Advertisement
E-Paper

‘কড়া নজরে’ কিছু নেতা

‘গদ্দার খুঁজছে’ তৃণমূল, বলছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২১ ০৫:৩৫
এই হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে এমনই নানা বার্তা ছড়িয়েছে। নিজস্ব চিত্র।

এই হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে এমনই নানা বার্তা ছড়িয়েছে। নিজস্ব চিত্র।

কিছুক্ষণ আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ২ মিনিটে ‘দুর্গাপুর-ফরিদপুর টিএমসি’ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একজন লিখলেন, ‘অ্যাডমিনকে বলব, গ্রুপ থেকে গদ্দারগুলোকে বার করতে।’ কিছুক্ষণের মধ্যেই বার করে দেওয়া হল এলাকার বিধায়ক জিতেন্দ্রবাবুকে। তাঁর চার-পাঁচ জন অনুগামীকেও একে-একে বার করে দেওয়া হল। এমনই একটি ‘স্ক্রিনশট’ বুধবার ছড়িয়েছে (সত্যাসত্য যাচাই করেনি আনন্দবাজার)। পাশাপাশি, দুর্গাপুরে জিতেন্দ্রবাবুর ঘনিষ্ঠ বলে যাঁরা দলের অন্দরে পরিচিত ছিলেন, তাঁরাও ‘কড়া নজরে’ থাকছেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। অর্থাৎ এক কথায় ‘গদ্দার খুঁজছে’ তৃণমূল, বলছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

তৃণমূলের ওই সূত্রটির মতে, বিশেষ নজরে রয়েছেন, দুর্গাপুর পুরসভার এক মেয়র পারিষদ, দু’জন কাউন্সিলর। ওই কাউন্সিলরদের একজন আবার দলীয় পদেও রয়েছেন। এ ছাড়া, এই তালিকায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম নাম, তৃণমূলের দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (খাদ্য সরবরাহ) সুজিত মুখোপাধ্যায়। তবে বুধবার তিনি বলেছেন, ‘‘দল ছেড়ে এবং তার পরে ফিরে এসেও জিতেন্দ্রবাবু যে গদ্দারি করবেন, এটা জানতাম না।’’

কিন্তু সুজিতবাবুকে নিয়ে কেন এত কথা? তৃণমূলের ওই বিশেষ সূত্রটির মতে, এর কারণ জিতেন্দ্রবাবু ও সুজিতবাবুর সম্পর্ক। প্রথমত, দলে প্রত্যাবর্তনের পরেও তৃণমূলের বহু নেতা-কর্মীদের সঙ্গে জিতেন্দ্রবাবুর একটা দূরত্ব তৈরি হয় বলে দাবি। কিন্তু সেই সময়ে এলাকায় দলীয় কর্মসূচিতে জিতেন্দ্রবাবুর পাশেই দেখা যায় সুজিতবাবুকে। দ্বিতীয়ত, সুজিতবাবু লাউদোহা ফুটবল ময়দানে এক কর্মী সম্মেলনে দাবি করেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস থেকে ফোন করে তাঁর কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়, জিতেন্দ্রবাবুকে ফের দলীয় প্রার্থী করা হলে, তিনি কি দায়িত্ব পালন করবেন। সুজিতবাবুর আরও দাবি ছিল, জিতেন্দ্রবাবু বিধায়ক হলে তিনি মন্ত্রীও হবেন, এমন কথাও তাঁকে ওই ফোনে বলা হয়।

যদিও এ সব কথাকে আমল দিচ্ছেন না খোদ সুজিতবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘১৯৯৮ থেকে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক। জিতেন্দ্রবাবুর সঙ্গে পরিচয় ২০১৬-য়। এই ব্লক থেকে তৃণমূল প্রার্থীকে ভোটে অন্তত কুড়ি হাজার ভোটে লিড দেওয়ানোর চ্যালেঞ্জ নিচ্ছি আমরা।’’ পাশাপাশি, তাঁর অনুগামীরা এ-ও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মঙ্গলবারই পাণ্ডবেশ্বরের বাঁকোলায় ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে বৈঠকও করেছেন সুজিতবাবু।

তবে, তার পরেও এমন ‘কড়া নজর’-এর জল্পনা কেন তৈরি হচ্ছে? কী ভাবেই বা এই নজর রাখা হচ্ছে? এক তৃণমূল নেতার ব্যাখ্যা, সাবধানের মার নেই। নেপথ্যে থেকে দলীয় সংগঠনে যাতে কেউ ক্ষতি না করতে পারেন, সে জন্যই এ ব্যবস্থা। ওই নেতা জানান, মূলত, সংশ্লিষ্ট নেতাদের গতিবিধি, তাঁদের কী রকম কাজকর্ম প্রকাশ্যে আসছে, বিশেষত, জিতেন্দ্রবাবু বৃহস্পতি বা শুক্রবার জেলায় ফেরার পরে তাঁদের গতিবিধি কী হয়— এ সব দিকেই ‘নজর’ রাখা হচ্ছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘দল পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে। কেউ যদি পিছন থেকে দলকে ছুরি মারার চেষ্টা করে থাকে দল তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে।’’

BJP TMC West Bengal Assembly Election 2021
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy