Advertisement
E-Paper

TMC: গোলমালের মধ্যে এক কাউন্সিলরের ইস্তফাপত্র

২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে কালনা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী ছিলেন নিউটন। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে, তিনি তৃণমূলে যোগ দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২২ ০৭:৫১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কালনার পুরপ্রধান কে হবে, তা নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই এক তৃণমূল কাউন্সিলর ইস্তফা দিতে চেয়ে এসডিও-কে ই-মেল করলেন। কালনার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিউটন মজুমদার ইস্তফার কারণ ‘ব্যক্তিগত’ বলে উল্লেখ করলেও, প্রকৃত কারণ কী, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে তাঁর দলের মধ্যেই। বুধবার সন্ধ্যায় নিউটন ওই ই-মেল পাঠানোর পর থেকেই তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ। বৃহস্পতিবার বাড়িতেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, তাঁকে বুঝিয়ে ইস্তফাপত্র ফেরানো হবে। এসডিও (কালনা) সুরেশকুমার জগৎ বলেন, ‘‘কাউন্সিলরের ইস্তফা দিতে চেয়ে পাঠানো মেলটি দেখা হচ্ছে।’’

২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে কালনা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী ছিলেন নিউটন। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে, তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। কালনার পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যও ছিলেন। তৃণমূলের অন্দরের খবর, দলে তিনি কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগের ‘গোষ্ঠীর’ লোক বলে পরিচিত। বুধবার তিনি অন্য কাউন্সিলরদের সঙ্গে পুরশ্রী মঞ্চে শপথ বাক্য পাঠ করেন। হাজির ছিলেন পুরপ্রধান নির্বাচনের সভাতেও।

দলের একটি সূত্রের দাবি, নিউটন-সহ চার জন দলের ঘোষিত ‘পুরপ্রধান’ আনন্দ দত্তের পক্ষে ছিলেন। সেখানে দলের ঘোষিত ‘পুরপ্রধানকে’ মেনে নিতে পারেননি অন্য ১২ জন তৃণমূল কাউন্সিলর। পুরপ্রধান নির্বাচন ঘিরে গোপন ব্যালট পেপারে ভোটাভুটি হয়।

দলের অন্দরের খবর, পুরপ্রধান হিসেবে তপন পোড়েলের পক্ষে মোট ১২ জন কাউন্সিলর ছিলেন। অন্য দিকে, আনন্দের পক্ষে ছিলেন পাঁচ জন। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সুনীল চৌধুরী নামে এক কাউন্সিলর। তিনি ভোটাভুটিতে যোগ দেননি। তপনের পক্ষে পড়ে ১২টি ভোট। আর আনন্দের পক্ষে পড়ে চারটি ভোট। তখনই প্রশ্ন ওঠে, আনন্দের পক্ষের এক জন তপনকে কেন ভোট দিলেন? যদিও শেষ পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যার কথা উল্লেখ করে পুরবোর্ড গঠন বাতিল করে প্রশাসন।

এর মধ্যেই হঠাৎ নিউটনের ইস্তফা দিতে চাওয়া এবং টানা ফোন বন্ধ রেখে দেওয়াকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বৃহস্পতিবারও তাঁর ফোন বন্ধ ছিল। পরিবারের সদস্যেরা দাবি করেছেন, তিনি বাড়িতে নেই।

কালনার বিধায়ক বলেন, ‘‘পুরপ্রধান নির্বাচন ঘিরে যা ঘটেছে, হয়তো তিনি মনে-প্রাণে তা মেনে নিতে পারেননি। তবে তাঁর ইস্তফাপত্র যাতে ফিরিয়ে নেন, সে জন্য বোঝানোর চেষ্টা চলছে।’’

ফের কবে পুরবোর্ড গঠনের সভা ডাকা হবে তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে শহরবাসীর। এসডিও বলেন, ‘‘ওই বৈঠকটি বাতিল হওয়ায় ফের বৈঠক ডাকা হবে। যত দূর জেনেছি, গেজেট নোটিফেকেশনের ৩০ দিনের মধ্যেই সভাটি করে নিতে হয়।’’ সেখানেও যদিও আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা তৈরি হয়, তা হলে কী হবে!— প্রশ্ন বাসিন্দাদের একাংশের। এসডিও বলেন, ‘‘এর পরেও বৈঠক বাতিল হলে, আমরা পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের সঙ্গে আলোচনা করব। পুরো বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।’’

বুধবার ওই গোলমালের পরেই তপনকে দল শহর সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে বহিষ্কার করেছে। এ দিন তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ এক কাউন্সিলর দাবি করেন, দোলের পরেই তাঁরা পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করবেন। আবার তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর, পুরপ্রধান নির্বাচন নিয়ে যাঁরা দলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন, দোল-পর্ব মিটে গেলে, আলোচনার জন্য তাঁদের কলকাতায় ডাকবেন নেতৃত্ব।

তবে দলের সিদ্ধান্ত যে সবাইকে মানতেই হবে, এ দিন তা ফের স্পষ্ট করে দিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতারা। প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘পরবর্তী বিষয় দলীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন। আমি মমতাদি (মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ছাড়া, এক পা-ও নড়ব না। এটুকুই বলব, যাঁদের দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে চলার মানসিকতা রয়েছে, তাঁরা দল করুন। কোনও কিছু পাওয়ার জন্য দল করার মানে হয় না।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘দলীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত সবাইকে মানতেই হবে।’’

TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy