবের অভিযোগে মাধ্যমিক স্তরের ১০ জন ও প্রাথমিকের ৩৭ জন শিক্ষককে ডেকে পাঠাচ্ছে জেলা পরিদর্শক দফতর (মাধ্যমিক) ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ।

এ দিন জেলাশাসকের দফতরে ওই বৈঠক হয়। গত এক মাসে প্রায় ৩৫০টি স্কুল পরিদর্শন করেছেন মহকুমা ও জেলা স্তরের মনিটরিং কমিটির সদস্যেরা। সেই সব স্কুলের নানা সমস্যা নিয়ে বৈঠকে সবিস্তার আলোচনা হয়। সোমবারই জেলাশাসকের নেতৃত্বে একটি দল পরিদর্শনে গিয়ে একটি স্কুলের পড়ুয়াদের কাছে উত্তর পেয়েছিলেন, দেশের নাম বাংলাদেশ। আবার একটি স্কুলে দেশের রাজধানী জিজ্ঞেস করতে উত্তর আসে ‘ঢাকা’। সেই অভিজ্ঞতা থেকে এ দিন সিদ্ধান্ত হয়েছে, পড়ুয়াদের মধ্যে সাধারণ জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ক্যুইজ প্রতিযোগিতা করা হবে।

জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়, পরিদর্শকেরা বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে দেখেছেন, মিড-ডে মিলের পরেই স্কুলে তালা পড়ে যাচ্ছে। সে জন্য বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কখন স্কুল খুলবে আর কখন বন্ধ হবে, তা স্কুলের বাইরে লিখতে রাখতে হবে, যাতে সকলের চোখে পড়ে। স্কুল চলাকালীন মূল গেট বন্ধ রাখা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এ ছাড়া এখনও কয়লা ও কাঠে মিড-ডে মিল চলছে যে সব স্কুলে, সেখানে রান্নার গ্যাস ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হবে। জেলা পরিকল্পনা আধিকারিক (সর্বশিক্ষা) শারদ্বতী চৌধুরী বলেন, “বেশ কয়েকটি স্কুলে মিড-ডে মিল চলছে না। সেই সব জায়গায় কী ভাবে মিড-ডে মিল চালু করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে পরিদর্শকরা দেখেছেন, শিক্ষকরা কাউকে না জানিয়েই স্কুল কামাই করেছেন। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি দাবি করেছেন, মোবাইলে ফোন করে ওই শিক্ষক জানিয়েছেন স্কুলে না আসার কথা। এ দিন সিদ্ধান্ত হয়, কোনও ভাবে মোবাইলে জানিয়ে নেওয়া ছুটি গ্রাহ্য হবে না। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি অচিন্ত্য চক্রবর্তী বলেন, “আগে থেকে দরখাস্ত জমা দিয়ে ছুটি নিতে হবে। তা না হলে শো-কজ করা হবে। পরিদর্শকেরা এ রকম যত নিদর্শন পেয়েছেন, সব শিক্ষককে শো-কজের সিদ্ধান্ত হয়েছে।” রিপোর্টে উঠে এসেছে, বেশ কিছু স্কুলে পড়ুয়া হাতে গোনা, অথচ শিক্ষক রয়েছে সরকারি নিয়মের থেকে অনেক বেশি। জেলায় এ রকম স্কুল নিয়ে বিশদ রিপোর্ট চেয়েছেন জেলাশাসক। তা পাওয়ার পরে অন্য স্কুলের সঙ্গে সেই সব স্কুলগুলিকে মিশিয়ে দেওয়া যায় কি না, এ নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে বলে মনিটরিং কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে।

General Knowledge Quiz contest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy