Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কুকুর-ছাগলের পাশেই চলে মিড-ডে মিলের খাওয়া

মঙ্গলবার ওই স্কুলের ৩১৩ জন পড়ুয়াকে ‘সবুজসাথী’র সাইকেল বিলির সময় পরিবহণ খরচের জন্য পড়ুয়া পিছু ৪০ টাকা করে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তার জেরে প্রধান শিক্ষক সুনীলকুমার হাজরাকেও ‘শো-কজ’ করে প্রশাসন।

অনিয়ম: খাচ্ছে পড়ুয়ারা, পাশেই ঘুরছে কুকুর-ছাগল। নিজস্ব চিত্র

অনিয়ম: খাচ্ছে পড়ুয়ারা, পাশেই ঘুরছে কুকুর-ছাগল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামালপুর শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৭ ০১:১৫
Share: Save:

ফের বিতর্কের মুখে পড়ল জামালপুরের চক্ষণজাদি গোলাম মহম্মদ ইনস্টিটিউশন। এ বার দেখা গেল, কুকুর-ছাগলের সঙ্গে মিড-ডে মিল খাচ্ছে স্কুলের পড়ুয়াদের একাংশ। যা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন অভিভাবক থেকে প্রশাসনের কর্তারা।

মঙ্গলবার ওই স্কুলের ৩১৩ জন পড়ুয়াকে ‘সবুজসাথী’র সাইকেল বিলির সময় পরিবহণ খরচের জন্য পড়ুয়া পিছু ৪০ টাকা করে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তার জেরে প্রধান শিক্ষক সুনীলকুমার হাজরাকেও ‘শো-কজ’ করে প্রশাসন। তার জবাবে প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, ‘তাঁর অজ্ঞানতায়’ টাকা নেওয়া হয়ে গিয়েছে। তিনি ওই টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এ বিষয়ে জামালপুর বিডিও অফিস থেকে একটি দল স্কুলে যায় বৃহস্পতিবার। সেখান থেকে ফিরে ওই দলটি স্কুলের মিড-ডে মিল পরিচালনা নিয়ে বিডিও-র কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।

ওই দলের রিপোর্ট অনুযায়ী, স্কুলের বারান্দায় পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল খাওয়ার সময়ে কুকুর-ছাগল ঘুরে বেড়ানোর কথা বলা হয়েছে। খাওয়ারও নির্দিষ্ট জায়গা নেই। সে জন্য পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ স্কুলের সামনের মাঠে থালা নিয়ে খেতে বসে যায়। তখন পড়ুয়াদের কুকুর-ছাগলরা ঘিরে ধরে। পড়ুয়া সুকান্ত বাগ, নূরেন্না খাতুনদের কথায়, “আমরা তো এ ভাবেই মিড-ডে মিল খাই। ক্লাসঘরে বসে খেলে শিক্ষকরা বকাবকি করেন।” বেশ কিছু পড়ুয়া জানান, অনেক সময় খাবারে থালায় কুকুর-ছাগলে মুখও দিয়ে দেয়। অভিভাবক নূর আলি চৌধুরী, মাখন মালিকদের কথায়, “ওই দৃশ্য আমরা দীর্ঘ দিন ধরে দেখে আসছি। ঘরে বসিয়ে খাওয়ানোর জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেছি। আমাদের কথা কেউ শোনে না।”

প্রশাসনের কাছে ঘটনার কথা শুনেছেন জামালপুরের বিএমওএইচ আনন্দমোহন গড়াই। তিনি বলেন, “ওই স্কুলে ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। আর পড়ুয়ারা ওই ভাবে খেলে প্রথমত তাদের উপরে মানসিক প্রভাব পড়বে, দ্বিতীয়ত পেটের রোগ ও ভাইরাস-জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়বে। দ্রুত ওই স্কুলে বিশেষ শিবির করব।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীলবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘পাঁচটা ঘরে খাওয়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। কোনও কারণে ছাত্ররা হয়তো বাইরে গিয়েছিল। সেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কেউ ছবি তুলেছেন।’’ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে নারাজ। জেলার দায়িত্বে থাকা মিড-ডে মিলের ওসি কৌশিক পাল বলেন, “রান্নাঘরের সামনের বারান্দায় বা কোনও ঘরে মিড-ডে মিল খাওয়ানোর নিয়ম। এ ভাবে খোলা জায়গাতে খাওয়ানো যায় না।” অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রবীর চট্টোপাধ্যায় জানান, বিডিও-র কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE