Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Durgapur Barrage

‘বাধা’ কাটিয়ে গেট মেরামত

পুলিশ জানিয়েছে, গেট মেরামতের জন্য বুধবার রাত ১০টা থেকে ভোর ৩টে পর্যন্ত ব্যারাজের উপরে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল।

জোরকদমে চলছে দুর্গাপুর ব্যারাজের ক্ষতিগ্রস্ত ৩১ নম্বর লকগেট মেরামতের কাজ। বুধবার। ছবি: বিকাশ মশান

জোরকদমে চলছে দুর্গাপুর ব্যারাজের ক্ষতিগ্রস্ত ৩১ নম্বর লকগেট মেরামতের কাজ। বুধবার। ছবি: বিকাশ মশান

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২০ ০২:৩২
Share: Save:

দীর্ঘ চেষ্টার পরে, মঙ্গলবার রাতে ক্ষতিগ্রস্ত ৩১ নম্বর লকগেট সারাইয়ের কাজ শুরু হলেও কিছুক্ষণ পরে তা থমকে যায়। ‘ভিলেন’ সেই জল। বিষয়টি নিয়ে ডিএসপি-র ঠিকা সংস্থা ও সেচ দফতরের মধ্যে চাপানউতোরও তৈরি হয়। তবে বুধবার সকাল থেকে বিকল্প আরও একটি বালির বাঁধ দিয়ে দুপুরে পুরোদমে শুরু হয় মেরামতের কাজ।

এ দিন সেচ দফতরের সচিব গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার মধ্যে মেরামতের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।’’ জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘আশা করি, বৃহস্পতিবার সকাল ৮-৯টায় ব্যারাজে জল চলে আসবে।’’

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ক্ষতিগ্রস্ত গেটের সামনে জলের প্রবাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব হয় এবং রাত ১০টা থেকে মেরামত শুরু হয়। নিয়ম অনুযায়ী, এর পরে অস্থায়ী বাঁধ ও গেটের মাঝে জমে থাকা জল বার করতে দু’টি পাম্প চালু করা হয়। পরিমাণ কমলেও জল পুরোপুরি তুলে ফেলা যাচ্ছিল না। বালির বাঁধের ভিতর দিয়ে ক্রমাগত চুঁইয়ে জল ঢুকতে থাকে ভিতরে। এর পরেই ডিএসপি-র ঠিকাদার শ্যামলেন্দু পালের ক্ষোভ, ‘‘চ্যানেল, অ্যাঙ্গেল, প্লেট-সহ অন্য সরঞ্জাম মঙ্গলবার রাতেই ক্ষতিগ্রস্ত গেটের যে দিকে জল নেই, সেখানে রাখা হয়। ৩০ জন কর্মী প্রস্তুত ছিলেন। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ সেচ দফতর জানায়, ঘণ্টা চারেকের মধ্যে জল বার করা যাবে। কিন্তু সেচ দফতর বাঁধ দিতে ব্যর্থ হয়। জল তোলার জন্য দশটি পাম্পের দরকার থাকলেও ওরা এনেছিল দু’টি পাম্প।’’ তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সেচ দফতরের সচিব গৌতমবাবু বলেন, ‘‘রাতে কাজ বন্ধ করতে হয়েছিল নিয়ম মেনেই। অস্থায়ী বাঁধের ‘লিকেজ’ সম্পূর্ণ বন্ধ করতে ১০-১২ ঘণ্টা লাগে। সে সময়ে সরঞ্জাম নামানোর কাজ হয়েছে।’’

সেচ-কর্তারা জানান, দীর্ঘক্ষণ পাম্প চালিয়েও জলের পরিমাণ খুব একটা না কমায় পাম্প বন্ধ করা হয়। সেচকর্তারা দেখেন, ৩১ নম্বর গেটের সামনের অংশে বালি জমায় সেখানে জলের গভীরতা মাত্র ফুট দু’য়েক। অস্থায়ী বাঁধটি ৩২ নম্বর গেটের বাঁ দিকে থাকা কংক্রিটের পাঁচিলের সঙ্গে ৩০ নম্বর গেটের ডান পাশে থাকা কংক্রিটের পাঁচিলকে জুড়ে দিয়েছে। এ বার ওই বাঁধের মাঝামাঝি অংশ থেকে ৩১ নম্বর গেট পর্যন্ত বালির বস্তা ফেলে ভরাট করার কাজ শুরু হয়। রাতেই বেশ কিছুটা কাজ হয়ে যায়।

বুধবার সকাল থেকে ফের শুরু হয় কাজ। পাম্প চালিয়ে জল তোলা, ধীরে ধীরে বালি ভরাটের কাজ এগোতে থাকে। ফলে, ৩১ নম্বর গেটের সামনে জমে থাকা জলের পরিমাণও কমতে থাকে। এক সময় গেটের সামনে থাকা বাঁধানো কংক্রিটের চাতাল বেরিয়ে পড়ে। ৩১ নম্বর গেটের সামনে থেকে জল পুরোপুরি সরে যায়। এই কাজ শেষ হয় বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ। সঙ্গে-সঙ্গে ব্যারাজের উপরে যান নিয়ন্ত্রণ করে উপর থেকে ঝালাই মেশিন-সহ অন্য সামগ্রী গেটের সামনের কংক্রিটের চাতালে নামানো হয়। ৩০ নম্বর গেটটি সামান্য তুলে দিয়ে সেটির তলা দিয়ে গেটের উল্টো দিকে রাতে নামিয়ে রাখা সরঞ্জাম ৩১ নম্বর গেটের সামনে আনা হয়। শুরু হয় কাজ।

পুলিশ জানিয়েছে, গেট মেরামতের জন্য বুধবার রাত ১০টা থেকে ভোর ৩টে পর্যন্ত ব্যারাজের উপরে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur Barrage repair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE