E-Paper

যন্ত্রপাতি নিয়ে উধাও ঠিকা সংস্থা, রাতারাতি বেকার খনি-শ্রমিকেরা

ইসিএল সূত্রে জানা যায়, বছর তিনেক আগে মোহনপুর খোলামুখ খনি থেকে কয়লা উত্তোলন করার জন্য ওই বেসরকারি সংস্থাকে ঠিকা দেওয়া হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪ ০৮:৪৯
সালানপুরের মোহনপুর কোলিয়ারিতে কাজ বন্ধ। অপেক্ষায় শ্রমিকেরা।

সালানপুরের মোহনপুর কোলিয়ারিতে কাজ বন্ধ। অপেক্ষায় শ্রমিকেরা। ছবি: পাপন চৌধুরী।

শ্রমিকদের বেতন বকেয়া। এই অবস্থায় খনির কাজ বন্ধ করে রাতারাতি উধাও হয়ে গেল একটি বেসরকারি কয়লা উত্তোলক সংস্থা। এমন আশ্চর্যজনক ঘটনাটি ঘটেছে ইসিএলের সালানপুর এরিয়ার মোহনপুর কোলিয়ারিতে। শনিবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হতেই শ্রমিকদের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়। ইসিএল কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভও দেখান শ্রমিকেরা। কেন ওই সংস্থাটি চলে গেল, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি ইসিএল।

ইসিএল সূত্রে জানা যায়, বছর তিনেক আগে মোহনপুর খোলামুখ খনি থেকে কয়লা উত্তোলন করার জন্য ওই বেসরকারি সংস্থাকে ঠিকা দেওয়া হয়। সংস্থাটি এত দিন কয়লা উত্তোলন করছিল। ইসিএলের দাবি, প্রায় চারশো ঠিকা শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছিল। ওই শ্রমিকেরা জানান, শনিবার সকালে তাঁরা এসে দেখেন খনি চত্বরে থাকা ঠিকা সংস্থার অস্থায়ী কার্যালয় তালাবন্ধ। সংস্থার স্থায়ী শ্রমিক-কর্মীরা কেউ নেই। কয়লা কাটার যন্ত্রপাতি, গাড়ি কিছুই নেই। খনি চত্বর একেবারে শুনশান। তাঁরা ঠিকা সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারেননি। তখন তাঁদের সন্দেহ হয়, কাজ বন্ধ করে রাতারাতি উধাও হয়ে গিয়েছে সংস্থাটি। এর পরেই শ্রমিকেরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এই খনিতে কর্তব্যরত গৌতম কর্মকার, জগন্নাথ রায়রা বলেন, “প্রায় তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। সেই টাকা না দিয়েই পালিয়ে গিয়েছে সংস্থাটি। সংসার, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ কী ভাবে জোগাড় করব বুঝতে পারছি না।” তাঁরা জানান, রাতারাতি এ ভাবে বেকার হয়ে যেতে হবে, তা কল্পনাও করেননি। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে নতুন সংস্থা নিয়োগ করে খনি চালুর ব্যবস্থা করুক ইসিএল।

শনিবার বিক্ষোভ শুরু হতেই বিষয়টি জানতে পারেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের একটি দল খনি চত্বরে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করেন। কেন এমনটা হল সালানপুর এরিয়ার জিএম ওয়াইপিকে সিংহ-কে বার বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি। ইসিএলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক পিনাকী চট্টরাজ বলেন, “কোলিয়ারির তরফে এ বিষয়ে বিশদে কিছু জানা যায়নি।” তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক জানান, কিছুদিন ধরে সংস্থায় কর্মরত শ্রমিকদের একাংশ ও স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে ওই সংস্থাটির মনোমালিন্য চলছিল। এর জেরে কয়লা উত্তোলন প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটেছিল। তাঁর অনুমান, সম্ভবত এর জেরে কাজের পরিবেশের অবনতি হওয়ায় রাতারাতি কাজ বন্ধ করে উধাও হয়ে গিয়েছে সংস্থাটি।

শ্রমিকেরা জানান, বকেয়া মেটানোর বিষয়ে ইসিএল কর্তৃপক্ষের তরফে ইতিবাচক আশ্বাস পাওয়ায় বিক্ষোভ থামালেও, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তা না পেলে আন্দোলন তীব্র হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিকেরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Asansol

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy