বন্ধ রেলগেট। চলছে ঝুঁকির যাতায়াত। অণ্ডালের শঙ্করপুর রেলগেট এলাকায়। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ
এক দিকে পুজোর মুখে দুষ্কৃতীদের ধরতে বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। অথচ প্রকাশ্যে দিনের আলোয় বুধবার জনবহুল সিটি সেন্টার এলাকাতেই পুরসভা ও বাসস্ট্যান্ডের কাছে পর পর তিনটি গাড়ির পিছনের জানলার কাচ ভেঙে ভিতরে রাখা ব্যাগ নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে পুরসভা কনফারেন্স হলে শ্রম দফতরের ডাকা ইস্পাত অনুসারি শিল্পের শ্রমিকদের বোনাস সংক্রান্ত বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছিলেন সিটুর জেলা সভাপতি বিনয়েন্দ্রকিশোর চক্রবর্তী। পুরসভার অদূরে এডিডিএ কার্যালয়ের কাছে গাড়িটি রাখেন তিনি। দুপুর ২টো নাগাদ তাঁকে তাঁর গাড়ির চালক জানান, গাড়ির পিছনের জানলার কাচ ভাঙা। পিছনের আসনে রাখা ব্যাগটি নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। বিনয়েন্দ্রকিশোরবাবু জানান, তাঁর গাড়ির চালক গাড়ি থেকে নেমে সামান্য দূরে অন্য গাড়ির চালকদের সঙ্গে গল্প করছিলেন। তিনি হঠাৎ গাড়ির কাচ ভাঙা দেখতে পেয়ে তাঁকে খবর দেন। ব্যাগে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, প্যান কার্ড, আধার কার্ড, চারটি এটিএম কার্ড-সহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র রাখা ছিল। বিনয়েন্দ্রকিশোরবাবু বলেন, ‘‘খুবই চিন্তার বিষয় এটা। পুরসভা, এডিডিএ, চারটি ব্যাঙ্ক, দোকান, রেস্তরাঁ সব রয়েছে এলাকায়। এমন জনবহুল এলাকায় দিনের বেলায় এমন ঘটলে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।’’
একই ঘটনা ঘটে আসানসোলের বাসিন্দা রাজেন্দ্র মজুমদার ও দুর্গাপুরের বিধাননগরের নূপুর নাইডুর সঙ্গেও। রাজেন্দ্রবাবু সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডে গাড়ি রাখেন। কিছুক্ষণ পরে ফিরে দেখেন, জানলার কাচ ভাঙা। নেই ব্যাগটিও। তিনিও জানান, নগদ টাকা, এটিএম কার্ড ও একটি মামলার জরুরি কিছু নথি ব্যাগে রাখা ছিল। নূপুরদেবীও সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডের কাছে গাড়ি রেখে কাজে যান। আধ ঘণ্টা পরে ফিরে দেখেন, দুষ্কৃতীরা জানলার কাচ ভেঙে তাঁর হাতব্যাগটি নিয়ে চম্পট দিয়েছে। তিনি জানান, চুরি গিয়েছে নগদ টাকা, সোনার গয়না ও কিছু দরকারি কাগজপত্র।
পর পর তিনটি গাড়িতে এ ভাবে দিনের বেলায় ছিনতাইয়ের খবর জানাজানি হতেই আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সিটি সেন্টার এলাকায় অপরাধমূলক কাজকর্ম দিন দিন বাড়ছে। পুলিশের আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া দরকার। অনির্বাণ ঘোষ, দিলীপ সরকারেরা বলেন, ‘‘রাস্তার ধারে মোটরবাইক রাখলে ট্র্যাফিক পুলিশ ব্যাপক কড়াকড়ি করে। অথচ দুষ্কৃতীদের ধরতে তৎপর নয় পুলিশ।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে অনেকেই এ ভাবে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে বাজার করতে আসনে। সবার পক্ষে গাড়ি পাহারার জন্য লোক নিয়ে আসা সম্ভব নয়। দিনেই এই পরিস্থিতি হলে রাতে তো আর ক্রেতারা আসবেনই না।’’ পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, কোনও রাসায়নিক ব্যবহার করে কাচ ভাঙা হয়েছে। এ ছাড়া কাচ কাটার যন্ত্র ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। সে জন্য আশপাশের কেউ শব্দ পাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy