থানার পথে ধৃত কিশোরী।—নিজস্ব চিত্র।
লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু নয়, তবে পাকড়াও তো বটেই।
নীল জিনস্, গোলাপি চেক টপ পরা দোহারা চেহারা। সঙ্গের লাল হাতব্যাগে একটা একশো টাকার নোট। বাজারে এসে সেটাই বারবার দেখিয়ে জিনিস চাইছিল মেয়েটি।
জিনিস হাতে এলে টাকা দিয়েছি বলে তিন-চার জনের কাছ থেকে ফেরত টাকা হাতিয়ে দিব্যি বাড়িও ফিরে গিয়েছিল। কিন্তু পরের দিন আবারও বাজারে এসে একই কায়দা করতেই বছর পনেরোর ওই কিশোরীকে ধরে ফেললেন কালনার চকবাজারের ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের দাবি, ওই কিশোরীকে ধরে ফেলে ধমক দিতেই প্রতারণার কথা স্বীকার করে নেয় সে। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাকে। পুলিশের দাবি, মেয়েটি নদিয়ার নৃসিংহপুরের বাসিন্দা। স্থানীয় একটি স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ে। রবিবার ছটের বাজারে সকাল সকাল ঘাট পেরিয়ে এসে ভিড়ে মিশে একাই ওই কাণ্ড ঘটায় সে।
প্রতিদিন ভোর থেকেই নদিয়া, বর্ধমানের চাষিরা ভিড় জমান এ বাজারে। পাইকারি, খুচরো দু’রকম বেচাকেনা চলে। তবে রবিবার ভিড় থাকে লাগামছাড়া। খরিদ্দার সামলাতে সবদিকে নজরও দিতে পারেন না ব্যবসায়ীরা। সব্জি ব্যবসায়ী দিলীপ বারুই বলেন, ‘‘আমার দোকানে এসে আড়াইশো গ্রাম টম্যাটো চাইল মেয়েটা। জিনিস মেপে ১০ টাকা টাইতেই বেমালুম বলে দিল এই তো একশো টাকা দিলাম। কিন্তু কমবয়েসী একটা মেয়ের সঙ্গে চেঁচামেচি করলে অন্য খরিদ্দার হারাব ভেবে কথা না বাড়িয়ে ৯০ টাকা দিয়ে দিই।’’ দিলীপবাবুর মতো অভিজ্ঞতা আলু ব্যবসায়ী বাপ্পা মোদক, সব্জি বিক্রেতা সুপর্ণ দে-রও। তাঁদের দাবি, ‘‘৫০০ গ্রাম আলু দিয়ে দাম চাওয়ার আগেই ওই কিশোরী টাকা ফেরত চাইতে শুরু করে। চটের নীচে টাকা রাখার জায়গা দেখাতে অন্যের দেওয়া একশো টাকার নোট নিজের বলে দাবি করে। প্রথমে রাজি না হইনি, কিন্তু অন্য ক্রেতারা বিরক্ত হচ্ছেন দেখে কথা বাড়াইনি।’’ তবে তখন কেউ চেঁচামেচি না করলেও বাজার শেষে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে গিয়ে জানাজানি হয়ে যায় সবটা।
ব্যবসায়ীদের দাবি, ফেরতের নামে মেয়েটা ৪-৫ জনের কাছ থেকে ৮০-৯০ টাকা করে নিয়ে নেয়। টাকা হাতে পেলেই ‘ব্যাগ নিয়ে আসছি’ বলে জিনিস নেওয়ার আগেই সরে পড়ে। পরে জানাজানি হতে তাঁরা ঠিক করে নেন সোমবার বাজারে এলেই ধরে ফেলা হবে ওই কিশোরীকে। সেইমতো এ দিন সকালে কিশোরীকে পেয়েই একটি খুঁটির সঙ্গে তাকে বেঁধে ফেলেন ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি দেখে ভিড়ও জমে যায়। ভিড় এড়াতে বাজার থেকে নিয়ে গিয়ে কাছেই একটি মন্দিরে মেয়েটিকে আটকে রেখে পুলিশ খবর দেওয়া হয়। ন’টা নাগাদ পুলিশ এসে এসে গ্রেফতার করে ওই কিশোরীকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy