Advertisement
E-Paper

ভাইকে খুনে দু’জনের যাবজ্জীবন

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর কালনা ২ ব্লকের কেলনই গ্রামের বিকাশ সর্দার (২৭) সবে ছেলেকে নিয়ে ঠাকুর দেখে বাড়ি ফিরেছিলেন। খাওয়াদাওয়া করে প্রায় মাঝরাতে বাড়ির বারান্দায় বসতেই দুই দাদার সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে ঝগড়া শুরু হয় তাঁর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২০ ০০:৪২
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

ভাইকে খুন ও দেহ পোড়ানোর দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল দুই দাদার। শুক্রবার কালনার অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক তপন কুমার মণ্ডল দোষীদের পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছ’মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত অশোক সর্দার এবং তাপস সর্দারের যদিও দাবি, তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর কালনা ২ ব্লকের কেলনই গ্রামের বিকাশ সর্দার (২৭) সবে ছেলেকে নিয়ে ঠাকুর দেখে বাড়ি ফিরেছিলেন। খাওয়াদাওয়া করে প্রায় মাঝরাতে বাড়ির বারান্দায় বসতেই দুই দাদার সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে ঝগড়া শুরু হয় তাঁর। নিহত বিকাশবাবুর স্ত্রী সোনালি সর্দার জানান, ওই দিন বড় ভাসুর অশোক ঝগড়া শুরু করেন। তার সঙ্গে জুটে যান মেজ তাপস। হঠাৎ বিকাশবাবুকে বাঁশ দিয়ে আঘাত করেন তাঁরা। রক্তাক্ত অবস্থায় উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও মাটিতে পড়ে যান বিকাশ। এর পরে তাপস বড় ভাসুরের কথা শুনে স্বামীর চোখে মুখে ভাঙা টালি দিয়ে আঘাত করেন। আঘাত সহ্য করতে না পেরে মারা যান বিকাশ।

সোনালিদেবীর দাবি, ‘‘এর পরেও দুই ভাসুর আমার সামনে স্বামীর দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য পাটকাঠি দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন। চিৎকারে কয়েকজন প্রতিবেশী ছুটে আসেন। ওঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কালনা মহকুমা হাসপাতালে।’’ তিনি খুনের অভিযোগ দায়ের করার পরে, পুলিশ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মামলার চার্জশিট দাখিল করে। মামলা চলাকালীন ১৮ জন সাক্ষ্য দেন। সম্প্রতি আদালত ওই দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করে।

এ দিন বেলা সওয়া ১টা নাগাদ অশোক এবং তাপসকে তোলা হয় আদালতে। বিচারক নিজেদের পক্ষে কিছু বলার কথা বলতে, তাঁরা নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেন। ঘটনার সময়ে বাড়িতে ছিলেন না বলেও জানান। যদিও আদালত জানিয়ে দেয়, তাঁরা বাড়িতে ছিলেন না এমন কোনও ঘটনা বিচার চলাকালীন উঠে আসেনি। সরকারি আইনজীবী মলয় পাঁজা ঘটনাটিকে ‘বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে দু’জনের সর্বোচ্চ সাজা চান। মলয়বাবু বলেন, ‘‘মানুষ উন্নত জীব। এক ভাই অন্য ভাইকে ভালবাসবে এটাই স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে উল্টো ঘটেছে। নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে দু’জন ভাইকে নিষ্ঠুর ভাবে খুন করেছেন।’’ আদালতে হাজির সোনালিদেবীকে দেখিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘স্ত্রী, দুই সন্তানের বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’’ যদিও বিরোধী পক্ষের আইনজীবী অতনু মজুমদার দাবি করেন, ঘটনাটি কোনও অর্থেই বিরলতম নয়। আদালতের কাছে কম সাজার আবেদন জানান তিনি। দু’পক্ষের আইনজীবীর কথা শুনে বিচারক জানান, সব দিক বিচার বিবেচনা করে তাঁর মনে হয়েছে, ঘটনাটি নির্মম এবং নিষ্ঠুর।

স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে মেমারির গৌরীপুরে থাকেন সোনালিদেবী। রায় ঘোষণার পরে তিনি বলেন, ‘‘ওই রাতের কথা ভাবলে এখনও বুক শুকিয়ে যায়! আজ একটু শান্তি পেলাম।’’

Kalna Life Imprisonment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy