Advertisement
E-Paper

নিয়োগ-জটে ঘেরাও উপাচার্য

নিয়োগ-বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে! বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজা এসএমএস করে পরীক্ষা নিয়ামক ও তৃণমূল প্রভাবিত দুটি কর্মচারী সংগঠনকে জানান, ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসের পরে থেকে অস্থায়ী কর্মী (বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিভাষায় হায়ার্ড লেবার) নিয়োগ হয়ে থাকলে তাঁদের আর কাজে নেওয়া যাবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৪৮
উপাচার্যকে ঘিরে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

উপাচার্যকে ঘিরে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

নিয়োগ-বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে!

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজা এসএমএস করে পরীক্ষা নিয়ামক ও তৃণমূল প্রভাবিত দুটি কর্মচারী সংগঠনকে জানান, ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসের পরে থেকে অস্থায়ী কর্মী (বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিভাষায় হায়ার্ড লেবার) নিয়োগ হয়ে থাকলে তাঁদের আর কাজে নেওয়া যাবে না। এসএমএসে রেজিস্ট্রার এ-ও জানান, উপাচার্যের নির্দেশেই মেসেজটি পাঠিয়েছেন।

এসএমএস পেতেই শুরু হয় হুলস্থূল। তৃণমূল প্রভাবিত ওই দুই কর্মচারী সংগঠনের তরফে শহরের তৃণমূল নেতা থেকে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। প্রত্যেকেই ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে সমাধান সূত্র বের করার আশ্বাস দেন। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সমাধান সূত্র বের হয়নি দেখে দুই সংগঠন এক হয়ে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ উপাচার্যকে ঘেরাও করেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য নিমাই সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পরেই অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। দিন কয়েক আগে তিনি জানতে পারেন, পরীক্ষা নিয়ামক দফতর নভেম্বর মাস থেকে দফায় দফায় ৩২ জনকে নিয়োগ করেছে। শুধু জানুয়ারি মাসেই নিয়োগ করা হয়েছে ১৬ জনকে! তিন দিন আগে উপাচার্য পরীক্ষা নিয়ামক দফতরে হানা দিয়েও কোনও নথি পাননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তার কথায়, ‘‘এরপর উপাচার্য ছাঁটাইয়ের নির্দেশ দিতেই কার্যত ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়ল।’’

অভিযোগ, ওই ৩২ জনের একাংশ পরীক্ষা নিয়ামক দফতরে নয়, বিকেলে সংগঠনের দফতরে এসে হাজিরা খাতায় সই করতেন। সে জন্যেই উপাচার্য হানা দিয়েও কোনও নথির হদিস পাননি। এ দিন কর্মচারী সংগঠনের নেতারা উপাচার্যের কাছে দাবি করেন, “পরীক্ষা নিয়ামক দফতরের ৩২ জনকে আগের উপাচার্যের আমলে নিয়োগ করা হয়েছে। তা হলে এঁদেরকে ছাঁটাই করা হচ্ছে কেন?” একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, “কর্তৃপক্ষ সাধারণ কর্মচারীদের পেটের ভাত কেড়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন, অথচ বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে নিয়ম বিরুদ্ধ ভাবে আধিকারিক, অধ্যাপক নিয়োগ ও পদোন্নতি ঘটেছে। তখন কর্তৃপক্ষ চুপ থাকছেন।” উপাচার্যের পাল্টা প্রশ্ন, “সরকারের নির্দেশ হল, কোনও অস্থায়ী নিয়োগ করা চলবে না। অথচ এখানে নিয়োগ হল, আমিই জানতে পারলাম না! এই জানতে চাওয়াটা কি অন্যায়?”

এ দিকে, বিভিন্ন বিভাগে তালা মেরে কর্মীরা আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন বলে অভিযোগ তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংসদের। জোর করে কর্মীদের বের করে দিয়ে দফতরে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন কর্মচারী সংগঠনের নেতারা, উপাচার্যের কাছে এমন অভিযোগ জানান ছাত্রনেতারা। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক নন্দীর কথায়, “সরস্বতী পুজোর পরে এ দিন দফতর খুললেও অনেক পড়ুয়া ও অভিভাবক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কর্মীদের ভূমিকা দেখে ফিরে গিয়েছেন।” সংসদের প্রাক্তন সম্পাদক প্রদীপ বাজপেয়ীর অভিযোগ, “দফতরে তালা মেরে আন্দোলনে সামিল হন কর্মচারীরা। ১২টা থেকে চারটে পর্যন্ত কার্যত বন্ধ ছিল দফতরগুলি।” এই অভিযোগের জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন কর্মচারী সংগঠনের নেতা শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় ও নীলাদ্রি ঘোষ।

কিন্তু, নিয়োগের কী হবে?

উপাচার্যের জবাব, “নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আমি একা সিদ্ধান্ত নিতে পারব না। কর্মসমিতি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।” শ্যামাপ্রসাদবাবুরা দাবি করেন, “অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের বিষয়টি বিকেন্দ্রীকরণের বদলে কেন্দ্রীকরণ করা হলে গোটা বিষয়টি উপাচার্যের নজরে থাকবে।” এই প্রস্তাবটি মানবেন বলে জানিয়েছেন উপাচার্য। তা হলে কি ওই এসএমএস কার্যকর থাকছে? সরাসরি জবাব না দিয়ে উপাচার্য শুধু হেসেছেন।

Gherao Vice Chancellor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy