সোমবার রাতে এই বাড়ির উঠোনেই আচমকা গর্ত তৈরি হয়। তা থেকে বার হতে থাকে ধোঁয়াও। নিজস্ব চিত্র
কাজ সেরে বাড়়িতে একটু জিরোচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। আচমকা কেঁপে উঠল মাটি। ভয়ে বাড়ি থেকে বার হতে গিয়েই তিনি দেখেন, উঠোনে তৈরি হয়েছে গর্ত। তা থেকে বার হচ্ছে ধোঁয়া। সোমবার রাতে ধসের জেরে এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কুলটির ডিসেরগড়ের শিশুবাগান এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ ইসরাফিল খানের বাড়িতে। ধসের জেরে চারটি বাড়ির দেওয়াল ও মেঝেয় ফাটল ধরেছে বলেও জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসানসোল পুরসভার ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকা এমনিতেই ধসপ্রবণ। ওই রাতে ঠিক কী ঘটেছিল? ইসরাফিল জানান, রাত তখন সাড়ে ৮টা। ধসের জেরে গর্ত থেকে ধোঁয়া বার হচ্ছে দেখে সপরিবার বাড়ির বাইরে চলে আসেন তিনি। ইসরাফিলের কথায়, ‘‘আচমকা মাটি ফাটার আওয়াজ পাই। বাড়িটা যেন দুলে উঠল। তার পরে গর্তটা দেখে আর বাড়ি ফিরিনি।’’ বা়ড়ি থেকে বাইরে বেরিয়ে ইসরাফিল দেখেন, ততক্ষণে পড়শিরা প্রায় সকলেই রাস্তায় নেমে এসেছেন। বাসিন্দারা জানান, লাগোয়া চারটি বাড়িও অল্পবিস্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সোমবার রাতের ওই ঘটনার খবর পেয়ে মঙ্গলবার এলাকা পরিদর্শনে যান কুলটির বিধায়ক তথা আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে দেখে এলাকার এলাকাবাসী ধসের জেরে বার বার বিপত্তির কথা জানিয়ে পুনর্বাসনের দাবি জানান। উজ্জ্বলবাবু এলাকাবাসীকে জানান, ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের আবাসন দফতর ইতিমধ্যে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে প্রায় তিরিশ হাজার বাড়ি তৈরি করছে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বাসিন্দারা সেখানে বাড়ি পাবেন। উজ্জবলবাবু বলেন, ‘‘ইসিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের জন্য আপৎকালীন কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।’’ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িটির সদস্যদের এক পড়শির বাড়িতে সাময়িক থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় ডিসেরগড় ফাঁড়ির পুলিশ। বিপদ এড়াতে রাতেই এলাকা ঘিরে ফেলা হয়।
ধসের খবর পেয়ে রাতেই এলাকায় যান স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অভিজিৎ আচার্য। তিনি জানান, এলাকাটি আগেই ধসপ্রবণ বলে ঘোষণা করা হয়। বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় উঠে যাওয়ার জন্যও পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও বিপদ মাথায় বাসিন্দারা এলাকায় থাকছেন। বাসিন্দাদের দ্রুত অন্যত্র সরানোর দাবি জানিয়েছেন ডিসেরগড় ভিলেজ কমিটির সম্পাদক বিমান মুখোপাধ্যায়।
ইসিএল সূত্রে জানা যায়, ডিরেক্টর জেনারেল মাইনস সেফটি-র তরফে ওই অঞ্চলটিকে ধসপ্রবণ ঘোষণার পরে থেকেই নিয়মিত জল-বালি মাটির তলায় পাঠানো হচ্ছে। এখনও সেই কাজ করা হয়। ইসিএলের কর্তারা জানান, প্রায় একশো বছর আগে ওই এলাকায় কয়লা তুলেছিল বেঙ্গল কোল কম্পানি। কিন্তু ঠিক মতো ভূগর্ভ ভরাট না করায় বিপত্তি ঘটছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy