বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।—ফাইল চিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশে রাজ্যের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ‘লাইফ লং লার্নিং’ বিভাগের অধিকর্তা হিসেবে ‘অধ্যাপক’ পদের শিক্ষকদের নিয়োগ করেছে। কিন্তু ইউজিসি-র নির্দেশ মানার কথা বলে শংসাপত্র দিলেও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই বিভাগের আধিকর্তা পদে অধ্যাপক নয়, বরং আধিকারিক নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে নানা মহলে।
২০০১-র ৭ জুলাই (রেজ়লিউশন নম্বর: ১৫) যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, ২০০৮-র ২৩ এপ্রিল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, ২০১০-র ১৫ মার্চ কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসি-র নিয়ম মেনে ওই বিভাগের দায়িত্ব অধ্যাপকের হাতেই দিয়েছে। তা হলে বর্ধমানে অন্যথা কেন? বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিমাই সাহার ব্যাখ্যা, “আইন ও নিয়ম মেনেই সব করা হচ্ছে। যে সব বিশ্ববিদ্যালয় লাইফ লং লার্নিংয়ের প্রধান হিসেবে অধ্যাপক নিয়োগ করার অনুমতি পেয়েছে, সেখানে তা হয়েছে। কিন্তু আমরা অধ্যাপক নিয়োগের জন্য এখনও কোনও অনুমতি পাইনি।’’
এমনকি, ২০০৬-র ২০ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অমিতকুমার মল্লিক ইউজিসি-র দশম পরিকল্পনা হুবহু মানা হবে বলে শংসাপত্র দিয়েছিলেন, খবর বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে। ওই পরিকল্পনার ৯.২ অনুচ্ছেদে ইউজিসি জানায়, ওই বিভাগের দায়িত্ব অধ্যাপকদের হাতেই তুলে দিতে হবে। ২০১৭-র ২৮ এপ্রিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজা উচ্চশিক্ষা দফতরের সচিবকে চিঠি দিয়ে জানান, ইউজিসি-র নিয়ম মানবে বলে ইতিমধ্যেই শংসাপত্র দিয়েছেন উপাচার্য। ২০০৫-র ৪ অক্টোবর কর্মসমিতির বৈঠকেও (রেজ়লিউশন নম্বর: ৯২) বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০১১-র ১৯ এপ্রিল কর্মসমিতির বৈঠকে (রেজ়লিউশন নম্বর: ৩৫০) ইউজিসি-র নির্দেশ মানতে বিশ্ববিদ্যালয় বাধ্য বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৫-র ২০ মার্চ ‘লাইফ লং লার্নিং’ বিভাগের তিন আধিকারিকের সই করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যাচ্ছে, অধিকর্তার পদটিকে অধ্যাপক পদে, সহকারী অধিকর্তাকে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ও প্রকল্প অধিকর্তার পদটিকে সহকারী অধ্যাপক পদে উন্নীত করা হয়েছে।
কিন্তু এর পরেও গোল বেধেছে বলে সংশ্লিষ্ট নানা মহলের মত। চলতি বছরের গত ১২ জুলাই ওই বিভাগে অধিকর্তা পদে নিয়োগের আবেদন চাওয়া হয়। সেখানে ওই বিভাগেরই দু’জন-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার জন আধিকারিক ইন্টারভিউতে ডাক পান। তাঁদের মধ্যে এক জন অনুপস্থিত ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত একাংশের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে, ওই চার জনের কারও শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা নেই। তা ছাড়া, ‘ইন্টারনাল কোয়ালিটি অ্যাসেসমেন্ট সেল’-কে বাদ দিয়ে কর্তৃপক্ষ নিজের মতো ‘স্ক্রিনিং কমিটি’ তৈরি করেছে বলেও অভিযোগ ওঠে।
তবে সামগ্রিক ভাবে এই বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার তোফাজ্জল হোসেনের দাবি, “আমরা উচ্চশিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় অনুমতি চেয়েছিলাম। তা মেলেনি বলেই পদটি এখনও অফিসার পদই রয়ে গিয়েছে। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়োগ নিয়ে কোথাও আপোস করেননি। জলঘোলা করতে চাইছেন কেউ কেউ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy