Advertisement
০২ মে ২০২৪

বিদ্যুৎ না থাকলে ভরসা সেই আর্সেনিক মেশা জল

মাটির নীচের জলে মিশে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক। সে জল খাওয়া মানেই বিপদ। বাসিন্দাদের পরিস্রুত পানীয় জল দিতে তৈরি হয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের প্রকল্পও। কিন্তু রিজার্ভার চালু না হওয়ায় বিপদ রয়েই গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৬ ০১:২৯
Share: Save:

মাটির নীচের জলে মিশে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক। সে জল খাওয়া মানেই বিপদ। বাসিন্দাদের পরিস্রুত পানীয় জল দিতে তৈরি হয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের প্রকল্পও। কিন্তু রিজার্ভার চালু না হওয়ায় বিপদ রয়েই গিয়েছে। জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের প্রকল্পটির রিজার্ভার তৈরির কাজ শুরু হয়। তবে মাঝপথে তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিদ্যুৎ না থাকলে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের দোগাছিয়া পঞ্চায়েতের পাঁচ গ্রামের বাসিন্দাদের আশ্রয় সেই আসের্নিক-জলই।

দু’দশক আগে এই ব্লকের মাদ্রা গ্রামে প্রথম আর্সেনিকোসিস রোগীর সন্ধান মেলে। গ্রামের একটি পরিবারে এই রোগে মৃত্যু হয় সাত জনের। ক্রমে রোগ ভয়ঙ্কর আকার নেয়। পূর্বস্থলী ১ ব্লক থেকে পূর্বস্থলী ২ ব্লকেও ছড়িয়ে পড়ে। দোগাছিয়া পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, মাদ্রা, বলদেডাঙা, লক্ষণপুর, সোনারুদ্র এবং পোলগ্রামের মানুষদের পরিশ্রুত পানীয় জল দিতে ২০০১ সালে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতর একটি প্রকল্প অনুমোদন করে। ঠিক হয় প্রকল্পটি বসানো হবে সোনারুদ্র বাজারে। ২০০৩ সালের ৩রা মার্চ প্রকল্পটির উদ্বোধন হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্বোধনের পর থেকে এলাকায় কিছু কল স্ট্যান্ড-পোস্ট বসানো হয়। পাইপলাইনের মাধ্যমে এই সমস্ত স্ট্যান্ড পোস্টে পাঠানো হতে থাকে পানীয় জল। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী তা অনেক কম।

তাঁদের অভিযোগ, রিজার্ভার চালু না হওয়াই বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ মেলেনি। বিদ্যুৎ থাকলে পরিস্রুত পানীয় জল মেলে, না থাকলে বাধ্য হতে হই আর্সেনিক মিশে থাকা টিউবওয়েলের জল পান করতে। এলাকার বাসিন্দা পরিমল ভৌমিকের কথায়, ‘‘প্রায়শই লোডশেডিং হয়। বড় ঝড়-বৃষ্টি হলে এক দু’দিনও বিদ্যুৎ মেলে না। আর বিদ্যুৎ না থাকলে পাম্প চলে না। নলকূপের জলই খেতে হয়।’’ বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জল ধরে রাখার জন্য রিজার্ভারের আবেদন জানানোর পরে ২০১২ সালে সেটি তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু সোনারুদ্র বাজারে প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ এগিয়ে যাওয়ার পরে আচমকা বন্ধ হয়ে যায় কাজ। আর শুরু হয়নি। কেন?

দোগাছিয়া পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান প্রণব রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘যে ঠিকাদার সেটি তৈরির কাজের বরাত পেয়েছিলেন তিনি আচমকা মারা যান। এতেই বিপত্তি ঘটে। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে সমস্যাটির কথা জানানো হয়েছে।’’ সোনারুদ্র বাজারের জলপ্রকল্পের রিজারভার তৈরির কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছে পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতি। এই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক জানিয়েছেন, চেষ্টা চলছে নতুন করে দ্রুত ওই এলাকায় রিজার্ভার তৈরির কাজ শুরু করার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arsenic Contaminated water Pollution Water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE