Advertisement
২২ মে ২০২৪

এমএএমসি নিয়ে রিপোর্ট তলব রাজ্যের

বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এমএএমসি খোলার ব্যাপারে সর্বশেষ কী পরিস্থিতি, সে ব্যাপারে খোঁজখবর শুরু করল রাজ্যের শিল্প দফতর। সম্প্রতি ওই দফতর থেকে বর্ধমানের জেলাশাসককে অবিলম্বে এ ব্যাপারে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৭ ০২:২০
Share: Save:

বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এমএএমসি খোলার ব্যাপারে সর্বশেষ কী পরিস্থিতি, সে ব্যাপারে খোঁজখবর শুরু করল রাজ্যের শিল্প দফতর। সম্প্রতি ওই দফতর থেকে বর্ধমানের জেলাশাসককে অবিলম্বে এ ব্যাপারে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন জানান, দুর্গাপুরের মহকুমাশাসককে রিপোর্ট তৈরি করে তা সরাসরি শিল্প দফতরে পাঠাতে বলা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের ভারী শিল্প মন্ত্রকের অধীনে ১৯৬৫ সালের এপ্রিলে দুর্গাপুরে চালু হয় এমএএমসি। মূলত খনির কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি তৈরি হতো। ১৯৯২ সালে কারখানাটি ‘বোর্ড ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল রিকনস্ট্রাকশন’ (বিআইএফআর)-এর অধীনে চলে যায়। ২০০২-এর ৩ জানুয়ারি পাকাপাকি ভাবে কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। সেটি ফের চালু করতে চেয়ে ২০০৭ সালের ১ জুন তিন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিইএমএল, কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড (সিআইএল) এবং ডিভিসি যথাক্রমে ৪৮ শতাংশ, ২৬ শতাংশ ও ২৬ শতাংশ হারে অংশীদারিত্বে কনসর্টিয়াম গড়ার জন্য ‘মউ’ চুক্তি করে। কলকাতা হাইকোর্টে নিলামে সর্বোচ্চ একশো কোটি টাকা দর দিয়ে ২০১১ সালে এমএএমসি-র দায়িত্ব পায় কনসর্টিয়াম।

কারখানার নতুন নাম হয় এমএএমসি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (এমএএমসিআইএল)। উৎপাদনের দায়িত্বে বিইএমএল, উৎপাদিত খনি যন্ত্রাংশের ক্রেতা সিআইএল এবং সিআইএলের উত্তোলিত কয়লার ক্রেতা ডিভিসি। এ ভাবেই এমএএমসি চালুর পরিকল্পনা রয়েছে কনসর্টিয়ামের। ছ’বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তিন সংস্থা মিলে একটি টাস্ক ফোর্সও গড়েছে। কিন্তু কারখানা খোলার কোনও উদ্যোগ নজরে আসেনি বলে অভিযোগ।

দুর্গাপুরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে এমএএমসি খোলার ব্যাপারে তদ্বির করার আর্জি জানান। ৩ ফেব্রুয়ারি শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের তরফে সহকারী সচিবের অফিস থেকে সেই চিঠির উল্লেখ করে জেলাশাসককে কারখানার সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে দ্রুত রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। ১ মার্চ জেলাশাসক মহকুমাশাসককে চিঠি দিয়ে সেই রিপোর্ট সরাসরি শিল্প ও বাণিজ্য দফতরে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

সিটুর জেলা সভাপতি বিনয়েন্দ্রকিশোর চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘কারখানা খোলার ব্যাপারে কেন্দ্র ও রাজ্য, কোনও পক্ষই উদ্যোগী হয়নি। পুরভোট শিয়রে। তাই হয়তো হঠাৎ এমএএমসি-র কথা মনে পড়েছে।’’ তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘রাজ্য উদ্যোগী হয়েছে, তাই রিপোর্ট চেয়েছে। প্রক্রিয়া চলছেই। এর সঙ্গে পুরভোটেরও কোনও সম্পর্ক নেই।’’ কারখানার আইএনটিইউসি নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দ্রুত এমএএমসি খোলার জন্য আমরা যে কোনও ধরনের সহযোগিতা করতে রাজি। ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে কনসর্টিয়ামের তিন সংস্থা ও তাদের মন্ত্রকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

MAMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE