সংস্কারের পরে এসটিকেকে রোড। নিজস্ব চিত্র।
মহকুমা জুড়ে থাকা ৫৫ কিলোমিটার লম্বা এসটিকেকে রোড সম্প্রসারণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। চওড়া, ঝাঁ চকচকে রাস্তায় ছুটতে শুরু করেছে যানবাহন। ভাল রাস্তায় গাড়ির গতি বাড়ায় দুর্ঘটনাও বাড়ছে, দাবি এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, সন্ধ্যার পর থেকেই গতি বাড়ে গাড়ির, প্রায়ই দুর্ঘটনাও ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কুড়ি দিনের মধ্যে একাধিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ জন। জখম আরও অনেকে। জনবহুল এলাকায় গাড়ি গতিবেগ আতঙ্ক বাড়াচ্ছে বলেও দাবি করেছেন এলাকাবাসী। বুধবার সন্ধ্যায় পূর্বস্থলীর মাগনপুর এলাকায় ওই রাস্তায় একটি মোটরবাইকের সঙ্গে ডাম্পারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় দুই মোটরবাইক আরোহী বিধান দাস (৪০) এবং সমীর মাহাতোকে (৩৫) প্রথমে শ্রীরামপুর গ্রামীণ হাসপাতাল, পরে, অবস্থার অবনতি হলে নবদ্বীপের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই মারা যান হৃষি এলাকার দুই যুবক।
২৬ জুন রাতেও কালনার নসিপুর গ্রামের চার পরিযায়ী শ্রমিক কর্মস্থল, গুজরাতে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে বর্ধমানে ট্রেন ধরতে যাচ্ছিলেন। কালনা মহকুমা হাসপাতালের কাছে তাঁদের গাড়ির সঙ্গে একটি তেলের ট্যাঙ্কারের মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। ওই চার জন এবং গাড়ির চালক গুরুতর আহত হন। পরের দিন, কালনার মালোপাড়া এলাকায় দুই মোটরবাইক আরোহীর সঙ্গে একটি ট্রাকের ধাক্কায় ওই রাস্তায় প্রাণ হারান হুগলির আইদা গ্রামের সেলিম শেখ এবং জামাত আলি শেখ নামে দুই যুবক।
তার আগে ১৯ জুন সমুদ্রগড়ের নিচু চাপাহাটি গ্রামের বিশ্বজিৎ বিশ্বাস নামে বছর বাইশের এই যুবক কাছাকাছি এলাকায় তাঁতযন্ত্র বসানোর কাজে গিয়েছিলেন। গৌরাঙ্গপাড়ার কাছে, তাঁর মোটরবাইক উল্টো দিক থেকে আসা মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। ছিটকে পড়েন বিশ্বজিৎবাবু। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এই রাস্তার গুপিপাড়া এবং জামতলা এলাকার মাঝামাঝি এলাকাতেও দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন এক মোটরবাইক আরোহী। এই সপ্তাহে এসটিকেকে রোডের কৃষ্ণদেবপুর এলাকায় গভীর রাতে একটি মোটরবাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে বিদ্যুতের খুঁটিতে। ওই যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ হাসপাতালে পাঠায়।
এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটছে রাতে। চওড়া রাস্তা পেয়ে বেশ কিছু গাড়ি চালক দ্রুত বেগে গাড়ি ছোটাচ্ছেন। অনেকে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ। এর সঙ্গেই রাস্তার সর্বত্র আলোর ব্যবস্থা না থাকার কারণেও দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ। কালনার এক বাসিন্দা প্রণব ঘোষ বলেন, ‘‘রাস্তা চওড়া হওয়ার পর থেকে গাড়ি প্রচুর বেড়ে গিয়েছে। জনবহুল এলাকায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে, দুর্ঘটনা বাড়বে।’’ রাতে ট্রাফিক পুলিশের নজরদারিও দুর্বল বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগের আশ্বাস, জনবহুল এলাকায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। রাস্তার বেশ কিছু জায়গায় আলো লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাসের দাবি, দুর্ঘটনা কমাতে সচেতনেতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে। পূর্বস্থলী, কালনার রাস্তাতে নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy