Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সন্দেহের বশে মদের ঠেকে হানা, দাঁইহাটে এসআই-কে বেধড়ক মার

মদের আসরে সন্দেহের বশে হানা দিতে গিয়ে মার খেলেন এক সাব-ইনস্পেক্টর (এসআই)। মারধর করা হল তিন কনস্টেবলকেও। রবিবার রাতে পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাটের ওই ঘটনায় খুনের মতলবে কর্তব্যরত সরকারি কর্মীদের মারধরের মামলা হয়েছে।

আক্রান্ত: পুলিশকর্মী কৃষ্ণসখা বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র।

আক্রান্ত: পুলিশকর্মী কৃষ্ণসখা বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দাঁইহাট শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৭ ০১:০৫
Share: Save:

মদের আসরে সন্দেহের বশে হানা দিতে গিয়ে মার খেলেন এক সাব-ইনস্পেক্টর (এসআই)। মারধর করা হল তিন কনস্টেবলকেও। রবিবার রাতে পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাটের ওই ঘটনায় খুনের মতলবে কর্তব্যরত সরকারি কর্মীদের মারধরের মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত ৫০ জন। ধৃত আপাতত ১৩। তবে মূল অভিযুক্ত, দাঁইহাটের ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মাধবী রাজোয়াড়ের স্বামী মৃত্যু়ঞ্জয় রাজোয়াড় এখনও পলাতক।

আহত এসআই কৃষ্ণসখা বিশ্বাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জেলার পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ মিললে কাউন্সিলরের স্বামী ছাড় পাবেন না।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তিন কনস্টেবল— সুদিন সাহা, তপন নায়েক ও অভিজিৎ হাজরাকে নিয়ে দাঁইহাটের রাজোয়াড়পাড়া দিয়ে যাচ্ছিলেন বছর আটচল্লিশের কৃষ্ণসখা বাবু। তখনই পাঁচ-ছ’জনকে ভাগীরথীর বাঁধের পাশের মাঠে বসে মদ্যপান করতে দেখে সন্দেহের বশে সে দিকে এগিয়ে যান তিনি। দাঁইহাটের মাটিয়ারি ঘাট থেকে অগ্রদ্বীপের সাহাপুর পর্যন্ত ওই মাঠ ছড়ানো। কৃষ্ণসখাবাবুর কথায়, ‘‘আমাদের দেখে ওরা পালাতে থাকে। পরে যখন মাঠ থেকে বাঁধের দিকে ফিরছি, তখন লোকজন জুটিয়ে ওরা এসে চড়াও হয়। আমার মাথায় বাঁশের বাড়ি মারা হয়।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এসআইকে বাঁচাতে গিয়ে এলোপাথাড়ি মারধরের মুখে পড়ে পিছু হটেন অন্য পুলিশকর্মীরা। হামলাকারীরা এলাকা ছাড়লে উদ্ধার করা হয় কৃষ্ণসখাবাবুকে। কনস্টেবল সুদিন সাহা পরে ৫০ জনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাদান, খুনের জন্য মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সোমবার মৃত্যুঞ্জয়ের ভাইপো সৌরভ রাজোয়াড় ও কয়েকজন আত্মীয়কে গ্রেফতার করে। সোমবার কাটোয়া আদালত ধৃতদের মধ্যে দু’জনকে চার দিন পুলিশ হেফাজতে এবং বাকিদের জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।

রাজোয়াড়পাড়ায় মাধবীদেবীর বাড়িতে এ দিন গিয়ে দেখা যায়, তালা ঝুলছে। তাঁর আত্মীয়া শম্পা রাজোয়াড়ের অভিযোগ, ‘‘রবিবার গভীর রাতে পুলিশ এসে কাকুর (মৃত্যুঞ্জয়ের) খোঁজ করছিল। তখন ওরা কাকিমার কাপড় ধরে টানাহেঁচড়া করে।’’ একই অভিযোগ মাধবীদেবীর। মোবাইলে তিনি দাবি করেন, ‘‘পুলিশ বিনা কারণে আমায় হেনস্থা করেছে। এক অসুস্থ পরিচিতকে দেখতে রবিবার সন্ধ্যায় কাটোয়ায় গিয়েছিলেন স্বামী। ঘটনার সময়ে উনি সেখানে ছিলেন। উনি হামলায় জড়িত নন।’’ কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘হামলার সময় মৃত্যুঞ্জয় ছিলেন না। তবে দোষীদের শাস্তি চাই।’’ মাধবীদেবীকে নিগ্রহের অভিযোগ মানেনি পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Alcohol Sub Inspector Drunk Beaten
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE