মুখ্যমন্ত্রী এই এলাকা দিয়েই বীরভূম থেকে বর্ধমান যাবেন— এই খবর পেয়ে শুক্রবার দুপুরে রাস্তার পাশে জড়ো হয়েছিলেন কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুরের জরিলাল স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পড়ুয়ারা। মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করার অনুরোধ জানানো হয়। শিক্ষকদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর বিষয়টি দেখবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
শিক্ষকেরা জানান, আগেভাগেই খবর ছিল, মুখ্যমন্ত্রী এই এলাকা দিয়েই যাবেন। সেই মতো দুপুর নাগাদ পানাগড়-দুবরাজপুর রাস্তার ত্রিলোকচন্দ্রপুর মোড় লাগোয়া এলাকায় দাঁড়িয়েছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়ারা। কী করে দেখা হল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে? স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজন সোম বলেন, ‘‘ওনার কনভয়ের প্রথম গাড়িটা খানিক এগিয়ে গেল। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি আমাদের সামনে দাঁড়াল। উনি জানতে চান, কী ব্যাপার?’’ এরপরেই স্কুলকে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত করার দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান শিক্ষকেরা। শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও চেয়ে নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন, ‘‘ঠিক আছে, আমি দেখব।’’
২০১৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিকের অনুমোদন পাওযার জন্য স্কুল শিক্ষা দফতরে আবেদন করা হয় বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান। স্কুলে বর্তমানে পড়ুয়ার সংখ্যা ৬৩৬ জন। প্রধান শিক্ষকের দাবি, ‘‘আমাদের স্কুল উচ্চ মাধ্যমিক হলে এলাকার অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে প়ড়া পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধে হবে। কারণ সকলের পক্ষে বাইরে গিয়ে পড়াশোনা করা সম্ভব হয় না।’’
সফরে যাওয়ার পথে মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন অবশ্য নতুন নয়। গত বছর পানাগড়-দুবরাজপুর রাস্তা ধরে বর্ধমান যাওয়ার সময়ে কাঁকসার পিরায়ীগঞ্জ চারুচন্দ্র হাইস্কুলকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করার ঘোষণা করা করেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার ২০১৪ সালে শীতের সময়ে বীরভূম থেকে বর্ধমানে যাওয়ার পথে কাঁকসার কাছে বেশ কিছু স্কুল-পড়ুয়াকে খালি পায়ে হাঁটতে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে তিনি শিক্ষামন্ত্রীকে ফোনে নির্দেশ দেন— প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সমস্ত পড়ুয়াকে জুতো দিতে হবে।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে খুশি পড়ুয়ারাও। দশম শ্রেণির পড়ুয়া শুভদীপ সাহা, রাখী মাল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কাছে হাতজোড় করে নিবেদন করেছি। স্কুলে এ বার হয়তো উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা শুরু হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের একটি গাড়িতে থাকা সরকারি আমলাদের কাছে বেশকিছু পরিকাঠামোগত সমস্যার সমাধান চেয়ে আবেদনপত্র দেন বাসিন্দাদের একাংশ।