Advertisement
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
road construction

নতুন সেতু ও রাস্তায় আশা বিনিয়োগের

এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, বাঁশের সাঁকো দিয়ে অথবা গোড়ালি ভিজিয়ে নদী পারাপার করতে হত বাসিন্দাদের। বর্ষায় নদীতে জল বাড়লে এই রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যেত।

গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে নির্মাণ কাজ। নিজস্ব চিত্র

গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে নির্মাণ কাজ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:১৬
Share: Save:

শিল্প-পরিকাঠামোর উন্নয়ন এবং শহরকে যানজট মুক্ত করতে আসানসোলের একাংশে জিটি রোডের বিকল্প একটি রাস্তা এবং গাড়ুই নদীর উপরে নতুন একটি সেতু তৈরির কাজ শুরু করেছে পূর্ত দফতর। গত বুধবার হাওড়ার একটি প্রশাসনিক বৈঠকে এই কাজের শিলান্যাস করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত শুক্রবার সে কাজ শুরু হয়েছে। শিল্পোদ্যোগীরা এর ফলে শিল্পের নতুন সম্ভাবনা দেখছেন।

পূর্ত দফতর জানিয়েছে, ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের জিটি রোড সাতাশা মোড় থেকে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথবাটি পর্যন্ত চার কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা, মাঝে বয়ে চলা গাড়ুইয়ের উপরে সেতুটির জন্য প্রায় ৪১ কোটি টাকা খরচ হবে। দফতরের জেলার এগ্‌জ়িকিউটিভ ইঞ্জনিয়ার রূপেশ বারুইয়ের আশা, “এ বছরের শেষেই কাজ শেষ হয়ে রাস্তা ও সেতু চালু হবে বলে মনে করা হচ্ছে।”

এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, বাঁশের সাঁকো দিয়ে অথবা গোড়ালি ভিজিয়ে নদী পারাপার করতে হত বাসিন্দাদের। বর্ষায় নদীতে জল বাড়লে এই রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যেত। সে জন্য প্রায় তিন দশক ধরে বার বার নানা স্তরে রাস্তা ও সেতুর আবেদন করা হচ্ছিল। এলাকাবাসী রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের কাছেও এ বিষয়ে আর্জি জানিয়েছিলেন। মলয় বলেন, “দু’টি ওয়ার্ডের প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দা উপকৃত হবেন। শিল্প পরিকাঠামোর উন্নতি হবে।”

এই নির্মাণের ফলে কী কী সুবিধা? প্রশাসন সূত্রে দাবি, প্রথমত, সাতাশা মোড় থেকে ভগৎ সিংহ মোড় হয়ে সেন-র‌্যালে রোডের উপরে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলের চাপ প্রায় থাকবে না। ফলে যানজট মুক্ত হবে শহর। কারণ, এখন নিয়ামতপুর, কুলটি, বরাকর ও পুরুলিয়ার নানা প্রান্তে পণ্যবাহী ট্রাক যাতায়াত করতে হলে সেন-র‌্যালে রোড ধরে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে উঠতে হয়। নতুন রাস্তা, সেতু হয়ে গেলে ট্রাকগুলি জিটি রোডের সাতাশা মোড় থেকে বাঁ দিকে বাঁক নিয়ে সেতু পেরিয়ে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে উঠবে। দ্বিতীয়ত, সাতাশা, রঘুনাথবাটিতে প্রচুর খাসজমি রয়েছে। সেখানে বহু শিল্পোদ্যোগী জমি কিনেও রেখেছেন। এই রাস্তা ও সেতু তৈরি হওয়ার পরে শিল্পবান্ধব পরিকাঠামো তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর সাধারণ সম্পাদক শচীন্দ্রনাথ রায় ও সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতানেরা বলেন, “আমরা মন্ত্রী মলয় ঘটককে জানিয়েছিলাম, এই রাস্তা ও সেতু তৈরি হলে কম-বেশি চার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হতে পারে।” এলাকার সিমেন্ট ব্যবসায়ী পবন গুটগুটিয়া জানান, এলাকায় তাঁর একটি কারখানা আছে। আরও প্রায় ১৫ একর জমিতে একটি ক্ষুদ্র শিল্প গড়ার পরিকল্পনা আছে। কিন্তু পরিকাঠামো অনুন্নয়নের জন্য স্থগিত রেখেছিলেন। তিনি বলেন, “রাস্তা ও সেতু তৈরি হয়ে গেলে ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে।”

এলাকাবাসীও জানাচ্ছেন, এ বার জাতীয় সড়ক ধরতে আর আসানসোল শহরে ঢুকতে হবে না। প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা কম ঘুরতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE