Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ছাত্রছাত্রীদের দেখভালেই পাল্টে গিয়েছে স্কুল

পঠনপাঠনের পাশাপাশি ‘কিচেন গার্ডেন’ থেকে ফুলের বাগান, সবই দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে পড়ুয়ারা।

দোমড়া প্রাথমিক স্কুলের ‘কিচেন গার্ডেনে’। নিজস্ব চিত্র

দোমড়া প্রাথমিক স্কুলের ‘কিচেন গার্ডেনে’। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৪১
Share: Save:

স্কুলের অধিকাংশ পড়ুয়া তফসিল জাতি-জনজাতির। পঠনপাঠনের পাশাপাশি ‘কিচেন গার্ডেন’ থেকে ফুলের বাগান, সবই দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে তারাই। এ বার জেলার ‘শিশুমিত্র’ পুরস্কার পেয়েছে কাঁকসার সেই দোমড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, এই কৃতিত্ব সম্পূর্ণ পড়ুয়াদের।

স্কুলটির সরকারি অনুমোদন মেলে ১৯৬৩ সালের ১ জুলাই। এখন পড়ুয়ার সংখ্যা ১৪০ জন। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন হয়। শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন তিন জন। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিনের পুরনো হলেও বেশ কিছু সমস্যা ছিল স্কুলটিতে। তার অন্যতম সীমানা পাঁচিল না থাকা। ফলে, স্কুল চত্বরে গাছ লাগাতে সমস্যায় পড়তে হত। ২০১৭ সালে পাঁচিল তৈরির পরে পরিকাঠামোয় পাল্টে যায়। স্কুলটি সাজিয়ে তুলতে শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়ারা।

২০১৮ সালে স্কুলটি ‘নির্মল বিদ্যালয়’ পুরস্কার পায়। এ বার জেলার সেরা দু’টি স্কুলের অন্যতম বেছে নেওয়া হয়েছে দোমড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়কে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বাণী হালদার জানান, এ বার ১৩ ডিসেম্বর রবীন্দ্র সদনে তাঁদের ‘শিশুমিত্র’ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে। এই জেলা থেকে জামুড়িয়া ব্লকের একটি স্কুল এই পুরস্কার পেয়েছে।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘শিশুমিত্র’ হওয়ার জন্য সরকার নির্দেশিত ৭২টি মাপকাঠি রয়েছে। যেমন, পরিচ্ছন্নতা, স্কুলে ফুলের বাগান, ‘কিচেন গার্ডেন’ তৈরির মতো নানা উদ্যোগও হয়েছে। সে সব পূরণ করেই সাফল্য এসেছে বলে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের। তবে এর পিছনে রয়েছে শিশু সংসদের ভূমিকাও, জানান শিক্ষক-শিক্ষিকার। প্রধান শিক্ষিকা জানান, পড়ুয়াদের জন্য প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা-পরিবেশ মন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, ক্রীড়ামন্ত্রীর ও উদ্যানমন্ত্রীর পদ তৈরি করা হয়েছে। তারাই সব দেখভাল করে। তাদের সাহায্য করার জন্য এক-এক জন মন্ত্রীর সঙ্গে আরও পাঁচ জন করে প্রতিমন্ত্রী রাখা হয়েছে। এ ভাবেই স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হয়েছে।

স্কুলের আরও দুই শিক্ষক দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত সরকারেরা জানান, স্কুলে বালক-বালিকাদের জন্য পৃথক শৌচাগার রয়েছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য আলাদা শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। ফুলের বাগান ও ‘কিচেন গার্ডেন’ পড়ুয়ারাই দেখভাল করে। স্কুলের প্রতিটি দেওয়ালে সামাজিক বার্তা দেওয়া হয়েছে। এর পরে রাজ্যস্তরেও ভাল ফলের আশায় রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে পড়ুয়ারা। পড়ুয়া প্রদীপ রুইদাস, অর্পিতা লোহারদের আশা, স্কুল ভবিষ্যতে আরও নাম করবে।

প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের সার্কেল ইনস্পেক্টর (কাঁকসা) সুদীপ সরকার বলেন, ‘‘জেলা স্তরের ফলের পরে এ বার রাজ্য স্তরে ভাল ফলের আশা রয়েছে। বেশ কিছু পরিকাঠামোর উন্নয়নেরও প্রয়োজন। সেগুলিও দেখা হচ্ছে। এই স্কুলের সাফল্য ব্লকের অন্য স্কুলগুলিকেও অনুপ্রাণিত করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Knaksa Kitchen Garden School Students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE