Advertisement
০৪ মে ২০২৪
raju jha murder case

গুলি খেয়ে দরজায় ঝুঁকে পড়েছেন, রক্তে ভাসছে শরীর, রাজু ঝা খুনের দৃশ্য বর্ণনা করলেন গাড়িচালক

শনিবার সন্ধ্যায় পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে জাতীয় সড়কের ধারে খুন হন দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী রাজু। জখম হন ব্রতীন মুখোপাধ্যায় নামে দুর্গাপুরেরই আর এক বাসিন্দা। তাঁদের গাড়িতে হামলা চালান আততায়ীরা।

Raju Jha Murder Case: Police finds new angle in the case

রাজু ঝা খুনের সময়কার বর্ণনা এফআইআরে উল্লেখ গাড়িচালক শেখ নুর হোসেনের। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:০৪
Share: Save:

কলকাতা যাওয়ার পথে জাতীয় সড়কের ধারে গাড়ি থামিয়ে তাঁরা সকলে গিয়েছিলেন ঝালমুড়ি কিনতে। তা কিনে গাড়ির কাছাকাছি আসার পর তাঁকে বলা হয় গুটখা কিনে আনতে। তা নিয়ে ফেরার পথে তিনি দেখতে পান গাড়ি ঘিরে গুলি চালাচ্ছেন ৩ জন। আকস্মিক এই ঘটনায় হতচকিত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। আততায়ীরা পালাতেই তিনি ছুটে যান গাড়ির দিকে। দেখতে পান রক্তে ভেসে যাচ্ছে রাজেশ ঝা ওরফে রাজুর দেহ। অভিযোগপত্রে খুনের সময়কার এমনটাই বর্ণনা দিয়েছেন গাড়িচালক শেখ নুর হোসেন। ওই গাড়িতে যে বীরভূমের ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফও ছিলেন তাও জানিয়েছেন নুর হোসেন। গাড়িচালক পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি লিখতে পারেন না। তবে নাম সই করতে পারেন। নুর হোসেনের বয়ান অনুযায়ী লেখা হয়েছে ওই অভিযোগপত্র।

শনিবার সন্ধ্যায় পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে জাতীয় সড়কের ধারে খুন হন দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী রাজু। জখম হন ব্রতীন মুখোপাধ্যায় নামে দুর্গাপুরেরই আর এক বাসিন্দা। তাঁদের গাড়িতে হামলা চালান আততায়ীরা। সেই গাড়ির চালক ছিলেন নুর হোসেন। এফআইআরে ঘটনার সময়কার বর্ণনা দিয়েছেন নুর হোসেন। বীরভূমের ইলামবাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফের গাড়ি চালান বলে নিয়েছেন তিনি। অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে, ‘‘শনিবার সকাল ৮টায় আব্দুল লতিফের বাড়িতে প্রতি দিনের মতো গাড়ি চালানোর জন্য যাই এবং দুপুর দেড়টা নাগাদ আমি ইলামবাজার থেকে আমার মালিক আব্দুল লতিফকে গাড়িতে চাপিয়ে দুর্গাপুরের দিকে রওনা দিই। যাওয়ার সময় দুর্গাপুরের ভিরিঙ্গি মোড় থেকে ব্রতীন মুখোপাধ্যায়কে মালিকের কথা মতো গাড়িতে চাপাই। এর পর আমি দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের ফরচুন হোটেলে দাঁড়াই। তখন আমার মালিক আব্দুল লতিফ এবং ব্রতীন মুখোপাধ্যায় নেমে যান। সেখানে ওই হোটেলের মালিক রাজু ঝা নামে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেই ব্যক্তির সঙ্গে মালিক আব্দুল লতিফ এবং ব্রতীন মুখোপাধ্যায় হোটেলের মধ্যে ঢুকে যান।’’

হোটেলে কী হয়েছিল তা অবশ্য বলতে পারেননি নুর হোসেন। তবে এফআইআরে লেখা হয়েছে, ‘‘সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টা ১০ নাগাদ আমার মালিক আব্দুল লতিফ, ব্রতীন মুখোপাধ্যায় এবং রাজু ঝা ৩ জনে গাড়িতে ওঠেন। আমি ওঁদের নিয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিই। শক্তিগড়ে ল্যাংচা বাজারে ওয়ান বাইট রেস্তরাঁর কাছে গেলে রাজু ঝার কথা মতো গাড়ি দাঁড় করাই। তখন সময় আনুমানিক ৭টা ৩৫ মিনিট। ওখানে রাজু ঝা বাদে বাকি সকলে নামি। ঝালমুড়ি কিনে সকলে গাড়িতে উঠে যাই। এর পর ব্রতীন মুখোপাধ্যায় আমাকে গুটখা কিনে আনতে বলেন। আমি গুটখা কিনে গাড়ির দিকে আসছিলাম। তখন দেখি যে, ৩ জন লোক আমার গাড়িতে গুলি করছে।’’

ওই দৃশ্য দেখে কিছু ক্ষণের জন্য হতচকিত হয়ে যান নুর হোসেন। এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। এর পর সেই সময়কার বর্ণনা অভিযোগপত্রে দিয়েছেন তিনি— ‘‘ওরা ৩ জন একটি নীল রঙের ব্যালেনো গাড়িতে চেপে পালিয়ে যায় কলকাতার দিকে। আমি গাড়িতে গিয়ে দেখি, পাশের সব কাচ ভেঙে গিয়েছে। এবং চালকের বাঁ দিকের আসনে বসে থাকা রাজু ঝা দরজার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। ওঁর শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। ব্রতীন মুখোপাধ্যায় গাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেন। তাঁর হাত থেকে রক্ত পড়ছিল।’’

রাজু হত্যাকাণ্ডে গাড়িচালক নুর হোসেনের থেকে প্রাথমিক ভাবে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। গোটা বিষয়টিই এখন তদন্তসাপেক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Supari Killer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE