Advertisement
E-Paper

দুর্গাপুজো থেকে ইদ, এক সঙ্গেই সব উৎসব

ফি বছর দুর্গাষ্টমীর দিন সংখ্যালঘু মহিলারা ভিড় জমান মন্দিরে। কেউ কেউ মানতের পুজোও দেন।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০৩:১৭
নতুন মন্দিরের কাজ দেখছেন আনোয়ারেরা। নিজস্ব চিত্র

নতুন মন্দিরের কাজ দেখছেন আনোয়ারেরা। নিজস্ব চিত্র

ফি বছর দুর্গাষ্টমীর দিন সংখ্যালঘু মহিলারা ভিড় জমান মন্দিরে। কেউ কেউ মানতের পুজোও দেন। উরস উৎসবে আবার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সব বন্দোবস্ত করেন হিন্দুরা। সবাই মিলে এক সঙ্গে বাঁচাটাই রীতি ভাতার ব্লক সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরের এরুয়ার গ্রামে।

আর পাঁচটা গ্রামের মতো এখানে হিন্দু ও মুসলিম মিলেমিশে থাকেন। পরস্পরের বিপদে-আপদে ঝাঁপিয়ে পড়েন, রুখে দাঁড়ান অন্যায়ের বিরুদ্ধে। তাই দুর্গা পুজো সেখানে হিন্দুদের নয়, সবার উৎসব।

৭২ বছরের আনোয়ার শেখ অবলীলায় বলেন, “উৎসব মানে তো মিলন, সেখানে কোনও ভেদ নেই। ছোটবেলায় দেখেছি, হরগৌরির পুজো করতেন প্রভাবতী দেবী পণ্ডা নামে এক বিধবা মহিলা। তাঁর কেউ ছিল না বলে আমাদের গ্রামের বেনিয়াচত্বর এলাকার একটি ক্লাবকে পুজোর ভার দিয়ে যান। তারপর থেকে আমরা সবাই মিলে পুজো করি। ইদও আমরা একসঙ্গে কাটাই।’’

সম্প্রতি ওই মন্দিরের ভগ্নদশার জন্য পাশেই তিন কাঠা জমির উপর তৈরি হচ্ছে নতুন মন্দির। ওই মন্দিরের নির্মাণ কাজের দেখভাল থেকে চাঁদা আদায়—সবের দায়িত্বে রয়েছেন আনোয়ার শেখ, আসিফ আহমেদ আনসারিরা। সকাল, বিকেল মন্দিরের নির্মাণ কাজ ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা দেখতে নরাসপুর থেকে বেনিয়াচত্বরে আসেন আনোয়ার সাহেবরা। নিজের বাড়ির মতোই যত্ন নিয়ে মিস্ত্রিদের বুঝিয়ে দেন নকশা।

মন্দির তৈরির খরচ তোলার জন্য দু’দিনের যাত্রা উৎসব হয়েছে গ্রামে। তারও দায়িত্বে ছিলেন মুসলিমপাড়ার কয়েকজন যুবক। আসিফ আহমেদ আনসারি, মুজিবর শেখ, বাপিয়া রহমানরা বলেন, “হরগৌরি মন্দির উন্নয়ন প্রকল্পের জন্যে যাত্রা উৎসবের পরিকল্পনা আমাদের। আমরাই যাত্রাদল বায়না দেওয়া, টিকিট বিক্রি সবটা করেছি। এই উৎসবের লভ্যাংশ মন্দির তৈরির জন্যে দেওয়া হবে।’’ জানা যায়, মন্দিরের মতো মসজিদ সংস্কার বা মাজারে উরস উৎসবের সময় এলাকার হিন্দু যুবকেরাও এগিয়ে আসেন সাহায্য করতে। উরস উৎসবের রক্তদান শিবিরে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন। মুজিবর শেখ জানান, মল্লিক পাড়ায় বড় মসজিদ ভেঙে পড়ার সময় হিন্দুরা সাহায্য করেছিল। নরাসপুরে জামে মসজিদ সংস্কারেও হিন্দুরা এগিয়ে এসেছিলেন।

ওই মন্দির উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক সৌরভ বুটের কথায়, “জাতিধর্ম নির্বিশেষে সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ মন্দির তৈরি করার জন্যে এগিয়ে এসেছেন। সেই কারণেই আমরা কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে মন্দির তৈরি করতে সাহস পেয়েছি।’’ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য হাসমত শেখ, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মানগোবিন্দ অধিকারীরাও বলেন, “আমরা যা করি, সবাই মিলে করি। সুখে-দুঃখে একসঙ্গে বাঁচাটাই জীবন।’’

Bhatar Village
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy