Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূল কর্মী খুন কাটোয়ায়

এলাকায় কিছু দুষ্কৃতীর তোলাবাজির প্রতিবাদ করায় কিছু দিন আগে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। শুক্রবার রাতে গ্রাম থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে উদ্ধার হল সেই তৃণমূল কর্মীর দেহ। সেখানে পড়েছিল তাঁর মোটরবাইকও।

শোকার্ত পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

শোকার্ত পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৮ ০১:৩১
Share: Save:

এলাকায় কিছু দুষ্কৃতীর তোলাবাজির প্রতিবাদ করায় কিছু দিন আগে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। শুক্রবার রাতে গ্রাম থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে উদ্ধার হল সেই তৃণমূল কর্মীর দেহ। সেখানে পড়েছিল তাঁর মোটরবাইকও।

কাটোয়ার সিঙ্গি পঞ্চায়েতের পেঁকুয়া গ্রামে এই ঘটনায় সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা জড়িত বলে শাসক দলের নেতাদের অভিযোগ। যদিও সিপিএমের দাবি, ওই এলাকায় তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে তাদের কোনও সংগঠনই নেই। নিহত সরিফুল মণ্ডলের (৩৫) দাদা আবছোর আলি মণ্ডল শনিবার কাটোয়া থানায় ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, পেঁকুয়া গ্রামের দু’জন ও লাগোয়া চাঁদপুর গ্রামের এক জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। এ দিন কাটোয়া হাসপাতালে ময়না-তদন্ত হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সরিফুল আগে কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। বছর পাঁচেক আগে গ্রামে ফিরে এসে চাষাবাদের কাজ শুরু করেন। বিয়েও করেন। তাঁর দু’বছরের একটি ছেলে রয়েছে। পরিজনেরা জানান, গ্রামে থেকে সক্রিয় ভাবে তৃণমূলও করছিলেন সরিফুল। কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী বলে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। পরিবারের অভিযোগ, বছরখানেক আগে গ্রামের কিছু দুষ্কৃতীর তোলাবাজির বিরুদ্ধে সরিফুল প্রতিবাদ করেন। মাস দুয়েক আগে তাঁকে খুনের হুমকি দেয় তারা।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেল ৪টে নাগাদ সরিফুল জমিতে সাবমার্সিবলের জল দিতে যাওয়ার জন্য মোটরবাইক নিয়ে বেরোন। সন্ধে হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় পরিজন ও প্রতিবেশীরা খোঁজ শুরু করেন। রাত ১১টা নাগাদ পেঁকুয়া লহরের বাঁধের নিচে ব্রহ্মাণী নদীর জলে প্রথমে তাঁর মোটরবাইকটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেটি টেনে তুলতেই সরিফুলের ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে।

এ দিন সকালে ছেলেকে নিয়ে কাটোয়া হাসপাতালে আসেন সরিফুলের স্ত্রী সালমা বিবি। তিনি কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। নিহতের দাদা আবছোর আলি মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘গ্রামে ভাই বরাবরই অন্যায়ের প্রতিবাদ করে থাকে। সে নিয়ে এলাকার সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা মাস দুয়েক আগে খুনের হুমকিও দেয়। শুক্রবার দুষ্কৃতীরা ভাইকে ধারালে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে জলে ফেলে দেয়। দেহের উপরে বাইকটিও চাপিয়ে দেয়।’’ বিধায়ক রবীন্দ্রনাথবাবুরও অভিযোগ, ‘‘সরিফুল আমাদের সমর্থক। তোলাবাজির প্রতিবাদ করায় সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওঁকে খুন করেছে। দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’’

কাটোয়ার সিপিএম নেতা তথা দলের রাজ্য কমিটির সদস্য অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য পাল্টা বক্তব্য, ‘‘শাসক দলের সন্ত্রাসে ওই এলাকায় বিরোধী দলের কোনও কর্মীই নেই। আমরা খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। তৃণমূল আগে নিজের ঘর সামলাক, তার পরে আমাদের দোষারোপ করুক।’’ পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু হয়েছে। তিন জনকে জেরা করে সূত্র পাওয়ার চেষ্টা চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder TMC Leader
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE