তদন্ত: বর্ধমান ট্রেজারিতে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
নবমীর সকাল। শারদ উৎসব মিটলেই ঘরে ঘরে লক্ষ্মীপুজো। তাই পেনশনের টাকা তুলতে বর্ধমান মুখ্য ডাকঘরে শুক্রবার সকাল সকাল ভিড় জমিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীরা। কিন্তু ডাকঘরের কর্মীরা আচমকা জানান, বর্ধমান ট্রেজারিতে ভল্ট ভেঙে টাকা চুরি গিয়েছে। আজ পেনশন মিলবে না। এর পরেই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা ক্ষোভ জানান।
ঠিক কী ঘটেছে? ডাকঘর সূত্রে জানা যায়, বুধবার পেনশনের টাকা বাবদ এক কোটি ১৯ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা আসে। এ দিন তা বিলির কথা ছিল। সেই মতো টাকা আনতে সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ট্রেজারিতে যান ডাকঘরের কর্মীরা। তাঁরা জানান, গিয়ে দেখা যায়, ভল্ট ভাঙা। খোওয়া গিয়েছে, প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা। এর পরেই বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেন ডাকঘরের সিনিয়র পোস্টমাস্টার প্রবাল বাগচি। ডাকঘর কর্মীদের দাবি, বুধবার পুলিশের সামনেই কাপড়ের প্যাকেটে টাকা ভরে ‘সিল’ করে দেওয়া হয় ভল্ট।
পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবের অবশ্য দাবি, ‘‘সরাসরি ট্রেজারি থেকে টাকা লোপাট হয়নি। ট্রেজারি ভবনে থাকা ভল্টগুলি কয়েকটি দফতর ব্যবহার করে। তেমনই একটি ভল্টে টাকা কম রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।’’ পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল জানান, বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (হেডকোয়ার্টার) তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে।
দুপুরে ঘটনাস্থলে তদন্তে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) পুষ্পা কুমারী। ওই রাতে ট্রেজারির ক্যাম্পে থাকা পুলিশ কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন তিনি। তার মধ্যে এক জন পুলিশকর্মীর খোঁজ মিলছিল না। পরে অবশ্য তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এ দিকে পুজোর মধ্যে হাতে টাকা না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, জেলাশাসকের দফতর, বর্ধমান মহিলা থানা, বর্ধমান আদালত চত্বর-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে ট্রেজারি ভবন থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে। এমন ‘কড়া নজরদারি’ থাকা জায়গাতেও এমন ঘটনা কী ভাবে ঘটল, প্রশ্ন তাঁদের। সেই সঙ্গে সন্তোষকুমার সাউ, রূপক হাজরাদের মতো অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের আক্ষেপ, ‘‘পুজোর সময়। বাড়িতে আত্মীয়রাও রয়েছেন। হাতে টাকা নেই। কী যে হবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy