Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Raju Jha Murder Case

রাজু ঝা খুনে ধৃত অভিজিৎকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ আদালতের

গত ১ এপ্রিল ভর সন্ধ্যায় শক্তিগড় থানার আমড়া এলাকায় ল্যাংচা হাবের কাছে দুষ্কৃতিদের গুলিতে খুন হন কয়লা কারবারি রাজু ঝা।

Abhijit Mondal and Raju Jha.

রাজু ঝা খুনে ধৃত অভিজিৎ মণ্ডল এবং ব্যবসায়ী রাজু ঝা। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৩ ০০:৪২
Share: Save:

ব্যবসায়ী রাজু ঝা খুনে ধৃত অভিজিৎ মণ্ডলকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিল বর্ধমান সিজেএম আদালত। ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বুধবার তাঁকে সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। সেখানেই দেওয়া হয় এই নির্দেশ।

অভিজিৎ মণ্ডলের আইনজীবী মোল্লা মহতাবউদ্দিন জামিনের সওয়ালে বলেন, “শুধু মাত্র সন্দেহের বশে অভিজিৎকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে একটি পেনড্রাইভ ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি। পুলিশ একটি সন্দেহজনক মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনের কথা উল্লেখ করেছে। সেই মোবাইলটি অভিজিৎ ব্যবহার করতেন। তাঁর সংস্থারই এক কর্মী দু’বার তাঁর মোবাইল রিচার্জ করে দিয়েছেন।”

সেই মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ঘটনার দিন দুর্গাপুর ও কাটোয়া থানার জাজিগ্রামে পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। কিন্তু ঘটনায় অভিজিৎ-এর জড়িত থাকার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য পুলিশ এখনও পর্যন্ত পায়নি বলে পাল্টা দাবি।

সরকারি আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে জানান, তদন্তের স্বার্থে ধৃতকে যে কোনও সময় সংশোধনাগারে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতে হতে পারে। দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে ধৃতকে জেল হেফাজতে পাঠিয়ে আগামী ১৭ মে আদালতে আবার হাজির করানোর নির্দেশ দেন সিজেএম।

উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল ভর সন্ধ্যায় শক্তিগড় থানার আমড়া এলাকায় ল্যাংচা হাবের কাছে দুষ্কৃতিদের গুলিতে খুন হন কয়লা কারবারি রাজু ঝা। ৩ জন দুষ্কৃতী তাঁকে খুব কাছ থেকে গুলি করার ছবি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়ে। দুষ্কৃতীরা অপারেশন সেরে তাঁদের নীল গাড়িটি শক্তিগড় থানার কাছে ফেলে রেখে যান। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অনুযায়ী, শক্তিগড় থেকে মালম্বা হয়ে কাটোয়া থানার জাজিগ্রামে পৌঁছয় দুষ্কৃতীরা। পুলিশের অনুমান, সেখান থেকে বীরভূম হয়ে ঝাড়খণ্ডের শিকারিপাড়ার দিকে চলে যান তাঁরা। পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) মোবাইল কল ডাম্পিং এবং সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে বেশ কিছু সূত্র পায়। সেই সমস্ত সূত্র ধরে গত ১৮ এপ্রিল দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার এলাকা থেকে অভিজিৎকে গ্রেফতার করে সিট। তাঁকে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। একটি সন্দেহজনক মোবাইলের হদিসও পায় সিট। সেটি অভিজিৎ ব্যবহার করতেন বলে দাবি তদন্তকারীদের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই মোবাইল নম্বরের টাওয়ার লোকেশন ঘটনার দিন দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার ও জাজিগ্রাম এলাকায় মেলে। মোবাইলে দু’বার অভিজিৎ-এর সংস্থার এক কর্মী শুভজিৎ মণ্ডল ব্যালেন্স ভরে দেন। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। তাঁর গোপন জবানবন্দিও ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নথিভুক্ত করানো হয়।

অভিজিৎকে নিয়ে সিটি সেন্টারের দু’টি দোকানে হানা দেয় পুলিশ। সেখান থেকে বেশ কিছু ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। অভিজিতের দেওয়া বয়ানের ভিত্তিতে গত ১ মে ঝাড়খণ্ডের রাঁচী থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করে সিট। তাঁরা দিল্লি থেকে অভিযুক্তদেরকে গাড়ি এনে দিয়েছিল বলে দাবি তদন্তকারীদের। দু’জনই বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। তাঁদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও এক জনের সন্ধ্যান পেয়েছে সিট। তিনি ধৃত দু’জনকে দিল্লি থেকে গাড়ি এনে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে বলে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Raju Jha Murder Case Raju Jha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE