Advertisement
E-Paper

সাঁতার জানার ভরসায় ঝাঁপ, বলছেন ওঁরা

কাটোয়ার বাগানেপাড়ায় থাকেন বছর পঁয়ত্রিশের মণিরুল শেখ ও বছর তিরিশের কালো শেখ। গত বছর দশেক ধরে ফেরিঘাটে শ্রমিকের কাজ করেন তাঁরা। মাঝির কাজও করে থাকেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৭ ০১:১৭
কালো ও মনিরুল। নিজস্ব চিত্র

কালো ও মনিরুল। নিজস্ব চিত্র

মাঝে-মধ্যে মাঝির কাজ করেন। বাকি সময়ে অন্য নানা কাজ। এ দিন সকালে ঘাট বাঁধানো জন্য নৌকা থেকে বালির বস্তা নামানোর কাজ করছিলেন দু’জন। সেই সময়েই কানে আসে, মাঝ নদীতে শিশু-সহ হাবুডুবু খাচ্ছেন বধূ। তড়িঘ়ড়ি গিয়ে যে ভাবে তাঁরা দু’জনকে উদ্ধার করেন, তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ নৌকার যাত্রী থেকে স্থানীয় বাসিন্দা, সকলেই।

কাটোয়ার বাগানেপাড়ায় থাকেন বছর পঁয়ত্রিশের মণিরুল শেখ ও বছর তিরিশের কালো শেখ। গত বছর দশেক ধরে ফেরিঘাটে শ্রমিকের কাজ করেন তাঁরা। মাঝির কাজও করে থাকেন। তবে ডুবন্ত মানুষকে বাঁচানোর কোনও প্রশিক্ষণ তাঁদের নেই। তা সত্ত্বেও এ দিন যখন মা-শিশুর ডুবে যাওয়ার খবর শোনেন, কোনও কিছু না ভেবেই ঝাঁপিয়ে প়ড়েন দু’জনে।

বুধবার সকালে কাটোয়া থেকে বল্লভপাড়াগামী নৌকা থেকে ঝাঁপ দেন মন্তেশ্বরের সরিষাডাঙার বধূ শিল্পা সামন্ত। সঙ্গে ছিল ৯ মাসের মেয়ে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, বছর দুয়েক আগে সরিষাডাঙার পলাশ সামন্তের সঙ্গে বিয়ে হয় ভাতারের খেড়ুরছাতনির বাসিন্দা শিল্পার। পলাশ কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। গত শনিবার স্ত্রী-মেয়েকে শুরবাড়িতে দিয়ে আসেন তিনি।

পলাশের বাবা রণজিৎ সামন্ত এ দিন বলেন, ‘‘শিল্পা দশমীতে বাপের বাড়ি গিয়েছিল। কালীপুজোর পরে ফিরবে জানিয়েছিল। আমরা তার আগেই ফিরতে বলেছিলাম। আজ হঠাৎই কাটোয়ায় নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার খবর পাই। আমরা স্তম্ভিত। কেন এমন হল বুঝে উঠতে পারছি না।’’ সরিষাডাঙার বাসিন্দা পঞ্চানন সামন্ত বলেন, ‘‘শিল্পার যেখানে বাপের বাড়ি, সেখানে আমরা ব্যবসা রয়েছে। মঙ্গলবারও তাকে ওখানে বাজারে ফুচকা খেতে দেখেছি। কেন এমন কাণ্ড ঘটাতে গেল, জানি না।’’

এ দিন হাসপাতালে এসে শিল্পার কাকা সুপ্রভাত পসারিও জানান, ভাইঝি কেন এমন করলেন, তা তাঁদেরও বোধগম্য হচ্ছে না। শিল্পার মা মেনকাদেবী ফোনে বলেন, ‘‘মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে খুব ভাল ছিল বলেই জানি। এই ঘটনার কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।’’ পুলিশ জানায়, শিল্পার ব্যাগ থেকে মোবাইল, কিছু চিঠি ও ছবি পাওয়া গিয়েছে। কেন তিনি মেয়েকে নিয়ে জলে ঝাঁপ দিলেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এ সবের মধ্যেই মনিরুল ও কালো যা করেছেন, সে জন্য সাধুবাদ জানাচ্ছেন সকলেই। কাটোয়ার ওই ঘাটের ইজারাদার বাপি ঘোষ, অশোক সরকারেরা বলেন, ‘‘ওদের জন্য গর্ব হচ্ছে।’’ দুই যুবকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সাঁতার জানার জন্য আজ দু’টো প্রাণ বাঁচাতে পারলাম, সে জন্য ভাল লাগছে।’’

Mother Child
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy