দুর্গাপুরের সভায় শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্রুত উপনির্বাচন চান। তাই রাজ্যের করোনা পরিসংখ্যান কমিয়ে দেখানো হচ্ছে। এমনই অভিযোগ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই অভিযোগ শোনামাত্র নন্দীগ্রামের বিধায়কের বিরুদ্ধে পাল্টা তোপ দেগেছে তৃণমূল। জোড়াফুল শিবিরের শিবিরের তরফে পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘বিরোধী দলনেতা যে সুরে কথা বলছেন, তা শুনে কি ধরে নিতে হবে যে, সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের নেওয়ার কথা, তা বিজেপি নেতারা নিচ্ছেন?’’
ডিপিএলের জমি বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্ত করছে রাজ্য সরকার, এই অভিযোগে দুর্গাপুরে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেছে বিজেপি। মঙ্গলবার সেই কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন শুভেন্দু। বলেন, ‘‘বিজেপি-কে আটকাতে মিটিং, মিছিল বন্ধ রাখা হচ্ছে। আবার সব জায়গায় বলে দিয়েছে, পজিটিভ করোনা রিপোর্ট কম দেখাতে হবে। কারণ নন এমএলএ মুখ্যমন্ত্রী ছটফট করছেন। ৪ নভেম্বরের মধ্যে জিততে না পারলে মুখ্যমন্ত্রিত্বটা যাবে। প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির মালিক। আর তো কেউ নেই মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার মতো। একটাই পোস্ট। বাকি সব ল্যাম্পপোস্ট। তাই সব জায়গায় বলেছে, করোনা কম দেখাও। না হলে আমার আর মুখ্যমন্ত্রী থাকা হবে না।’’ শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘‘সংবিধানে ছ’মাসের মধ্যে জিতে আসার কথা বলা আছে। কিন্তু তার পরে কী হবে লেখা নেই। আর বিজেপি রাস্তা পরিষ্কার করে দিয়েছে। উত্তরাখণ্ডে আমাদের নন এমএলএ মুখ্যমন্ত্রী ছিল। আমরা চেঞ্জ করে এমএলএ-কে করে দিয়েছি। বিজেপি মানুষের স্বাস্থ্যের কথা আগে ভাবে।’’
শুভেন্দুর অভিযোগ শুনে ‘জ্বলে উঠেছে’ জোড়াফুল শিবির। দলের মুখপাত্র তাপস রায়ের পাল্টা তোপ, ‘‘বিরোধী দলনেতা যদি সত্যিই বাংলা থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি হন, তা হলে বাংলার মঙ্গলের কথা বলবেন। বাংলার স্বার্থের কথা বলবেন এবং বাংলা যে ভাবে করোনামুক্ত হচ্ছে তা তিনি তুলে ধরবেন। আমরা অভিযোগ করে আসছিলাম, নির্বাচন কমিশন নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিচ্ছে না, নিচ্ছে অন্য কেউ।’’ তাপসের প্রশ্ন, ‘‘বিরোধী দলনেতা যে সুরে কথা বলছেন, তা শুনে কি ধরে নিতে হবে যে সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের নেওয়ার কথা, তা বিজেপি নেতারা নিচ্ছেন?’’ তাপসের মতে, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন।’’
সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার মাস চারেকের মধ্যে ইস্তফা দিয়েছেন তীরথ সিংহ রাওয়াত। রাজনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, উত্তরাখণ্ডে তীরথকে সরানোর সিদ্ধান্তকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গে মমতাকে রাজনৈতিক ভাবে চাপে ফেলার চেষ্টা করবে বিজেপি। ঘটনাচক্রে মঙ্গলবার দুর্গাপুরে তীরথের প্রসঙ্গ নিজের কথায় টেনে এনেছেন শুভেন্দু।
সংবিধান বলছে, বিধায়ক না হয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে কেউ দায়িত্ব নিলে তাঁকে ছ’মাসের মধ্যে উপনির্বাচনে জয় পেতেই হবে। জঙ্গিপুর, সামশেরগঞ্জ, খড়দহ, ভবানীপুর, গোসাবা, শান্তিপুর এবং দিনহাটা, রাজ্যের এই সাতটি আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা। এর মধ্যে মমতা তাঁর পুরনো ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হতে পারেন বলে জোড়াফুল শিবিরের একটি অংশের মত। কিন্তু ‘কোভিডের কারণে’ উপনির্বাচন কিছুটা দ্বিধায় নির্বাচন কমিশন। সেই আবহেই শুভেন্দুর এ হেন তোপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy