এক চিকিৎসক নিগ্রহে বদলি হলেন আর এক চিকিৎসক। গুসকরা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘটনা।
একটি শিশুর মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগে মৃতের পরিজনদের হাতে মার খেয়েছিলেন গুসকরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক দেবজ্যোতি ঘোষ। ওই ঘটনায় অন্য কারও উস্কানি রয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। প্রাথমিক তদন্তের পর ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরই প্রবীণ চিকিৎসক দিলীপ মণ্ডলকে বদলি করার নির্দেশ দিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায়।
দিলীপবাবু অবশ্য বদলির নির্দেশ নিতে চাননি। সে জন্য আউশগ্রাম ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ধীমান মণ্ডল তাঁর আবাসনের গায়ে ওই নির্দেশ সাঁটিয়ে দিয়ে আসেন। ধীমানবাবু বলেন, “বুধবার বিকেলে ওই নির্দেশ পাওয়া মাত্রই দিলীপবাবুকে বদলির কথা জানানো হয়। তিনি ওই নির্দেশ নিতে চাননি বলেই আবাসনের গায়ে নির্দেশটি সাঁটানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার ওই চিকিৎসককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে গলসির সাটিনন্দী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।”
গুসকরা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, দিলীপবাবুকে নিয়ে বেশ কয়েক বার বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্য চিকিৎসক ও নার্সদের। তাঁরা একাধিক বার স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেন, ওই চিকিৎসকের জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিবেশ খারাপ হয়ে পড়ছে। যখন তখন তাঁদের সঙ্গে তো বটেই, রোগী ও তাঁদের পরিজনদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করছেন দিলীপবাবু। কিন্তু, জেলা জুড়ে চিকিৎসক-সঙ্কট চলায় জেলা স্বাস্থ্য দফতর বিষয়টি এত দিন এড়িয়ে গিয়েছে।
গত রবিবারের ঘটনার পরে অবশ্য নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য দফতর। সে দিন ভাতারের বসতপুর গ্রামের ৯ মাসের শিশু রোহিত বারুই গলায় খাবার আটকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মারা যায়। শিশুটির ঠিকমতো চিকিৎসা করেননি অভিযোগ তুলে বাড়ি থেকে ডেকে এনে দেবজ্যোতিবাবুকে তাঁরা মারধর করেন। স্বাস্থ্য দফতর খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, দেবজ্যোতিবাবু ‘ডিউটি’ সেরে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। মৃত শিশুটি বেঁচে রয়েছে মনে করে বাড়ি থেকে ফের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোহিতকে নিয়ে আসা হয়। সেই সময় রোগীর পরিজনদের সামলানোর বদলে দিলীপবাবু এমন কিছু মন্তব্য করেন, যাতে খেপে গিয়ে দেবজ্যোতিবাবুকে বাড়ি থেকে ডেকে আনতে বাধ্য করা হয়। সিএমওএইচ বলেন, “ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ছিল। তার উপর রবিবারের ঘটনা। তাই বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” দিলীপবাবুর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।