Advertisement
E-Paper

জীবাণুমুক্ত হয়নি, নালিশ সুভাষপল্লিতে

স্থানীয় বাসিন্দা শ্রাবণী ধীবর, পূজা রাজবংশীদের অভিযোগ, ‘‘মঙ্গলবার রাতে অল্প বৃষ্টিতেই নর্দমার জল রাস্তায় উঠে এসেছে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২০ ০৭:০৫
গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় বর্ধমান পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় বর্ধমান পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

করোনা-রোগীর সন্ধান মেলার পরে, গোটা পাড়া তো দূর, জীবাণুনাশক ‘স্প্রে’ করা হয়নি আক্রান্তের বাড়িতেও। এলাকা ‘গণ্ডিবদ্ধ’ হওয়ার পরে, বেহাল হয়ে পড়েছে এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা থেকে পানীয় জলের বন্দোবস্ত। বর্ধমানের সুভাষপল্লি এলাকায় পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে এমনই অভিযোগ করলেন বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ।

স্থানীয় বাসিন্দা শ্রাবণী ধীবর, পূজা রাজবংশীদের অভিযোগ, ‘‘মঙ্গলবার রাতে অল্প বৃষ্টিতেই নর্দমার জল রাস্তায় উঠে এসেছে। দু’দিন ধরে ওই নোংরা জল রাস্তায় ভাসছে। রাস্তার ট্যাপকল নিচু থাকায় নোংরা জল ঢুকে যাচ্ছে। তাই ওই কল ব্যবহার করা যাচ্ছে না।’’ এলাকার বাসিন্দা রিঙ্কু মাঝি, সোনিয়া সরকারদের ক্ষোভ, ‘‘রাস্তার টিউবওয়েলেও জল পড়ছে না। সেটির উপরে ৩০-৪০টি পরিবার নির্ভরশীল। ঘটনার তিন দিন পরেও জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়নি।’’

বর্ধমান পুরসভার আধিকারিক জয়রঞ্জন সেন অবশ্য বলেন, ‘‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় জীবাণুনাশক ‘স্প্রে’ এবং নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক করার জন্য দু’টি দল গড়া হয়েছে। শুক্রবার থেকে তাঁরা এলাকায় যাবেন। পানীয় জলের কী সমস্যা রয়েছে, তা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার থেকে ‘গণ্ডিবদ্ধ’ এলাকায় স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজ নিতে ‘নিবিড় সংযোগ’ শুরু হয়েছে। সে জন্য প্রতিটি এক জন করে ‘এএনএম’ এবং চার জন করে স্বাস্থ্যকর্মীকে নিয়ে কয়েকটি দল গড়েছে পুরসভা। তারা ৫০টি করে বাড়িতে গিয়ে স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজ নিতে শুরু করেছেন। পুরসভার এগজ়িকিউটিভ অফিসার অমিত গুহের দাবি, ‘‘প্রতি বেলায় দু’শোটি করে বাড়িতে যাবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। টানা ২১ দিন দু’বেলা স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজ নেবেন তাঁরা।’’

এ দিন দুপুরে স্বাস্থ্যকর্মীরা ‘গণ্ডিবদ্ধ’ এলাকার অলিগলিতে ঘুরে কারও জ্বর, সর্দি, কাশির মতো উপসর্গ রয়েছে কি না বা অন্তঃসত্ত্বারা কেমন আছেন, তা খোঁজ নেন। সেই সঙ্গে বাড়িতে গ্যাসের সিলিন্ডার না থাকায় রান্না করতে সমস্যার কথাও শোনেন। তাঁদের কাছেই পানীয় জলের সমস্যা, জীবাণুনাশক ‘স্প্রে’ না হওয়া থেকে বেহাল নিকাশি নিয়ে ক্ষোভ জানান বাসিন্দাদের অনেকে। পুরসভায় ফিরে তাঁরা ওই সব অভিযোগ রিপোর্ট করেছেন বলে স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান।

এ দিন ওই এলাকার বাসিন্দাদের খাবার পৌঁছে দিতে ভাঙাকুটি, ভাতছালা, নীলপুর থেকে গিয়েছিলেন অনেকের আত্মীয়েরা। তাঁরা বলেন, ‘‘তিন দিন অনেকে ঘরে মজুত খাবার দিয়ে চালিয়েছেন। খাবার শেষ হতে থাকায় আমাদের ফোন করেছেন। পুলিশের দেখানো জায়গা মতো খাবার রেখে দিয়েছি। সেখান থেকে পরিজনেরা খাবার নিয়ে যাচ্ছেন।’’

পুলিশ জানায়, ‘হেল্পলাইন’ নম্বরে ফোন করলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করা হচ্ছে। জেলাশাসকের নির্দেশে বৃহস্পতিবার থেকে বিধিনিষেধ আরোপ শুরু হয়েছে। খোসবাগান এলাকায় চিকিৎসকেরা চেম্বার বন্ধ করেছেন। আশপাশের এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মদের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। ওই নির্দেশে জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানান, সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে দোকান খোলা থাকবে। গৃহ-পর্যবেক্ষণ নিবিড় ভাবে করা হবে। ‘সারি’ বা ‘আইএলআই’ রোগীদের নমুনা সংগ্রহও চলবে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, সুভাষপল্লির যে মহিলা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি এবং তাঁর পরিবারের সদস্য ও গাড়ির চালকের পরোক্ষ-সংস্পর্শে এসেছেন, এমন ৪০ জনকে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহিলার পরিবারের চার জন ও গাড়ির চালক গাংপুরে বেসরকারি ‘কোভিড’ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আজ, শুক্রবার তাঁদের নমুনা পরীক্ষা করা হবে বলে পূর্ব বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় জানান।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

Burdwan Drainage System Covid-19 Coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy