Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

শ্বাসনালী ছিন্ন, প্রাণ বাঁচল তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে

কাজ থেকে ঘরে ফিরে মায়ের চক্ষু চড়কগাছ। রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঘর। মেঝেতে গলার নলি কাটা অবস্থায় পড়ে ছেলে! পড়শিদের সাহায্যে রানিগঞ্জের গির্জাপাড়ার বাসিন্দা মিলন চন্দ্রকে দ্রুত ভর্তি করানো হয় আসানসোল জেলা হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানান, শ্বাসনালী কেটে গিয়েছে।

হাসপাতালে মিলন। নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতালে মিলন। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

কাজ থেকে ঘরে ফিরে মায়ের চক্ষু চড়কগাছ। রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঘর। মেঝেতে গলার নলি কাটা অবস্থায় পড়ে ছেলে! পড়শিদের সাহায্যে রানিগঞ্জের গির্জাপাড়ার বাসিন্দা মিলন চন্দ্রকে দ্রুত ভর্তি করানো হয় আসানসোল জেলা হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানান, শ্বাসনালী কেটে গিয়েছে। মঙ্গলবার কয়েক ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচার শেষে বছর পঁয়তিরিশের মিলনবাবুকে বাঁচালেন চিকিৎসকেরা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালে এলে দেখা যায়, মিলনবাবুর শ্বাসনালী পুরোপুরি কেটে গিয়েছে। কোনও রকমে রক্ষা পেয়েছে খাদ্যনালী। তবে গলার দু’পাশের মাংসপেশি বেশ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পরিস্থিতি খানিকটা জটিল হয়ে যায়। যুবকের অবস্থা দেখে তড়িঘড়ি মেডিক্যাল বোর্ড বাসনোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান চিকিৎসক সৈকত বসু। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, দ্রুত অস্ত্রোপচার শুরু করতে হবে।

সৈকতবাবু ও চিকিৎসক বীরেশ্বর মণ্ডলের উপরে অস্ত্রোপচারের দায়িত্ব পড়ে। তাঁদের দাবি, প্রায় তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচার করা হয়। আপাতত যুবকের অবস্থা স্থিতিশীল। বর্তমানে মিলনবাবুকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের এই সাফল্য খুশি সুপার নিখিলচন্দ্র দাস। তাঁর কথায়, ‘‘এ ধরনের অস্ত্রোপচার সাধারণত মেডিক্যাল কলেজে করা হয়। কিন্তু আমাদের হাসপাতালের সীমিত পরিকাঠামোয় এমম অস্ত্রোপচার সত্যিই বিরল।’’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বেসরকারি হাসপাতালে এ ধরনের অস্ত্রোপচারের খরচ অনেক। জেলা হাসপাতালে অবশ্য নামমাত্র খরচ হয়েছে বলে জানান মিলনবাবুর মা আলপনাদেবী। পরবর্তী চিকিৎসার জন্যও হাসপাতাল সাহায্য করবে বলে আশ্বাস নিখিলবাবুর।

তবে মিলনবাবুর এমন অবস্থা হল কেন? পেশায় গৃহশিক্ষক আলপনাদেবীর দাবি, ‘‘স্বামী মারা গিয়েছেন। পরিবারের আয় নেই তেমন। বছরখানেক ধরে ছেলে মানসিক হতাশায় ভুগছিলেন। এ দিন সকালে বাজার থেকে ফিরে দেখি ছেলে পড়ে রয়েছে।’’ জেলা হাসপাতালের এমন অস্ত্রোপচারকে অভিনন্দন জানিয়েছে শহরের চিকিৎসক মহলও। আসানসোলের বিশিষ্ট চিকিৎসক দিলীপ দত্ত বলেন, ‘‘প্রায় দু’দশক আগে এমন একটি অস্ত্রোপচার করেছিলাম। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এ ধরনের অস্ত্রোপচার। উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব থাকা সত্ত্বেও যেভাবে অস্ত্রোপচার হয়েছে, তা অভিনন্দনযোগ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Operation Boy Windpipe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE