E-Paper

তৃণমূলের পাল্টা সভায় লোকবল দেখানোর দাবি

বিজেপি যে দিকে সভামঞ্চ গড়েছিল, তৃণমূল তার উল্টো দিকে মঞ্চ বাঁধে এ দিন। মাঠে গঙ্গাজল ছেটানো হয়। নড্ডা যে মন্দিরে পুজো দিয়েছিলেন, সেখানে পুজোও দেওয়া হয়।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:২৯
picture of TMC\'s rally.

পূর্বস্থলী থানার মাঠে তৃণমূলের সভা। নিজস্ব চিত্র

বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি সভা করে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই মাঠেই পাল্টা কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল তৃণমূল। পূর্বস্থলীতে বিজেপির ওই সভায় গোটা লোকসভা কেন্দ্র থেকে যত লোক এসেছিলেন, একটি বিধানসভা এলাকা থেকেই তাদের সভায় তার চেয়ে বেশি লোক এসেছেন বলে মঙ্গলবার দাবি করল তৃণমূল। সে দাবি উড়িয়ে বিজেপির পাল্টা বক্তব্য, তৃণমূল ভয় পেয়ে তড়িঘড়ি সভা করেছে।

এ দিন তৃণমূলের সভায় ছিলেন বারসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, আইটি সেলের চেয়ারম্যান দেবাংশু ভট্টাচার্য, রাজ্যের মন্ত্রী তথা পূর্বস্থলী দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন দেবনাথ, জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, জেলা পরিষদ সভাধিপতি শম্পা ধারা, সহ-সভাধিপতি দেবু টু়ডু-সহ নেতা-নেত্রীরা। সভায় স্বপন দেবনাথ দাবি করেন, ২০২১ সালে ‘এখানে-ওখানে’ থাকা কিছু লোকজন দল জেতার পরেই এসে যোগ দিয়েছেন। এই মন্তব্যে বিতর্ক বেধেছে। তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশের অনুমান, মঞ্চে হাজির বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডলকে লক্ষ্য করেই ওই মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী। যদিও মন্ত্রীর দাবি, ‘‘কাউকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলিনি। বিধানসভা ভোটের সময়ে কী হয়েছে, সবাই দেখেছেন।’’ সুনীলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওই সময়ে দুর্ঘটনা ঘটেছিল একটা। কিন্তু বিধানসভায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচার করিনি। আমার মনে হয়, অন্য বিধায়ক বা জনপ্রতিনিধিদের কথা বলতে চেয়েছেন উনি।’’

বিজেপি যে দিকে সভামঞ্চ গড়েছিল, তৃণমূল তার উল্টো দিকে মঞ্চ বাঁধে এ দিন। মাঠে গঙ্গাজল ছেটানো হয়। নড্ডা যে মন্দিরে পুজো দিয়েছিলেন, সেখানে পুজোও দেওয়া হয়। তৃণমূল নেতাদের দাবি, পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের ১৫টি পঞ্চায়েত এলাকা থেকে লোক এসেছিলেন সভায়। দেরিতে আসায় অনেকে মাঠে ঢুকতে পারেননি। রাস্তায় দাঁড়িয়েই সভা শোনেন। প্রায় ১৫ হাজার লোক হয়েছিল, দাবি নেতাদের। কাকলি বলেন, ‘‘নিজের রাজ্যে হেরে আসা এক জন সভা করে গিয়েছেন। বাংলার মানুষ তাতে সাড়া দিচ্ছেন না। আগের দিনের বিজেপির সভার ছবি দেখেছি। আমাদের সভায় ভিড় উপচে গিয়েছে।’’

দেবাংশু বিজেপির সভার দু’টি অডিয়ো রেকর্ড (আনন্দবাজার সেগুলির সত্যতা যাচাই করেনি) শুনিয়ে দাবি করেন, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সর্বভারতীয় সভাপতির নাম ভুল বলছেন। বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় লোকসভা কেন্দ্রের নাম ভুল বলেছেন বলেও দাবি তাঁর। দেবাংশুর কথায়, ‘‘ওঁরা নেতার নাম জানেন না, এলাকা চেনেন না। মানুষের মন জিতবেন কী ভাবে?’’

বিজেপির সভায় জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসদের নাম করে ইডি-সিবিআই অভিযানের বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সুকান্ত। এ দিন রবীন্দ্রনাথ, খোকনেরা দাবি করেন, ইডি-সিবিআই দিয়ে তাঁদের ভয় দেখানো যাবে না। তৃণমূল আমলে সরকারি প্রকল্পের খতিয়ান, উন্নয়নের হিসেবও দেন তাঁরা। আবাস যোজনায় ১৭ লক্ষ নাম বাদ যাওয়া, একশো দিনের কাজের টাকা না দেওয়ার অভিযোগ করেন দেবু টু়ডু।

পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘একটি বিধানসভা এলাকা থেকেই ১৫ হাজারের বেশি মানুষ এসেছেন। বিজেপিকে আমাদের লোকবল দেখিয়ে দিয়েছে।’’ তাঁদের সভায় নাম ভুল করার অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘টানা বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ ফসকে ভুল-ত্রুটি হতে পারে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের সভায় মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এসেছিলেন। তৃণমূল তাতে ভয় পেয়ে তড়িঘড়ি সভা করেছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC BJP Purbasthali

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy