নিরাপত্তারক্ষীদের উপর একের পর এক হামলায় চিন্তিত বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।—ফাইল চিত্র।
ঘটনা ১, শীতের রাতে হাসপাতালের রাধারাণি ব্লকের মহিলা ওয়ার্ডে ঢোকার চেষ্টা করেন হাসপাতালেরই এক কর্মীর পরিচিত। নিরাপত্তাকর্মীরা আটকালে মারধর শুরু হয়। জখম হন এক জন।
ঘটনা ২, মে মাসে শিশু ওয়ার্ডে ঢুকতে কয়েকজনকে বাধা দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। নিজেদের বর্ধমান পুরসভার কাউন্সিলর পরিচয় দিয়ে নিরাপত্তারক্ষীর উপর হামলা চালান তাঁরা। তিন জন জখম হন। পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে।
ঘটনা ৩, রবিবার দুপুর। রোগী দেখার সময় শেষের পরেও শিশু ওয়ার্ডেই ছিলেন পরিজনেরা। তাঁদের ওয়ার্ড ছাড়তে বলায় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বচসা থেকে হাতাহাতি বাধে। রবিবারই রোগীর পরিজনেরা বর্ধমান থানায় ডায়েরি করেন। সোমবার নিরাপত্তারক্ষীরা হাসপাতাল সুপার উৎপল দাঁয়ের কাছে অভিযোগ করলেন। একটি কমিটি গড়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাসপাতাল সুপার।
নিরাপত্তারক্ষীদের উপর একের পর এক হামলায় চিন্তিত বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, বেশির ভাগ সময়ে ‘ভিজিটিং আওয়ার্স’ পেরিয়ে যাওয়ার পরেও রোগীর পরিজনেরা শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে ঢুকতে যান কিংবা সেখান থেকে বেরতে দেরি করেন। নিরাপত্তারক্ষীরা নির্দিষ্ট সময়ের পরে ঢুকতে না দিলে কিংবা বের হতে বললেই গোলমাল বাধে। নিয়ম মানতে বাধ্য করলে হামলাও হয়। সেই হামলা আটকাতে গিয়ে রক্ষীরাও মারপিটে জড়িয়ে পড়েন। রবিবার দুপুরেও তেমনই ঘটনা ঘটে।
এ দিন মন্তেশ্বরের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক পীযূষ মজুমদার তাঁর এক পরিচিত দম্পতির শিশু পুত্রকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী, ‘ভিজিটিং আওয়ার্স’ বেলা ১১টা থেকে ১২টা। দুপুর একটা পেরিয়ে গেলেও তাঁরা নীচে নামছে না দেখে নিরাপত্তারক্ষীরা ওয়ার্ড থেকে বেরোতে বলেন তাঁদের। বচসা থেকে হাতাহাতি হয় বলে অভিযোগ। হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, “প্রভাবশালীরাই এ ধরণের গণ্ডগোল পাকাচ্ছে হাসপাতালের ভিতর। অহেতুক এ রকম ঘটনা ঘটলে আমরা কী করতে পারি!”
নিরাপত্তারক্ষীদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তা নিমাই সামন্ত বলেন, “আমরা সবাই প্রাক্তন সেনাকর্মী। নিয়মনীতি মেনে নিরাপত্তার কাজ করি। আমরা অহেতুক রোগীর পরিজনদের সঙ্গে গোলমাল পাকাব কেন? সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে দেখা যাবে রোগীর পরিজনেরাই আমাদের উপর হামলা চালিয়েছেন।” রবিবার দুপুরে ওই ঘটনার পর বেশ কয়েক ঘন্টা স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। চিকিৎসক ও নার্সরাও সোমবার সুপারকে জানান, ওই রোগীর পরিজনেরা ওয়ার্ডের ভিতর কার্যত ‘হট্টগোল’ শুরু করে দিয়েছিলেন।
হাসপাতাল সুপার উৎপল দাঁ বলেন, “মানুষকে সচেতন হতে হবে। হাসপাতালের নিয়ম মানতে হবে। না হলে এ ধরণের ঘটনা আটকানো খুবই কঠিন।” তিনি মনে করেন, “নিরাপত্তারক্ষী আরও বাড়ানো গেলে অবাঞ্ছিত ঘটনা এড়ানো যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy