বুদবুদে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র
ধান কেনার ক্ষেত্রে গলসি নিয়ে সমস্যা কাটল না। ধান কেনার দাবিতে প্রায় প্রতি বারই চাষিদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয় গলসিতে। গত বছর গলসি ২ ব্লকের ৪২টি চালকল ধান ভাঙানোর জন্য সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। এ বার এখনও পর্যন্ত চুক্তিবন্ধ হয়েছে মাত্র তিনটি চালকল। ফলে, ডিসেম্বরের গোড়া থেকে অন্য এলাকার মতো গলসিতেও চাষিদের কাছ থেকে পুরোদমে ধান কেনা যাবে কি না, সংশয়ে জেলা প্রশাসনের কর্তারাই।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানে খরিফ মরসুমে ধান উৎপাদন হয় প্রায় ২৯ লক্ষ টন। গলসি ১ ও ২ ব্লকে ভাল ফলন হওয়া সত্ত্বেও প্রতি বছর সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির সময়ে নানা কারণে ক্ষোভ তৈরি হয় চাষিদের মধ্যে। তার আঁচ পড়ে চালগুলগুলির উপরে। এ বার ধান কেনা শুরুর পরে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য গলসির দুই ব্লকের বিডিও, জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, চালকল মালিক ও চাষিদের প্রতিনিধিদের নিয়ে এ দিন বৈঠক করা হয়। গলসিতে চালকলগুলির চুক্তিবদ্ধ না হওয়া প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের (পূর্ব বর্ধমান) সভানেত্রী শম্পা ধাড়ার বক্তব্য, ‘‘হাতে মাত্র ক’দিন। এমন যদি চলে, ধান কেনা তো থমকে যাবে!’’ যদিও এক সপ্তাহের মধ্যে বেশিরভাগ চালকলই চুক্তিবন্ধ হয়ে যাবে বলে আশ্বাস জেলা চালকল মালিক সংগঠনের কার্যকারী সভাপতি আব্দুল মালেকের।
ডিসেম্বরের শুরু থেকেই সেন্ট্রাল প্রোকিয়োরমেন্ট (সিপিসি) এবং ডিরেক্ট পারচেজ সেন্টারের (ডিপিসি) মতো সমবায় এবং বিভিন্ন গোষ্ঠীকে মাঠে নামিয়ে চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান জেলা খাদ্য নিয়ামক আবির বালি। তিনি বলেন, ‘‘জেলার প্রতিটি ব্লকেই ধান কেনার জন্য ইতিমধ্যে একটি করে সিপিসি খোলা হয়েছে। ২ ডিসেম্বর জেলার বেশ কিছু ব্লকে আরও একটি করে সিপিসি খোলা হবে। এ ছাড়া, প্রতিটি পঞ্চায়েতে একটি বা দু’টি করে সমবায় ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে সে দিন থেকেই ধান কেনার পরিকল্পনা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, সমবায় ও গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে প্রতি বছরই ধান কেনা হয়। কিন্তু সেগুলির মাঠে নামতে অনেক দেরি হয়। এ বার ২ ডিসেম্বর থেকেই তা চালু করতে চাওয়া হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক জন চাষি সর্বোচ্চ ৯০ কুইন্টাল ধান বিক্রি করতে পারবেন। সেই ধান কয়েকটি ধাপে চাষিকে বিক্রি করতে হতে পারে। তা ব্লক স্তরের কমিটি ঠিক করবে। পুরনো নথিভুক্ত চাষিদের আর নতুন করে নথিভুক্ত হতে হবে না। শুধু তা-ই নয়, ‘সিপিসি’, ‘ডিপিসি’ বা সমবায়, যেখানেই নাম নথিভুক্ত থাকুক না কেন, চাষি চাইলে যে কোনও কেন্দ্রে গিয়ে ধান বিক্রি করতে পারবেন।
জেলাশাসক এনাউর রহমান বলেন, ‘‘নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আশা করি ধান কেনার সময়ে কোনও সমস্যা হবে না।’’ জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখ্যোপাধ্যায় প্রতিটি শিবিরে পুলিশের পাহারার আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy