আসানসোল পুরসভা।
কলকাতার গার্ডেনরিচ-কাণ্ডের পরে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে তোলপাড় রাজ্য থেকে জেলা। এরই মধ্যে এই অবৈধ নির্মাণ নিয়ে আসানসোল পুরসভা কর্তৃপক্ষকে কার্যত এক হাত নিলেন তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি রণবীর সিংহ ভারারা। তাঁর দাবি, তাঁর ওয়ার্ড, ৪১ নম্বর-সহ আসানসোল জুড়ে লাগামছাড়া ভাবে চলছে অবৈধ নির্মাণ। সতর্ক করে এই বেনিয়ম বন্ধ করার জন্য পুরকর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁর কথার কোনও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রণবীরের। শুধু টাকার খেলা চলছে বলে দাবি ওই পুরপ্রতিনিধির।
লোকসভা ভোটের মুখে শাসক দলের এক পুরপ্রতিনিধির এমন মন্তব্যে শুরু হয়েছে তরজা। দল অস্বস্তিতে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। মেয়র বিধান উপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “ঠিক কি অভিযোগ, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পশ্চিম বর্ধমান জেলায়ও অবৈধ নির্মাণ প্রসঙ্গে শাসক-বিরোধী তরজা শুরু হয়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়েছে পুর-নাগরিকদের মধ্যেও। এই অবস্থায় পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক ডেকে অবৈধ নির্মান চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র বিধান উপাধ্যায়। অবৈধ নির্মাণ নজরে এলে পুরকর্তৃপক্ষকে তিনি জানানোর পরামর্শও দিয়েছেন শহরবাসীকে। এই আবহে দলেরই পুরপ্রতিনিধির মন্তব্যে বিতর্ক আরও বেড়েছে।
রণবীর সিংহ ভারারা কার্যত বেআইনি নির্মাণের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার ওয়ার্ডে অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে, এতে কোনও সন্দেহ নেই।” তাঁর দাবি, “পুরকর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে গত দু’বছরে প্রায় ন’টি চিঠি লিখেছি। অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করার আবেদন করেছি। কোনও লাভ হয়নি।” রণবীর জানান, নির্মাণ তোলার আগে পুরসভা থেকে যে নীল নকশা অনুমোদন করা হয়, তা মূলত শহরবাসীর নিরাপত্তার কথা ভেবে তৈরি করা হয়। তাঁর অভিযোগ, অনুমোদিত নকশা লঙ্ঘন করেই হচ্ছে নির্মাণ কাজ। নর্দমা, জলাধার, সেফটি ট্যাঙ্কের উপরে মানুষজনের একাংশ নির্মাণ তুলছেন। তাঁর দাবি, “পুরসভার এক শ্রেণির অসাধু ইঞ্জিনায়র এই বেনিয়মের সঙ্গে জড়িত। মেয়র অনেক চেষ্টা করেও এই চক্রটির কিছু করতে পারছেন না! শুধু টাকার খেলা চলছে।”
এই প্রসঙ্গের সূত্রে বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অবৈধ নির্মাণের নেপথ্যে লেনদেন রয়েছে। বিষয়টি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে শাসক দলের প্রতিনিধিই বিরক্ত।” সিপিএমের রাজ্য সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, “অবৈধ নির্মাণ বন্ধ না হলে শহরবাসী বিপদে পড়বেন। তা প্রমাণ করেছে গার্ডেনরিচ। আসানসোলেও যে সেই অবস্থা হতে চলেছে, শাসক দলের প্রতিনিধি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।” অস্বস্তির যুক্তি মানতে নারাজ তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরেও রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy